বার্লিনে হাজির হুইসলব্লোয়ার
৪ জুলাই ২০১৪খোদ বার্লিনের মার্কিন দূতাবাস থেকে জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেলের মোবাইল টেলিফোনে আড়ি পাতা নিয়ে যে কেলেঙ্কারির শুরু, গতকাল জার্মান সংসদের সংসদীয় তদন্ত কমিটিতে জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্যমে তার একটি নতুন অধ্যায় সূচিত হয়েছে৷ এই জিজ্ঞাসাবাদও বস্তুত একটি আপোশ, কেননা আদতে মুখ্য হুইসলব্লোয়ার এডোয়ার্ড স্নোডেন-কে বার্লিনে এনে, অথবা তদন্ত কমিটির মস্কোয় গিয়ে তাঁর জবানবন্দি নেওয়ার কথা ছিল৷
একদিকে জার্মানির স্বাতন্ত্র্য ও স্বাধীনতা, অন্যদিকে ‘রেয়ালপোলিটিক' বা বাস্তব রাজনীতির তাড়া ও তাড়না, যা থেকে কোনো দেশ কিংবা রাজনীতিকের মুক্তি নেই – জার্মানি যার সর্বশেষ নিদর্শন৷ যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে জার্মানির সম্পর্ক বিভিন্ন প্রকাশ্য ও গোপন স্তরে, এবং এই দুই দেশের সখ্যতা বস্তুত আন্তঃ-অতলান্তিক মৈত্রীর ভিত্তি বিশেষ৷ কাজেই সেই ভিত্তির হানি ঘটানোর স্বাধীনতা কিংবা অভিপ্রায়, দু'টোর কোনোটাই ম্যার্কেল-নেতৃত্বাধীন জোট সরকারের নেই৷
তাই স্নোডেন যেখানে ছিলেন, সেখানেই রইলেন৷ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বার্লিনে আসার (প্রকাশ্য)আমন্ত্রণ জানানো হল এনএসএ-র এমন দু'জন প্রাক্তন কর্মীকে, যারা ইতিমধ্যেই তাদের সাবেক সংস্থার (প্রকাশ্য) সমালোচনা করেছেন এবং আবারও করতে রাজি৷ যেমন উইলিয়াম বিনি, যিনি এনএসএ সম্পর্কে জার্মান তদন্ত কমিটিকে বলেছেন: ‘‘ওরা সব কিছুর ব্যাপারে তথ্য পেতে চায়৷ এ ধরনের মনোভাব এ যাবৎ শুধুমাত্র একনায়কতন্ত্রে দেখা গেছে৷'' এনএসএ ভুল পথে গেছে৷ ইতিমধ্যে একটি দেশের সমগ্র জনগণের উপর নজর রাখা সম্ভব – শুধু বিদেশেই নয়, বরং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেও, যা কিনা সংবিধান-বিরোধী৷
বিনি জানান, নাইন-ইলেভেনের এক মাসের মধ্যে অর্থাৎ ২০০১ সালের অক্টোবরের মাঝামাঝি থেকে এই ব্যাপক নজরদারি শুরু হয়৷ সেই কারণেই তিনি তার স্বল্প পরে গুপ্তচর বিভাগ পরিত্যাগ করেন৷ বিনি ১৯৭০ সাল থেকে ২০০১ সাল অবধি এনএসএ-তে কাজ করেছেন৷ শেষমেষ তিনি ছিলেন টেকনিকাল ডাইরেক্টর৷ এনএসএ ছাড়া যাবৎ তিনি সংস্থাটির নজরদারি পদ্ধতির সমালোচনা করে আসছেন৷
এসি/এসবি (ডিপিএ)