বিপাকে ব্রাজিল
১৩ ডিসেম্বর ২০১৩ফিফার ডেডলাইন অনুযায়ী স্টেডিয়ামটির কাজ ডিসেম্বরের শেষ নাগাদ সম্পূর্ণ হওয়ার কথা ছিল৷ ওদিকে ব্রাজিল কর্তৃপক্ষ স্বীকার করেছে, বিশ্বকাপের জন্য ১২টি স্টেডিয়ামের নির্মাণকাজ শেষ করতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছে তারা৷
রেকর্ড পাঁচবারের মতো বিশ্বকাপ আয়োজনের সুযোগ পাচ্ছে ব্রাজিল৷ ব্রাজিলের বৃহত্তম শহর সাও পাওলো'র জনপ্রিয় স্টেডিয়াম ‘মোরুম্বি'৷ এটি ৫০ এর দশকে নির্মিত হয়৷ এরপর সেখানে বেশ কিছু জমকালো অনুষ্ঠান ও ইভেন্ট আয়োজন করা হয়েছে৷ এমনকি গত বছর ম্যাডোনা ও লেডি গাগার কনসার্টও হয়েছে সেখানে৷ কিন্তু বিশ্বকাপ আয়োজনের জন্য স্টেডিয়ামটি উপযুক্ত নয়, বলে জানিয়েছিল আয়োজকরা৷ ফিফা জানিয়েছিল, বিশ্বকাপ আয়োজনের জন্য মোরুম্বি'র সঠিক মানদণ্ড নেই৷ যেমন অতিরিক্ত পার্কিং ব্যবস্থা এবং দর্শকদের ভালোমত দেখার সুযোগ ও রাষ্ট্রপ্রধানদের বসার জায়গা নেই বলে জানিয়েছিল ফিফা৷ ফলে তারা পরিকল্পনা দেয় নতুন স্টেডিয়াম নির্মাণের৷
তাই সাও পাওলো'র দরিদ্রতম পূর্বাঞ্চলে নতুন স্টেডিয়াম নির্মাণ শুরু করে ব্রাজিল৷ এর নাম দেয়া হয়েছে এরিনা করিন্থিয়ান্স৷ ২৭ নভেম্বর নতুন এই স্টেডিয়ামে একটি দুর্ঘটনা ঘটে৷ ৪২০ টনের একটি ছাদ তুলতে গিয়ে ক্রেন ভেঙে মারা যায় দুই শ্রমিক৷ ফলে পিছিয়ে যায় এর নির্মাণকাজ৷
ডিসেম্বরে নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও এখন তা এপ্রিল পর্যন্ত গড়িয়েছে৷ ১২ জুন শুরু হতে যাওয়া বিশ্বকাপের জন্য যেটা খুব কাছাকাছি সময় হয়ে যায়৷ ব্রাজিল ও ক্রোয়েশিয়ার মধ্যে ম্যাচ দিয়ে সেদিনই উদ্বোধন হবে ২০১৪ বিশ্বকাপ ফুটবলের আসর৷
নতুন স্টেডিয়ামে আছে ৬৮ হাজার আসন৷ সেখানে স্টেডিয়াম তৈরি হলে দরিদ্রতম এলাকার অর্থনৈতিক উন্নতি হবে বলে আশা কর্তৃপক্ষের৷ করিন্থিয়ান্স ফুটবল ক্লাবের সাবেক প্রেসিডেন্ট আন্দ্রেস সানচেজ জানিয়েছেন, গত বেশ কয়েক বছর ধরে এলাকাটি অবহেলায় পড়ে আছে৷ তবে এই স্টেডিয়ামটি এলাকার অহংকারে পরিণত হতে পারে৷
অনেক সমালোচক বলছেন, সাম্প্রতিক এই দুর্ঘটনার কারণে বিশ্বকাপের আগে এটির নির্মাণকাজ শেষ হবে না৷ বরং এর ফলে দেশের আর্থিক ক্ষতি হচ্ছে৷ বিশ্বকাপ উপলক্ষে নতুন স্টেডিয়াম নির্মাণ ও পুরোনোগুলো সংস্কারের জন্য অন্তত ৩.৫ বিলিয়ন ডলার খরচ হচ্ছে৷ কেবল এরিনা করিন্থিয়ান্সের জন্যই খরচ ধরা হয়েছে ৫০০ মিলিয়ন ডলার, যা শেষ পর্যন্ত ৬৫০ মিলিয়ন ডলারে গিয়ে ঠেকবে বলে ধারণা করা হচ্ছে৷ আর এ খরচের প্রতিবাদে চলতি বছরের জুনে ব্যাপক বিক্ষোভ করে ব্রাজিলের সাধারণ মানুষ৷
অনেক রাজনৈতিক বিশ্লেষক বলছেন, বিশ্বকাপ শুরুর সময় আবারও বিক্ষোভকারীরা সোচ্চার হয়ে উঠবেন৷ বিশেষ করে এই দুর্ঘটনা এবং অব্যবস্থাপনায় অনেকেই ক্ষেপে আছেন সরকারের উপর৷
এপিবি/জেডএইচ (রয়টার্স)