প্রেম প্রত্যাখান
২৪ মে ২০১২যশোর সদর উপজেলার দেয়াড়া গ্রামের মেয়ে মোমেনা৷ দশম শ্রেণির ছাত্রী মোমেনাকে ‘ভালবাসে' একই গ্রামের ছেলে ইব্রাহিম৷ মোমেনার স্কুলে যাবার পথে নিয়মিত দাঁড়িয়ে থেকেছে সে৷ তবুও প্রেমের প্রস্তাবে সাড়া দেয় নি মোমেনা৷ কিন্তু কী ঘটলো প্রেমে সাড়া না দেয়ার পর?
মোমেনার বড় ভাই কামরুল ইসলাম বলেন, ‘‘বছরখানেক ধরেই মোমেনাকে নানাভাবে উত্ত্যক্ত করত ইব্রাহিম৷ এক পর্যায়ে তাকে প্রেমের প্রস্তাব দেয়৷ কিন্তু প্রেম প্রত্যাখ্যান করার পর সে খেপে যায়৷ ঘটনার দিন পাকা রাস্তার মাথায় খেজুর গাছ কাটার দা নিয়ে লুকিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে সে৷ তারপর স্কুল থেকে ফেরার পথে মোমেনাকে অতর্কিতে আক্রমণ করে ইব্রাহিম৷''
খেজুর গাছ কাটার দা দিয়ে এলোপাতাড়ি কোপানো হয় মোমেনাকে৷ এর ফলে বাম হাতের চারটি আঙুল ও ডান কান কেটে যায় মোমেনার৷ এছাড়াও শরীরের বিভিন্ন অংশেও রয়েছে আঘাত৷ আহত মোমেনা এখন ভর্তি রয়েছে যশোর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে৷
গত ১৬ মে এ ঘটনা ঘটার পর থানায় ‘হত্যা চেষ্টা' মামলা দায়ের করেছেন মোমেনার বাবা শাহাবুদ্দিন মোল্লা৷ ঘটনার দিনই ইব্রাহিমকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ৷
যশোর শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আমিরুল আলম খান মনে করেন, মোমেনার মত এমন আরো অসংখ্য ঘটনা বাংলাদেশে ঘটছে৷ প্রেমে সাড়া না দেয়ায় মেয়ে এবং তার পরিবারের উপর আক্রমণ, নির্যাতন এমনকি ঘটছে খুনের ঘটনাও৷
অধ্যাপক খান বলেন, ‘‘বাংলাদেশে অপরাধ করলে অনেক সময়ই বিচার হয় না৷ অপরাধী ছাড়া পেয়ে যায়৷ ফলে এসব ঘটনা ক্রমাগত ভাবে বাড়ছে৷ তাই, অপরাধীকে শুধু ধরলেই হবে না৷ শাস্তিও কার্যকর করতে হবে৷''
আইনকে কার্যকর করতে, সহিংসতার বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে ‘সুশীল সমাজে'র ভূমিকা অত্যন্ত জরুরি বলে মনে করেন তিনি৷
একদিকে অপরাধীর শাস্তি কার্যকর করতে হবে৷ অন্যদিকে সমাজে বাড়াতে হবে নৈতিকতা শিক্ষা৷ তবেই সহিংস মানসিকতার পরিবর্তন হবে বলে মনে করেন অধ্যাপক খান৷ কারণ তিনি মনে করেন, ‘‘নৈতিক অবক্ষয় এর কারণেই সহিংসতার ঘটনা বাড়ছে৷ তাই প্রতিটি শিশুর বেড়ে ওঠার ক্ষেত্রে তার পরিবার ও শিক্ষাব্যবস্থায় নৈতিকতা শিক্ষা দেয়াও অত্যন্ত জরুরি'' বলেই মনে করেন তিনি৷
প্রতিবেদন: আফরোজা সোমা
সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন