1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

‘আইটেম গান' সহিংসতা বাড়াচ্ছে

৭ জানুয়ারি ২০১৭

ভারতের একটি নারী অধিকার সংস্থা সিনেমাপাগল ভারতীয়দের বলিউডের যৌন আবেদনময়ী গানগুলো পুনরায় লেখার প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছে৷ এ সব গানে নারীদের অসম্মান এবং নারী বিদ্বেষ উপস্থাপিত হয়েছে বলে অভিযোগ সংস্থাটির৷

https://p.dw.com/p/2VLLr
অগ্নিপথ ছবির একটি দৃশ্য
ছবি: Eros International

নারী অধিকার সংস্থা ‘আকশারা সেন্টার' গত বছরের ডিসেম্বরে ‘গানা রি-রাইট' প্রতিযোগিতা চালু করেছে৷ তাদের মতে ভারতীয় চলচ্চিত্রের যেসব গানে নারীদের পণ্য হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে, নারীদের অসম্মান করা হয়েছে, নারীর প্রতি বিদ্বেষ ছড়ানো হয়েছে বা নারীদের উত্যক্ত করার কথা বলা হয়েছে, সেসব গানগুলোর কথা পরিবর্তন করে তাদের কাছে পাঠানোর আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি৷ এই ধরনের প্রতিযোগিতায় যদি বিপুল সংখ্যক মানুষ অংশগ্রহণ করে, তবে সিনেমা ইন্ড্রাস্ট্রিতে পরিবর্তন আনার জন্য আবেদন করা যাবে বলে মনে করে তারা৷

মুম্বইয়ের আকশারা সেন্টারের কো-অর্ডিনেটর স্নেহাল ভেলকার বলেন, ‘‘লিঙ্গ বৈষম্য দূর করা এবং সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য এটা করা হচ্ছে৷ কেননা সম্প্রতি নারীর প্রতি সহিংসতার বিভিন্ন ধরনের অভিযোগ তাদের কাছে এসেছে যেখানে পুরুষরা এইসব বিকৃত গান গেয়ে নারীদের উত্যক্ত করছে৷''

থমসন রয়টার্স ফাউন্ডেশনকে দেয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘‘বলিউডের এমন কিছু গান আছে, যা গাওয়া এবং নাচার জন্য একেবারেই উপযুক্ত, কিন্তু যখন মনোযোগ দিয়ে শুনবেন তখন লক্ষ্য করবেন হয় একই শব্দের ভিন্ন কোনো লুকানো অর্থ রয়েছে এবং নারীদের উপজীব্য করা হয়েছে, নারীদের জন্য যা অসম্মানজনক৷ এ সব গানে নারীদের হয়রানিকেও স্বাভাবিকভাবে ধরে নেয়া হয়েছে, যা দৈনন্দিন জীবনে নারীদের প্রতি সহিংসতার কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে৷'' 

বিশ্বের অন্যতম পরিচিত ফিল্ম ইন্ড্রাস্ট্রি বলিউড থেকে প্রতি বছর কয়েকশ' চলচ্চিত্র মুক্তি পায়৷ এসব চলচ্চিত্রের মুখ্য বিষয় প্রেম এবং রোম্যান্স, পারিবারিক কাহিনি বা মারপিট৷ আর এর মধ্যে গুটি কয়েক গান এবং নাচ বাধ্যতামূলক৷

আর কয়েকটি সিনেমাতে তথাকথিত ‘আইটেম নাম্বার' বা ‘আইটেম সং' থাকবে সেখানে ছোট পোশাক পরিহিত একজন নারীকে উপস্থাপন করা হবে৷ সম্প্রতি ভারতে নারীর প্রতি সহিংসতার বেশ কিছু ঘটনা শিরোনাম হওয়ার পর নারী অধিকার কর্মীরা বিষয়টি নিয়ে খতিয়ে দেখেন৷ যেখানে তাঁরা লক্ষ্য করেন বলিউডের বিভিন্ন মুভি দেখে পুরুষরা এ সব অপরাধ করতে আগ্রহী হয়৷ যুক্তরাজ্যের অ্যাকশন এইড এর জরিপ অনুযায়ী, ভারতে প্রতি পাঁচজন নারীর মধ্যে চারজন পাবলিক প্লেসে যৌন হয়রানির শিকার হয়৷ এর মধ্যে বাজে কথা বলা, স্পর্শকাতর অঙ্গে স্পর্শ এবং ধর্ষণ রয়েছে৷

‘মেরে ফটো কো সিনে মে ইয়ার...', ‘শীলা কি জাওয়ানি...', ‘মুন্নি বাদনাম হুয়ি....', ‘যারা যারা টাচ মি...', ‘চিকনি চামেলি...', ‘পালঙ্ক তোড় হ্যায় তেরি জাওয়ানি....', ‘মেরি জাওয়ানি সোডে কি বোতল...' – এছাড়াও অশ্লীল কথার অনেক গান ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছে৷ কেবল অখ্যাত গীতিকাররা নন, জাভেদ আখতার এবং প্রসূন যোশীর মতো খ্যাতিমান গীতিকাররাও এ ধরনের গান লিখে সমালোচিত হয়েছেন৷

গত বছরের শুরুতে তামিল চলচ্চিত্র শিল্পে নারীদের উত্যক্ত করাকে ‘কুল' ভাবে না দেখিয়ে অপরাধ হিসেবে দেখানোর দাবি জানান নারী অধিকার কর্মীরা৷ ভারত সরকার লিঙ্গ বৈষম্য এবং নারীদের উত্যক্ত করার বিরুদ্ধে আইন আরও কঠোর করেছে৷ তাই আকশারা সেন্টার আহ্বান জানিয়েছে বলিউড কেবল ব্যবসার দিকে নজর না দিয়ে নারীদের প্রতি যাতে আরও দায়িত্বশীল হয়৷ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারীদের ‘হ্যাশ বলিউডক্যানচেঞ্জ' ব্যবহার করার আহ্বান জানিয়েছেন তারা৷

এপিবি/ডিজি (এপি, রয়টার্স)

এ বিষয়ে আপনার কি কোনো বক্তব্য আছে? জানান আমাদের, লিখুন নীচের ঘরে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান