আন্তর্জাতিক চাপ বাড়ছে
২ ডিসেম্বর ২০১৩ঢাকায় নিযুক্ত ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) দূত উইলিয়াম হানা রবিবার প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে দেখা করার পর সাংবাদিকদের জানান, বাংলাদেশের এখন যা রাজনৈতিক পরিস্থিতি তা চলতে থাকলে ইইউ নির্বাচনে পর্যবেক্ষক পাঠাবে কিনা সেটা নতুন করে ভাবতে হবে৷ কারণ এখানে নিরাপত্তার প্রশ্ন জড়িত৷ তিনি বলেন, ‘‘আমরা এখানে এমন নির্বাচন চাই যা হবে স্বচ্ছ এবং সবার অংশগ্রহণমূলক''৷
এদিকে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার নাভি পিল্লাই এক বিবৃতিতে বাংলাদেশকে ধ্বংসের কিনারায় নিয়ে যাওয়ার মতো ধ্বংসাত্মক নীতি পরিহারের জন্য রাজনীতিকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন৷ নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলো সমাধানে পৌঁছতে ব্যর্থ হওয়ায় রাজনৈতিক সহিংসতা বেড়ে যাওয়ায় তিনি গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন৷ তিনি বলেন এই সহিংসতায় বিপুল সংখ্যক মানুষ প্রাণ হারিয়েছে এবং অনেক সম্পদের ক্ষতি হয়েছে৷ নাভি পিল্লাই বিরোধী রাজনৈতিক নেতাদের আটক এবং গ্রেফতার প্রক্রিয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেন৷ তিনি আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সংকট নিরসনের আহ্বান জানিয়েছেন৷
বাংলাদেশ নির্বাচন পর্যবেক্ষক পরিষদ বা জানিপপ-এর প্রধান অধ্যাপক ড. নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহ ডয়চে ভেলেকে বলেন, ইইউ নিরাপত্তার বিষয়টিকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিচ্ছে৷ কারণ তাদের যে কর্মীরা এখানে নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করতে আসবেন তাঁদের তারা সহিংস পরিস্থিতির মধ্যে ফেলে দিতে পারেন না৷ এখন বাংলাদেশের যা পরিস্থিতি তাতে দেশের নাগরিকরাই নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন৷ সেক্ষেত্রে বিদেশি পর্যবেক্ষকরা নিরাপদ বোধ করবেন না এটাই স্বাভাবিক৷ শেষ পর্যন্ত ইইউ যদি নির্বাচন পর্যবেক্ষক না পাঠায় তাহলে তা নির্বাচনের পরিবেশ এবং নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তৈরি করবে বলে মনে করেন তিনি৷
ড. কলিমুল্লাহ বলেন, বাংলাদেশের চলমান পরিস্থিতিতে জাতিসংঘের উদ্বেগ যথার্থ৷ সংস্থাটি গত কয়েকমাস ধরে রাজনৈতিক সমঝোতা আনার চেষ্টা করছে৷ জাতিসংঘ মহাসচিবও উদ্যোগ নিয়েছেন৷ কিন্তু তারপরও রাজনৈতিক সমঝোতা ছাড়াই একটি একতরফা নির্বাচন হতে যাচ্ছে বাংলাদেশে৷ যার প্রতিক্রিয়ায় ব্যাপক সহিংস কার্যকলাপ শুরু হয়েছে৷ এতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন সাধারণ মানুষ৷ তাঁর মতে, জাতিসংঘ হয়তো এখন শেষ চেষ্টা করবে রাজনৈতিক সমঝোতার৷
তবে জানিপপ প্রধান বলেন কোনো নির্বাচন না হওয়ার চেয়ে, নির্বাচন হওয়া ভাল৷ তা যদি একপাক্ষিকও হয় তাহলেও সেটা পরবর্তীতে সব দলের অংশগ্রহণে নির্বাচনের জন্য একটি সুযোগ রাখে৷ কিন্তু নির্বাচন না হলে অনির্বাচিত শক্তি ক্ষমতায় যাওয়ার সুযোগ পায়৷ তবে তিনি এখনো আশা করেন বাংলাদেশে একটি রাজনৈতিক সমঝোতার মাধ্যমে সব দলের অংশগ্রহণে নির্বাচন হবে৷