ব্ল্যাক বক্স খোঁজার সময়
৪ এপ্রিল ২০১৪বিমানটি হারিয়ে যাওয়া চার সপ্তাহ পার হয়ে গেছে৷ ব্যাপক অনুসন্ধান চলছে ভারত মহাসাগরের দক্ষিণে৷ কিন্তু এখনো পর্যন্ত এক টুকরো ধ্বংসাবশেষের খোঁজ পাওয়া যায়নি৷ ভারত মহাসাগরের প্রত্যন্ত এলাকায় ১৪টি বিমান এখনো অনুসন্ধান চালিয়ে যাচ্ছে৷ এখন তড়িঘড়ি অনুসন্ধান চলছে ব্ল্যাক বক্সটির চার্জ ফুরিয়ে যাওয়ার আগে যাতে সেটি পাওয়া যায়৷
অস্ট্রেলিয়া, ব্রিটেন, চীন, জাপান, নিউজিল্যান্ড, মালয়েশিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনী পরস্পরের মধ্যে সমন্বয়ের মাধ্যমে বিমানটির খোঁজ চালিয়ে যাচ্ছে৷ তল্লাশি অভিযান সমন্বয়কারী অস্ট্রেলীয় কর্তৃপক্ষের প্রধান অবসরপ্রাপ্ত এয়ার চিফ মার্শাল অ্যানগুস হিউস্টন বলেছেন, ‘‘ব্ল্যাক বক্সের চার্জ থাকে মাত্র এক মাস৷ তাই আমাদের হাতে আর বেশি সময় নেই৷ খুব দ্রুত এটিকে খুঁজে বের করতে হবে৷'' বৃহস্পতিবার রয়াল অস্ট্রেলিয়ান নেভি এবং ব্রিটিশ রয়াল নেভি সমুদ্রের তলদেশে যান পাঠায় ব্ল্যাক বক্সটির সন্ধানে৷ এছাড়া সমুদ্র তলদেশে চলাচলকারী একটি ড্রোন পাঠিয়েছে অস্ট্রেলিয়া, যেটি বিভিন্ন স্থান স্ক্যান করে কোথায় ব্ল্যাক বক্সটি থাকতে পারে তার ধারণা দিতে পারবে৷
একদিকে চলছে বিমানের অনুসন্ধান, অন্যদিকে মালয়েশিয়ায় চলছে রাজনীতির খেলা৷ মালয়েশিয়ার বিরোধী দলের নেতা আনোয়ার ইব্রাহিম বলেছেন, তাঁর বিশ্বাস সরকার যতটুকু প্রকাশ করছে তার চেয়েও বেশি তথ্য তাদের কাছে আছে৷ এমনকি তিনি মালয়েশিয়ার সেনাবাহিনীর সমালোচনা করে বলেছেন, নিখোঁজ হওয়ার প্রথম কয়েকদিন সরকারের যে আচরণ ছিল তা সন্দেহজনক৷ কেননা এমন একটা ঘটনায় এত ঢিলেঢালা আচরণ বেশ সন্দেহের সৃষ্টি করে৷
এদিকে, মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রীর এক মুখপাত্র বলেছেন, আনোয়ার ইব্রাহিম কেবল সরকারের বিরুদ্ধে জনগণকে খেপিয়ে তুলতে মিথ্যা অভিযোগ ছড়াচ্ছেন৷ মালয়েশিয়ার কর্তৃপক্ষ এখনো বলছে, কী কারণে বিমানটি এমনভাবে হারিয়ে গেল, তার কারণ তাদের জানা নেই৷ মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাক বৃহস্পতিবার বলেছেন, এমএইচ৩৭০ ফ্লাইটের রহস্যের সমাধান না হওয়া পর্যন্ত তিনি বিশ্রাম নেবেন না৷
৮ মার্চ মধ্যরাতে মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুর থেকে ২৩৯ জন আরোহী নিয়ে চীনের রাজধানী বেইজিংয়ের পথে রওনা হয় এমএইচ৩৭০-র ফ্লাইট ৭৭৭৷ কিন্তু রওনা হওয়ার এক ঘণ্টার মধ্যেই কুয়ালালামপুর বিমানবন্দরের বেসামরিক রাডারের সঙ্গে সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় বিমানটির৷
অন্যদিকে, সামরিক রাডারে যে তথ্য পাওয়া গেছে তা থেকে ধারণা করা হয়, বেইজিংয়ের পথে দক্ষিণ চীন সাগরের আকাশে থাকার সময়ই বিমানের ভিতর থেকে বিমানচালনা সম্পর্কে অত্যন্ত অভিজ্ঞ কেউ বিমানটিকে ঘুরিয়ে দক্ষিণ ভারত মহাসাগরের দিকে নিয়ে গেছে৷ তদন্তকারীদের ধারণা, রাডারের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে বিমানেরই কোন আরোহী৷ এ থেকে আরো ধারণা হয় দক্ষিণ চীন সাগরে মোড় ঘুরে মালয় উপদ্বীপ পেরিয়ে বিমানটি ভারত মহাসাগরের ওপর দিয়ে জ্বালানি না ফুরানো পর্যন্ত উড়েছিল, আর তারপর হয়তো বিমানটি দক্ষিণ ভারত মহাসাগরে বিধ্বস্ত হয়৷
এপিবি/এসবি (এপি, এএফপি, ডিপিএ)