1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বিক্ষোভের আগুনে জ্বলছে ইরান

১৩ জানুয়ারি ২০২০

অ্যামেরিকার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ এখন বন্ধ। ইরানে ফের সরকার বিরোধী আন্দোলন শুরু করেছেন সাধারণ জনগণ। তাঁদের দাবি, শত্রু বাইরে নয়, দেশের ভিতরেই।

https://p.dw.com/p/3W5pK
ছবি: hamshahrionline.ir

প্রতিবাদ শুরু হয়েছিল শনিবার। রবিবার তার তীব্রতা আরও বাড়ল। ইরানের রাজধানী তেহরানের রাজপথ দখলে রাখলেন বিক্ষোভকারীরা।

এক সপ্তাহের মধ্যেই বদলে গেল ইরানের ছবি। সাধারণ মানুষ পথে নেমেছিলেন অ্যামেরিকার আগ্রাসনের বিরুদ্ধে। কারণ মার্কিন ড্রোন হানায় নিহত হয়েছিলেন ইরানের অন্যতম জেনারেল কাসিম সোলেইমানি। কাসিম হত্যার জবাবে ইরানও ইরাকে মার্কিন সেনা ঘাঁটি লক্ষ্য করে মিসাইল হামলা চালিয়েছিল। সাধারণ মানুষ তাতেও সায় দিয়েছিলেন। কিন্তু সমস্যা হল তার পরেই। যে দিন ইরাকে মিসাইল হামলা চালিয়েছিল ইরান, সে দিনই তেহরান থেকে ওড়া একটি ইউক্রেনের বিমান ভেঙে পড়ে। প্রাথমিক ভাবে ইরান জানায়, যান্ত্রিক গোলযোগে বিমানটি ভেঙে পড়েছে। কিন্তু পরে অ্যামেরিকা, কানাডা এবং যুক্তরাজ্যের চাপে ইরানের সেনা স্বীকার করতে বাধ্য হয়, তাদের ছোড়া মিসাইলের আঘাতেই বিমানটি ধ্বংস হয়েছে। উল্লেখ্য, বিমানে ৮০ জনেরও বেশি ইরানি নাগরিক ছিলেন।

Iran | Trauer und Proteste | Flugzeugabsturz
ছবি: picture-alliance/dpa/Photoshot/A. Halabisaz

ইরান প্রশাসন বিষয়টি স্বীকার করে নেওয়ার পরেই খামেনি সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে দেন ইরানের জনগণ। রাস্তায় রাস্তায় প্রতিবাদ শুরু হয়ে যায়। রবিবার যার তীব্রতা অন্য মাত্রায় পৌঁছেছে। স্লোগান উঠেছে, 'শত্রু আসলে বাইরে নয়, দেশের ভিতরেই।' খামেনি সরকারের পদত্যাগের দাবি উঠেছে সর্বত্র।

বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে সরকারও কড়া পদক্ষেপ নিতে শুরু করেছে। বিশ্ববিদ্যালয় সহ রাজধানীর বিভিন্ন অঞ্চল ঘিরে ফেলেছে সেনা। বিক্ষোভকারীদের লক্ষ্য করে চালানো হচ্ছে কাঁদানে গ্যাস। ছত্রভঙ্গ করতে লাঠিচার্জও হচ্ছে। কিন্তু আন্দোলনকারীরা পিছু হটছেন না। খামেনি বিরোধী রাজনৈতিক নেতারাও এই বিক্ষোভে নৈতিক সমর্থন জানাচ্ছেন। গৃহবন্দি থেকেও তাঁরা সোশ্যাল মিডিয়ায় বিবৃতি প্রকাশ করছেন।

বিক্ষোভকারীদের সমর্থন জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পও। টুইটে তিনি লিখেছেন, 'ইরান সমস্যার সমাধানে বোঝাপড়ায় আসতে চাইলে আমার আপত্তি নেই। কিন্তু বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে যেন খারাপ ব্যবহার করা না হয়।'

দু'দেশের মধ্যে উত্তেজনা কমানোর ইঙ্গিত ইরানও দিয়েছে। তবে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে শেষ পর্যন্ত কী করা হবে, তা নিয়ে নিশ্চিত নয় রাজনৈতিক মহল। কিছুদিন আগেও ইরানে সরকারবিরোধী বিক্ষোভ হয়েছিল। বহু বিক্ষোভকারীর প্রাণও গিয়েছিল। এ বারেও তেমন কিছু ঘটার আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে।

অন্য দিকে, সরকার বিরোধী বিক্ষোভে যোগ দিয়েছিলেন, এই অভিযোগে শনিবার গ্রেফতার করা হয়েছিল ইরানে অবস্থিত যুক্তরাজ্যের দূতাবাসের প্রধানকে। পরে অবশ্য তাঁকে ছেড়েও দেওয়া হয়। এই বিষয়টি নিয়েও আন্তর্জাতিক মহলে প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে। অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন, কী ভাবে একজন দূতকে গ্রেফতার করল ইরান সরকার। এ ঘটনা আন্তর্জাতিক আইন বিরোধী। যুক্তরাজ্যের দূত নিজেও টুইট করে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

সব মিলিয়ে ইরান পরিস্থিতি ক্রমশ জটিল হচ্ছে। আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞদের অনেকেই বলছেন, ইরানের বিক্ষোভকারীদের এ বার সাহায্যের হাতও বাড়িয়ে দিতে পারে অ্যামেরিকা। অতীতে আরব বসন্তের সময় যে কাজ তারা করেছিল মধ্য প্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে।

এ দিকে রবিবারেও ইরাকের রাজধানী বাগদাদের কাছে একটি সেনা ঘাটিতে রকেট হামলা হয়। যদিও হামলার দায় কেউ স্বীকার করেনি। ইরাকি সেনা সূত্রে জানানো হয়েছে, রকেট হামলায় ৪ জন ইরাকি সৈন্য আহত হয়েছেন। ওই সেনা ঘাটিতে মার্কিন সৈন্যরাও থাকতেন। কিন্তু তেহরানের সঙ্গে ওয়াশিংটনের লড়াই শুরু হওয়ার পর মার্কিন সেনাদের সেখান থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। ঘটনার নিন্দা করেছেন মার্কিন আমলা মাইক পম্পেও। ইরাকি সেনা জানিয়েছে চারটি রকেটই রাশিয়ান। কারা এই ঘটনা ঘটালো, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

এসজি/জিএইচ (এপি, রয়টার্স)