‘ব্রেক্সিটকে ঘিরে অনিশ্চয়তা দুঃস্বপ্ন হয়ে উঠেছে'
১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯ইউরোপীয় ইউনিয়নের ক্ষুদ্র দেশ লুক্সেমবুর্গ সফরে গিয়ে যে এমন নাস্তানাবুদ হতে হবে, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন সম্ভবত তা ভাবতে পারেন নি৷ সেখানে বসবাসরত বেশ কিছু ব্রিটিশ নাগরিক তাঁর বিরুদ্ধে প্রবল প্রতিবাদ-বিক্ষোভ দেখিয়েছেন৷ লুক্সেমবুর্গ সরকার তাঁকে সেই পরিস্থিতি থেকে উদ্ধার করার বদলে তাঁর প্রতি ‘শীতল' আচরণ দেখিয়েছে৷ ব্রিটিশ প্রতিনিধিদলের অনুরোধ উপেক্ষা করে খোলা আকাশের নীচে সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করা হয়েছে৷ এমনকি জনসন সেখানে উপস্থিত না থাকা সত্ত্বেও লুক্সেমবুর্গের প্রধানমন্ত্রী সাভিয়ে বেটেল তাঁর শূন্যস্থানের দিকে ইঙ্গিত করে সাংবাদিকদের বলেছেন, ব্রেক্সিট প্রক্রিয়াকে ঘিরে বর্তমান অনিশ্চয়তা ‘দুঃস্বপ্ন' হয়ে উঠেছে৷ এ ক্ষেত্রে ব্যর্থতার দায়ও ব্রিটেনের উপর চাপিয়ে দিয়েছেন তিনি৷ বেটেল বলেন, ‘‘আমাদের শুধু কথার প্রয়োজন নেই৷ অক্টোবরের সময়সীমা মেনে চলতে হলে যত দ্রুত সম্ভব আইনসিদ্ধ নথির প্রয়োজন রয়েছে৷ দলীয় স্বার্থে ভবিষ্যতকে জিম্মি রাখা চলে না৷''
শুধু তাই নয়, প্রকাশ্যে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর দাবি বার বার অস্বীকার করেছেন লুক্সেমবুর্গের প্রধানমন্ত্রী এবং ইউরোপীয় কমিশনের বিদায়ী প্রেসিডেন্ট জঁ ক্লোদ ইয়ুংকার৷ তাঁরা সাফ জানিয়ে দিলেন, যে ব্রিটেনের সরকার এখনো আইরিশ সীমান্তে ব্যাকস্টপ ব্যবস্থার কোনো গ্রহণযোগ্য বিকল্প তুলে ধরে নি৷ বিকল্প পেশ করার দায় যে ব্রিটেনের কাঁধে রয়েছে, সেই বিষয়টিও বার বার মনে করিয়ে দিচ্ছেন ইইউ নেতারা৷ অন্যদিকে জনসন ও ব্রিটিশ প্রতিনিধিদল এ ক্ষেত্রে অগ্রগতির দাবি করে আসছে৷
সোমবার ইইউ নেতাদের সঙ্গে আলোচনায় সেই অগ্রগতির কোনো লক্ষণ দেখা না গেলেও জনসন ৩১শে অক্টোবর ব্রেক্সিট কার্যকর করতে বদ্ধপরিকর৷ অর্থাৎ সংসদের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে তিনি সেই সময়সীমা আরও তিন মাস বাড়ানোর আবেদন না করার অঙ্গীকার করেছেন৷ সোমবার অবশ্য তিনি সংবিধান ও আইন মেনেই সেই কাজ করবেন বলে জানিয়েছেন৷ আগামী মাসে ইইউ শীর্ষ সম্মেলনে তিনি বিচ্ছেদ চুক্তির প্রশ্নে ঐকমত্যের আশা করছেন৷
দুই পক্ষের আলোচনায় শুধু একটি ক্ষেত্রে কিছুটা প্রতীকী অগ্রগতি ঘটেছে৷ এবার ইইউ-র প্রধান মধ্যস্থতাকারী মিশেল বার্নিয়ে ও ব্রিটেনের ব্রেক্সিটের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা স্টিফেন বার্কলের মধ্যে আবার আলোচনা শুরু হবে৷
এদিকে মঙ্গলবার ব্রিটেনের সুপ্রিম কোর্টে প্রধানমন্ত্রীর সংসদ মুলতুবি রাখার বিতর্কিত সিদ্ধান্তের বিষয়ে শুনানি শুরু হচ্ছে৷ সম্ভবত ৩ দিন পর আদালত রায় জানাতে পারে৷ তার আগে ইংল্যান্ড, স্কটল্যান্ড ও উত্তর আয়ারল্যান্ডের সর্বোচ্চ আদালতের পক্ষ থেকে এই সিদ্ধান্তের বিষয়ে যুক্তি শোনা হবে৷ সুপ্রিম কোর্ট প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে রায় দিলে দ্রুত সংসদের অধিবেশন ডাকতে হবে বলে ধরে নেওয়া হচ্ছে৷ সে ক্ষেত্রে বরিস জনসনে আরও চাপের মুখে পড়তে চলেছেন৷
এসবি/কেএম (ডিপিএ, রয়টার্স)