বিপাকে ইসরায়েলের আরব বন্ধুরা
১২ মে ২০২১গত অগাস্টে ইসরায়েলের সঙ্গে প্রথমে সংযুক্ত আরব আমিরাত ও তারপর একে একে বাহরাইন, মরক্কো, সুদান কূটনৈতিক সম্পর্ক চালু করে। বিমান চলাচল শুরু হয়। প্রকল্প রূপায়ণ শুরু হয়। তখনই তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এর্দোয়ান এবং ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা খামেনেই বলেছিলেন, মুসলিম দুনিয়ার সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করা হলো।
এখন ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে কার্যত যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর ওই দেশগুলি চুপ করে থাকাই শ্রেয় মনে করেছে।
ইরান, তুরস্কের সমালোচনা
ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতোল্লাহ আলি খামেনেই বলেছেন, ''এই লড়াই হলো দমনের বিরুদ্ধে, সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াই। ইসরায়েল ফিলিস্তিনকে পিছন থেকে ছুরি মারছে। তাদের বিরুদ্ধে লড়াই করা কর্তব্য।''
তুরস্কে এর্দোয়ানের মুখপাত্র বলেছেন, ''ইসরায়েল সমানে আগ্রাসনের নীতি নিয়ে চলছে। বিশ্বের সব দেশ মিলে তাদের থামানো দরকার।''
তবে ইউরোপীয়ান কাউন্সিল অন ফরেন রিলেশনস(ইসিএফআর)-এর বিশ্লেষক ও ভিজিটং ফেলো সিনজিয়া বিয়ানকো ডিডাব্লিউকে বলেছেন, ''ইরান ও তুরস্ক এই পরিস্থিতির সুযোগ নেবে ও ইসরায়েলের বন্ধু দেশগুলিকে আক্রমণ করবে এটা স্বাভাবিক।''
আরব দেশগুলি যদি সমালোচনায় মুখর হয়, তা হলে আমিরাত, বাহরাইন, মরক্কো, সুদানের উপর ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখা নিয়ে চাপ বাড়বে।
এমনিতেই ওই দেশের মানুষের একাংশ ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তাই ওই সব দেশের প্রধানদের বলতে হয়েছে, মধ্যপ্রাচ্যের সমস্যা সমাধানের জন্যই তারা ওই পদক্ষেপ নিয়েছেন। আমিরাত ও ইসরায়েলের মধ্যে যখন চুক্তি হচ্ছে, তখন আবু ধাবির যুবরাজ বলেছিলেন, ''ফিলিস্তিনের এলাকায় ইসরায়েল আর আগ্রাসন করবে না।''
প্রতিক্রিয়া দীর্ঘস্থায়ী হবে?
জার্মানির সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী কার্স্টেন মুলার বলেছেন, ''ইসরায়েলকে এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার জন্য পদক্ষেপ নিতে হবে। উত্তেজনা চলতে থাকলে তার প্রভাব আরব দেশগুলির মধ্যে পড়বে।''
তার মতে, ''আমিরাতের সঙ্গে ইসরায়েলের সম্পর্ক স্বাভাবিক করাটা কৌশলগত পদক্ষেপ। এটা বন্ধ হবে না। তবে দুই দেশ মিলে যে সব প্রকল্পের রূপায়ণ করছিল, তা বন্ধ হতে পারে। আমিরাতকেও সতর্ক থাকতে হবে। আরব দুনিয়ার চাপ সহ্য করতে হবে। আরব দুনিয়া তাদের নীতি বদলাতে বাধ্য করবে, সেটা তারাও মানতে চাইবে না।''
কার্স্টেন নিপ/জিএইচ(ডিডাব্লিউ)