ব্রেক্সিট নিয়ে বোঝাপড়ার আশা কম
১৫ অক্টোবর ২০১৯চলতি সপ্তাহে বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার ইউরোপীয় ইউনিয়নের শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে৷ বাকি সব বিষয়কে ছাপিয়ে সম্মেলনে ব্রেক্সিটই সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব পাবার কথা৷ কিন্তু তার আগে দুই পক্ষের মধ্যে সমঝোতার আশা কার্যত অসম্ভব হয়ে পড়েছে৷ সবকিছু ভালোভাবে এগোলেও আগামী সপ্তাহের আগে কোনো চুক্তির রূপরেখার আশা দেখছেন না কূটনীতিকরা৷ বিশেষ করে আয়ারল্যান্ড, ফিনল্যান্ড ও স্পেন খোলাখুলি এমন আশঙ্কা প্রকাশ করেছে৷
অথচ ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন এই শীর্ষ সম্মেলনেই ব্রেক্সিট চুক্তি চূড়ান্ত করে ৩১শে অক্টোবর ব্রিটেনকে ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বার করে নিয়ে যেতে বদ্ধপরিকর৷ এ ক্ষেত্রে কোনো বিলম্ব বা জটিলতা চাইছেন না তিনি৷ প্রয়োজনে চুক্তি ছাড়াই ব্রেক্সিট কার্যকর করার অবস্থানে অটল রয়েছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী৷ আগামী শনিবার ব্রিটিশ সংসদের এক জরুরি অধিবেশনে এ ক্ষেত্রে সব বাধা দূর করতে চান জনসন৷ সোমবার রানির ভাষণের মাধ্যমে তিনি ব্রেক্সিটের প্রশ্নে তাঁর সরকারের দৃঢ় প্রত্যয় তুলে ধরেন৷
ব্যাকস্টপ ব্যবস্থার বিকল্প হিসেবে আইরিশ সীমান্তে নিয়ন্ত্রণ এড়াতে ব্রিটেন যে সব প্রস্তাব দিয়েছে, তার ভিত্তিতে এখনো কোনো আইনি কাঠামো সৃষ্টি করা সম্ভব হচ্ছে না হলে জানা গেছে৷ উত্তর আয়ারল্যান্ড প্রদেশকে ব্রিটিশ যুক্তরাজ্যের শুল্ক কাঠামোর মধ্যে রেখেও সেখানে আনুষ্ঠানিকতা ছাড়াই ইইউ শুল্ক ব্যবস্থা চালু রাখার প্রস্তাব দিয়েছে ব্রিটেন৷ তবে এমন ‘হাইব্রিড' বোঝাপড়া অনেক আইনি জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে৷ তাই কোনো কার্যকর বিকল্প স্থির করে হলে ব্রিটেনকে আরও ছাড় দিতে হবে বলে ইইউ কর্মকর্তারা মন্তব্য করেছেন৷ তাছাড়া শেষ পর্যন্ত বোঝাপড়া সম্ভব হলেও বরিস জনসন ব্রিটিশ সংসদে সেই চুক্তি অনুমোদন করাতে পারবেন কিনা, তা নিয়েও ইইউ মহলে সংশয় দেখা দিচ্ছে৷
এমন প্রেক্ষাপটে ব্রেক্সিটকে ঘিরে গত তিন বছরের অচলাবস্থা কাটার সম্ভাবনা ক্ষীণ হয়ে উঠছে৷ ব্রিটিশ সংসদের উদ্যোগে আনা আইন মেনে প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন ব্রেক্সিটের সময়সীমা আরও তিন মাস পেছানোর অনুরোধ জানালে এবং ইইউ সেই অনুরোধ মেনে নিলে জটিলতা কাটাতে আরও কিছু সময় পাওয়া যাবে৷ সেই সময়কালে ব্রিটেনে সাধারণ নির্বাচন এবং সম্ভবত দ্বিতীয় গণভোট অনুষ্ঠিত হলে সে দেশের রাজনৈতিক সমীকরণ বদলে যেতে পারে৷
ব্রেক্সিটকে ঘিরে অনিশ্চয়তার মধ্যেও ব্রিটেনে বসবাসকারী ইইউ নাগরিকরা সোমবার রানির ভাষণে কিছুটা আশ্বস্ত হয়েছেন৷ ব্রিটেনে তাঁদের স্থায়ীভাবে বসবাসের ক্ষেত্রে কোনো বাধা সৃষ্টি না করার অঙ্গীকার করেছে ব্রিটিশ সরকার৷ তবে ২০২১ সাল থেকে ইইউ নাগরিকরা আর নিজস্ব অধিকারবলে ব্রিটেনে প্রবেশ করতে পারবেন না৷ তাঁদের প্রতি বিশ্বের অন্যান্য দেশের নাগরিকদের মতো আচরণ করা হবে৷
এসবি/কেএম (রয়টার্স, ডিপিএ)