1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বাজেটে কৃষকদের খুশি করবেন নির্মলা সীতারামন?

গৌতম হোড় নতুন দিল্লি
৩১ জানুয়ারি ২০২২

মঙ্গলবার সংসদে বাজেট পেশ করতে চলেছেন নির্মলা সীতারামন। সেখানে কি কৃষকদের জন্য সুখবর থাকবে?

https://p.dw.com/p/46IjX
কঠিন অর্থনৈতিক পরিস্থিতি মধ্যে বাজেট পশ করবেন নির্মলা সীতারামন।ছবি: picture-alliance/Pacific Press/R. Basu

আর কয়েকদিনের মধ্যেই পাঁচ রাজ্যে বিধানসভা ভোট। এই পাঁচ রাজ্যের মধ্যে উত্তরপ্রদেশ, উত্তরাখণ্ড, গোয়া ও মণিপুরে বিজেপি ক্ষমতায় আছে। পাঞ্জাবে ক্ষমতায় আছে কংগ্রেস। তাই এই পাঁচ রাজ্যের নির্বাচনে বিজেপি-র ক্ষমতা ধরে রাখার চিন্তা সবচেয়ে বেশি। বাজেটে এই ভোটমুখি রাজ্যের জন্য কোনো সুখবর দেবেন নির্মলা সীতারামন? ২০২২-২৩ সালের বাজেট পেশ করার আগে এই প্রশ্নটাই দিল্লির রাজনৈতিক মহলে ঘুরে বেড়াচ্ছে। সেই সঙ্গে জুড়ে আছে আরেকটি বৃহত্তর প্রশ্ন। এই বাজেটে কৃষকদের জন্য কি কোনো খুশির খবর থাকবে?

মোদী সরকার তিনটি বিতর্কিত কৃষি আইন বাতিল করার পর দিল্লির সীমানায় আন্দোলনরত কৃষকরা বাড়ি ফিরে গেছেন। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকার ও বিজেপি-র বিরুদ্ধে তাদের ক্ষোভ যায়নি। যে পাঁচ রাজ্যে ভোট হচ্ছে, তার মধ্যে তিনটি রাজ্যে কৃষকরা অত্যন্ত ক্ষুব্ধ। এই তিন রাজ্য হলো পাঞ্জাব, উত্তরপ্রদেশ ও উত্তরাখণ্ড। সেই সঙ্গে বিজেপি শাসিত হরিয়ানা ও মধ্যপ্রদেশ এবং কংগ্রেস-শাসিত রাজস্থানেও কৃষকরা ক্ষুব্ধ বলে বিজেপি নেতারাই মনে করছেন।

এই অবস্থায় সীতারামন কৃষকদের মন পেতে কিছু ঘোষণা করতে পারেন বলে মনে করা হচ্ছে।  ভোটে জিততে গেলে কৃষকদের মন পাওয়া খুবই জরুরি। লোকসভা নির্বাচনের আগে কৃষকদের ক্ষোভ প্রশমিত করতে তাদের বছরে ছয় হাজার টাকা করে দেয়ার কথা ঘোষণা করেছিলেন মোদী। তাতে ফলও হয়েছিল। বিধানসভা ভোটের আগে একই পথে হাঁটতে পারেন মোদী। 

কৃষকদের জন্য

বিজেপি সূত্র জানাচ্ছে, বাজেটে কৃষকদের জন্য কিছু ঘোষণা থাকবে। বেশ কয়েকটি বিষয় এর মধ্যে থাকতে পারে। প্রবীণ সাংবাদিক জোসেফ ডয়চে ভেলেকে জানিয়েছেন, ''কৃষকদের খুশি করতে কিছু ব্যবস্থা নিতেই হবে। কৃষকদের এখন বছরে তিন কিস্তিতে ছয় হাজার টাকা দেয় কেন্দ্রীয় সরকার। সেই অর্থের পরিমাণ বাড়়ানো হতে পারে। কৃষকদের ঋণ দেয়ার পরিমাণ বাড়ানো হতে পারে। ন্যূনতম সংগ্রহ মূল্য নিয়েও বাজেট পেশের সময় কিছু কথা বলতে পারেন তিনি।'' 

পরিকাঠামো ক্ষেত্রে

বাজেটে পরিকাঠামো ক্ষেত্রের উপর জোর দেয়া হতে পারে। গতবারেও তাই হয়েছিল। করোনাকালে প্রবল চাপে থাকা অর্থনীতির হাল ফেরাতে এই পথ আবার নিতে পারে মোদী সরকার। প্রবীণ সাংবাদিক শরদ গুপ্তা ডয়চে ভেলেকে জানিয়েছেন, ''পরিকাঠামো ক্ষেত্রে জোর দেয়া এবং অর্থ বিনিয়োগ করার বিষয়টি গুরুত্ব পাচ্ছে কারণ, এখানেই সবচেয়ে বেশি কর্মসংস্থান হতে পারে। তাই করোনার কারণে অর্থনীতি যখন চাপে আছে, তখন পরিকাঠামো ক্ষেত্রের উপর জোর দেয়া স্বাভাবিক।''

আয়কর ছাড়

অর্থমন্ত্রীর কাছে চ্যালেঞ্জ হলো সাধারণ মানুষের হাতে আরো অর্থ তুলে দেয়া, যাতে তারা খরচ করতে পারে, বাজার থেকে জিনিস কিনতে পারে, তাহলে অর্থনীত চাঙ্গা হবে। আয়করদাতাদের দাবি, তাদের উপর করের বোঝা কমানো হোক। এই পরিস্থিতিতে আয়করের স্ট্যান্ডার্ড ডিডাকশনের পরিমাণ বাড়ানো হতে পারে। আরেকটি সম্ভাবনা হলো, আয়করের ক্ষেত্রে খুব একটা পরিবর্তন করবেন না অর্থমন্ত্রী।

বড়লোকদের উপর কর

অক্সফ্যামের সুপারিশ হলো, দেশের ১০ শতাংশ বড়লোকের উপর এক শতাংশ সারচার্জ বসানো হোক। তার থেকে যে অর্থ আসবে, তা শিক্ষা ও স্বাস্থ্যে খরচ করা হোক। কিন্তু সীতারামন কি সেই সাহসী সিদ্ধান্ত নেবেন?

সূত্র জানাচ্ছে, অর্থনীতির যে অবস্থা, তাতে নির্মলা সীতারামনের পক্ষে খুব বেশি কিছু করা সম্ভব হবে না। তিনি বেশ কঠিন পরিস্থিতিতে বাজেট পেশ করতে যাচ্ছেন। তাঁকে একদিকে অর্থনীতিকে সচল করতে হবে, আবার রাজস্ব ঘাটতিতে লাগাম দিতে হবে। আবার দলের স্বার্থ দেখতে হবে, রাজনৈতিক দায়বদ্ধতাও মেটাতে হবে। জিনিসর দাম এখনই বেশ চড়া। তাই আর যাতে দাম না বাড়ে তার দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে অর্থমন্ত্রীকে। সেই সঙ্গে আর্থিক বৃদ্ধির হার বাড়ানোর চ্যালেঞ্জও থাকছে।  ফলে সবমিলিয়ে তার কাজ বেশ কঠিন।