ফখরুল-আব্বাসের জামিন স্থগিত
৪ জানুয়ারি ২০২৩রাজধানীর নয়াপল্টনে গত ৭ ডিসেম্বর পুলিশের সঙ্গে বিএনপির নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনায় করা মামলায় দলটির কারাবন্দী মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসের আপাতত মুক্তি মিলছে না৷
দুপুরে সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে প্রধান আইনজীবী জয়নুল আবেদীন আবেদন এ তথ্য জানিয়েছেন৷ অন্তর্বর্তীকালীয় আদেশের বিরুদ্ধে তারা (রাষ্ট্রপক্ষ) মিস আপিল করেছিলেন, সুপ্রিম কোর্টের চেম্বার আদালতে সরকারপক্ষ যে পয়েন্টটি উত্থাপন করেছে, একটি মিস কেস পেন্ডিং থাকা অবস্থায় আমরা এখানে জামিন আবেদন করেছি। আমাদের কাছে যথেষ্ট জবাব থাকার পরও আমরা যখন জবাব দিতে শুরু করেছিলাম, আদালত আর এ বিষয়ে না শুনে আগামী ৮ জানুয়ারি পূর্ণ আদালত বেঞ্চে পাঠিয়ে দিয়েছেন, বলেন জয়নুল আবেদীন৷
এর আগে, মির্জা ফখরুল এবং মির্জা আব্বাসের জামিন স্থগিত চেয়ে আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ৷ আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় আবেদনটি করা হয়৷ অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল এস এম মুনীর ডয়চে ভেলের কনটেন্ট পার্টনার প্রথম আলোকে বলেন, ‘মির্জা ফখরুল ও মির্জা আব্বাসের জামিন মঞ্জুর করে হাইকোর্ট যে আদেশ দিয়েছেন, তা স্থগিত চেয়ে আবেদন করা হয়েছে৷ আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতে আজ আবেদনটি শুনানির জন্য চেষ্টা থাকবে৷'
মামলায় জামিন চেয়ে মির্জা ফখরুল ও মির্জা আব্বাস গত সোমবার হাইকোর্টে আবেদন করেন৷ যার ওপর গতকাল মঙ্গলবার হাইকোর্টে শুনানি হয়৷ শুনানি নিয়ে বিচারপতি মো. সেলিম ও বিচারপতি মো. রিয়াজ উদ্দিন খানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ গতকাল রুলসহ তাঁদের ছয় মাসের অন্তর্বর্তীকালীন জামিন মঞ্জুর করে আদেশ দেন৷
গতকাল হাইকোর্টের আদেশের পর অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল এস এম মুনীর প্রথম আলোকে বলেছিলেন, মির্জা ফখরুল ও মির্জা আব্বাসের জামিন মঞ্জুর করে হাইকোর্ট যে আদেশ দিয়েছেন, তা স্থগিত চেয়ে আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতে শিগগিরই আবেদন করা হবে৷ কেননা, মহাসচিবের ড্রয়ারে দুই লাখ টাকা ও তার কার্যালয়ে ককটেল পাওয়া গেছে৷ প্রাথমিক তদন্তে এসেছে, তারা পরিকল্পনাকারী ও উসকানিদাতা, যা আসামি চালানপত্রে (ফরোয়ার্ডিং লেটারে) উল্লেখ করা হয়েছে৷
একই মামলায় আগেমির্জা ফখরুল ও মির্জা আব্বাসের জামিন আবেদন ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে তিনবার নাকচ হয়৷ সবশেষ ২১ ডিসেম্বর ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতেও তাঁদের জামিন আবেদন নাকচ হয়৷ এ অবস্থায় সোমবার হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় তাঁদের জামিন চেয়ে আবেদনটি করা হয়৷
মির্জা ফখরুল ও মির্জা আব্বাসের বাসায় ৮ ডিসেম্বর গভীর রাতে পৃথক অভিযান চালায় ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) ৷ দুজনকে প্রথমে আটক করে রাজধানীর মিন্টো রোডের ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়৷
৯ ডিসেম্বর দুপুরে ডিবি আনুষ্ঠানিকভাবে জানায়, পুলিশের ওপর বর্বরোচিত হামলা, উসকানিদাতা, পরিকল্পনাকারী ও নির্দেশদাতা হিসেবে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে৷
তার পর থেকে মির্জা ফখরুল ও মির্জা আব্বাস কারাগারে ছিলেন৷
৭ ডিসেম্বর রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপিরকেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে পুলিশের সঙ্গে দলটির নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষে একজন নিহত ও আহত হন অর্ধশতাধিক ব্যক্তি৷
সংঘর্ষের পর পুলিশ বিএনপির কার্যালয়ে অভিযান চালিয়ে তিন শতাধিক নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করে৷ এই ঘটনায় পল্টন, মতিঝিল, শাহজাহানপুর থানায় একটি করে ও রমনা থানায় দুটি মামলা হয়৷
এনএস/কেএম (প্রথম আলো)