‘বিদ্রোহ’ সামলাতে ম্যার্কেলের কড়া পদক্ষেপের অপেক্ষা
৩০ মার্চ ২০২১বেড়ে চলা সংক্রমণ সত্ত্বেও জার্মানিতে করোনা সংকটের মোকাবিলায় রাজনৈতিক ঐকমত্যের সম্ভাবনা এখনো দেখা যাচ্ছে না৷ রোববার চ্যান্সেলার ম্যার্কেল একাধিক রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের কড়া সমালোচনা করে প্রয়োজনে ফেডারেল হস্তক্ষেপের প্রচ্ছন্ন হুমকি দেওয়া সত্ত্বেও তাদের কয়েকজন বিধিনিয়ম শিথিল করার পক্ষে সওয়াল করে চলেছেন৷ অর্থাৎ ফেডারেল ও রাজ্য সরকারগুলির মধ্যে সংঘাত এবার অনিবার্য হয়ে পড়লো৷
সোমবার জার্মানির একাধিক রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ম্যার্কেলের কড়া সমালোচনার জবাব দিয়েছেন৷ বিশেষ করে ম্যার্কেলের সিডিইউ দলের নতুন শীর্ষ নেতা এবং সবচেয়ে জনবহুল রাজ্য নর্থরাইন ওয়েস্টফেলিয়ার মুখ্যমন্ত্রী আরমিন লাশেট সরাসরি ম্যার্কেলের মূল্যায়নের বিরোধিতা করেছেন৷ তার মতে, সব মুখ্যমন্ত্রীই সংক্রমণের হার কমাতে চান এবং সেই লক্ষ্যে নিজ নিজ রাজ্যে উপযুক্ত পদক্ষেপ নিয়েছেন৷ জনবিরল সারলান্ড রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী টোবিয়াস হান্স ব্যাপক করোনা পরীক্ষার ব্যবস্থা করে লকডাউন শিথিল করার সিদ্ধান্তের সপক্ষে বলেন, চ্যান্সেলরের সমালোচনা সত্ত্বেও তিনি সেই পরিকল্পনা কার্যকর করবেন৷ উত্তরের শ্লেসভিক হলস্টাইন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীও নিজস্ব অবস্থানে অটল থাকার ইঙ্গিত দিয়েছেন৷
রাজ্য স্তরে এমন ‘বিদ্রোহ'-এর মুখে ম্যার্কেল নিজের হুমকি বাস্তবায়ন করেন কিনা, সেদিকে সবার নজর রয়েছে৷ দৈনিক করোনা সংক্রমণের হার নির্দিষ্ট মাত্রা পেরোলে ‘এমারজেন্সি ব্রেক' প্রয়োগ করে লকডাউনের বিধিনিয়ম আরও কড়া করার সম্মিলিত সিদ্ধান্ত সত্ত্বেও বিচ্যুতির অভিযোগ করেছিলেন তিনি৷ এমনটা চলতে থাকলে ‘অদূর ভবিষ্যতে’ তিনি ফেডারেল স্তরে গোটা দেশের জন্য একক নিয়ম চাপানোর হুমকি দিয়েছিলেন৷ সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ আইন কাজে লাগিয়ে তিনি এমন একতরফা পদক্ষেপের ইঙ্গিত দিয়েছেন৷
রাজনৈতিক আঙিনা থেকে বিদায় নেবার প্রায় ছয় মাস আগে তার কর্তৃত্ব নতুন করে পরীক্ষার মুখে পড়ছে৷ অন্যদিকে ম্যার্কেলের সমালোচনা সত্ত্বেও দলের নতুন নেতা লাশেট চ্যান্সেলর পদপ্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন পাবেন কিনা, সে বিষয়েও সংশয় বাড়ছে৷ অন্যদিকে ইউনিয়ন শিবিরে বাভেরিয়ার মুখ্যমন্ত্রী ও সিএসইউ দলের নেতা মার্কুস স্যোডারের প্রতি সমর্থন বাড়ছে৷ করোনা সংকট মোকাবিলার প্রশ্নে কড়া পদক্ষেপের বিষয়ে তিনি চ্যান্সেলর ম্যার্কেলকে পূর্ণ সমর্থন করছেন৷ স্যোডার নিজে আদৌ দুই দলের সম্মিলিত চ্যান্সেলর পদপ্রার্থী হতে চান কিনা, তা অবশ্য এখনো স্পষ্ট নয়৷
ইস্টারের ছুটির আগে জার্মানিতে তেমন কোনো পরিবর্তনের সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না৷ প্রতি এক লাখ মানুষের মধ্যে সাপ্তাহিক সংক্রমণের গড় হার গত সাত দিন ধরে একশর বেশি রয়েছে৷ ইস্টারের ছুটির পর সেই সংখ্যা আরও বাড়ার আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা৷ এমনটা ঘটলে রাজনৈতিক নেতাদের উপর চাপ আরও বেড়ে যাবে বলে ধরে নেওয়া হচ্ছে৷ তখন হয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে অথবা সরাসরি ফেডারেল স্তর থেকে সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেওয়া হতে পারে৷ সে ক্ষেত্রে লকডাউনের বদলে শাটডাউনের মাধ্যমে জনজীবন আরও স্তব্ধ করে দেওয়া হবে বলে বিশেষজ্ঞরা অনুমান করছেন৷
এসবি/কেএম (ডিপিএ, এএফপি)