করোনা ভারতের স্বাস্থ্যখাতের জন্য আশীর্বাদ
১৭ নভেম্বর ২০২১২০২৪-২৫ অর্থবছরের মধ্যে জিডিপির ২.৫ শতাংশ জনস্বাস্থ্যে ব্যয় করতে চায় সরকার৷ চলতি অর্থবছরে দেশটি ব্যয় করছে মাত্র ১.২ শতাংশ৷
আগামী কয়েক বছরের মধ্যে ৭৭ হাজার ২৩৪ কোটি টাকা ব্যয়ে অনেকগুলো নতুন হাসপাতাল নির্মাণের অঙ্গীকার করা হয়েছে৷ এই সময়ে বর্তমান হাসপাতালগুলোরও মানোন্নয়ন করা হবে৷
করোনা শুরুর পর সমালোচনার মুখে পড়ে সরকার ইতিমধ্যে হাসপাতালগুলোতে অক্সিজেন প্ল্যান্ট বসানোর জন্য অর্থ সরবরাহ করেছে৷ লক্ষ্য, পুরো দেশের প্রায় সাড়ে সাতশ জেলায় অন্তত একটি করে অক্সিজেন প্ল্যান্ট স্থাপন করা৷ ইতিমধ্যে গত কয়েক মাসে প্রায় চার হাজার প্ল্যান্ট বসানোর কাজ শুরু হয়েছে৷
হাসপাতালের ভাগ্য পরিবর্তন
গতবছর ভারতে যখন করোনার প্রথম ঢেউ শুরু হয়েছিল তখন বিহারের ভাগলপুরের জওহরলাল নেহেরু মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রোগী দেখার সময় ডাক্তারদের সঙ্গে নিরাপত্তা প্রহরী থাকতেন৷ পর্যাপ্ত সেবা না পেয়ে রোগীদের আত্মীয়স্বজনেরা যেন ডাক্তারদের উপর হামলা না করে সেটা নিশ্চিত করতে এই ব্যবস্থা নেয়া হয়েছিল৷
এখন সেই পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে৷ করোনা শুরুর পর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাদের সুযোগ-সুবিধা বাড়াতে টাকা পেয়েছেন৷ সেটা দিয়ে নিজস্ব অক্সিজেন জেনারেটর বসানো হয়েছে, নতুন নার্স নিয়োগ দেয়া হয়েছে, আইসিইউ বেডের সংখ্যা দ্বিগুণ করা হয়েছে এবং কয়েকশ বেডে অক্সিজেন সরবরাহ ব্যবস্থা যুক্ত করা হয়েছে৷
হাসপাতালের মেডিকেল তত্ত্বাবধায়ক অসীম কমুার দাস রয়টার্সকে বলেন, ‘‘করোনা আমাদের জন্য আশীর্বাদ হয়ে এসেছে৷ যদিও এটা মানবজাতিকে ধ্বংস করেছে, অনেকের অনেক ক্ষতি করেছে, এটা আমাদের হাসপাতালের অবকাঠামোতে অনেক পরিবর্তন এনেছে৷''
আগামী বছরের মধ্যে চার হাজার তিনশ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রায় ১,৬০০ নতুন হাসপাতাল নির্মাণের অঙ্গীকার করেছে বিহার সরকার৷
তবে এসব হাসপাতাল পরিচালনার জন্য পর্যাপ্ত ডাক্তার ও প্রশিক্ষিত জনবল গড়ে তোলার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা৷ পাবলিক হেল্থ ফাউন্ডেশনের প্রেসিডেন্ট কার্ডিওলজিস্ট ও এপিডেমিওলজিস্ট কে. শ্রীনাথ রেড্ডি বলেন, ‘‘শুরুটা ভালো হয়েছে কোনো সন্দেহ নেই৷ কিন্তু জনবল ছাড়া শুধু অবকাঠামো দিয়ে হবে না৷ সুতরাং এই বিষয়টিও যত শিগগির সম্ভব ভেবে দেখতে হবে৷''
ভাগলপুরের জওহরলাল নেহেরু মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এখন ৬০টি আইসিইউ বেড আছে৷ কিন্তু রয়টার্সের প্রতিবেদক সম্প্রতি সেখানে গিয়ে কয়েকটি রুম বন্ধ বা খালি দেখতে পান৷ ঐ বিভাগের ডাক্তার-ইন-চার্জ মহেশ কুমার বলেন, ‘‘আমাদের জনবলের অভাব আছে৷ আমরা যদি প্রশিক্ষিত ডাক্তার ও প্যারমেডিকস পাই তাহলে সহজেই সব আইসিইউ রুম চালু রাখতে পারব৷''
গতমাসে ভারতের সবচেয়ে জনবহুল রাজ্য উত্তর প্রদেশে একসঙ্গে নয়টি মেডিকেল কলেজের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী৷ সেখানে তিনি বলেন, আগামী ১০-১২ বছরে ভারতে এত ডাক্তার তৈরি হবে, যা স্বাধীনতার প্রথম ৭০ বছরের চেয়ে বেশি৷
জেডএইচ/কেএম (রয়টার্স)