বইমেলা
২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৩বাংলা একাডেমী এবার শুধু বাংলাদেশের প্রকাশকদের বইই রাখতে দিয়েছে একুশে বইমেলায়৷ মেলা শুরুর আগে ডয়চে ভেলেকে দেয়া সাক্ষাৎকারে এর পক্ষে অনেক যুক্তিই দেখিয়েছিলেন শামীম রেজা৷ কোনো যুক্তিই অগ্রাহ্য করার মতো ছিল না৷ বাংলাদেশের বই মেলায় বাংলাদেশের প্রকাশকরাই থাকবেন তাতে তীব্র সমালোচনার সুযোগইবা কোথায়?
১লা ফেব্রুয়ারি বিকাল ৩টায় বাংলা একাডেমী চত্বরে অমর একুশে গ্রন্থমেলা উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা৷ মেলা শুরুর আগে জানানো হয়েছিল, বাংলা একাডেমী সংলগ্ন সড়কে এবার কোনো স্টল থাকবে না৷ এবারের বইমেলায় মোট ২৩৬টি প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানকে স্টল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে, এর বাইরে ২০টি সরকারি প্রতিষ্ঠান এবং আটটি সেবামূলক প্রতিষ্ঠানেরও স্টল থাকবে৷ বরাবরের মতো ‘লিটল ম্যাগ চত্বর' থাকবে বলেও জানিয়েছিল বাংলা একাডেমী কর্তৃপক্ষ৷
একাডেমী ও তার আশপাশের এলাকায় ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে জেনে আশ্বস্তও হয়েছিল সবাই৷ কিন্তু শেষ পর্যন্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থাই প্রশ্নবিদ্ধ হলো৷ ২৪ ফেব্রুয়ারি রাতে আগুনে পুড়েছে ২৭টি স্টল৷ একই রাতে তিনবার আগুন লাগা এবং প্রথমবার আগুন লাগার পরও কর্তৃপক্ষ আর কোনো দুর্ঘটনা এড়াতে বিশেষ কোনো ব্যবস্থা নেয়নি এমনকি ক্লোজড সার্কিট (সিসি) ক্যামেরাও চালু রাখেনি বলে বিষয়টি সবাইকে আরো বেশি চিন্তায় ফেলেছে৷
কবি, সাংবাদিক এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক শামীম রেজার ডয়চে ভেলেকে দেয়া সাক্ষাৎকারেও প্রসঙ্গটি গুরুত্ব পেয়েছে৷ বইমেলা শুরুর আগের আশাবাদী শামীম রেজা এখন হতাশ৷ হতাশ প্রকাশকদের কথা ভেবে৷ মেলা শুরুর কয়েকদিন পর থেকেই যুদ্ধাপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি নিয়ে শাহবাগে সোচ্চার হয়ে ওঠে তরুণ প্রজন্ম৷ তারপর থেকে সবার আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে ওঠে শাহবাগের প্রজন্ম চত্বর৷ বইমেলায় ভিড়টা তাই একটু কমই ছিল এবার৷ প্রকাশকদের ব্যবসা খুব না জমলেও আশা ছিল শেষের কয়েকদিনে সব পুষিয়ে নেয়া যাবে৷ তা-ও হয়নি৷ ২৪ ফেব্রুয়ারির আগুন সেই সম্ভাবনাও শেষ করে দেয়৷
শামীম রেজা তাই হতাশা নিয়েই বললেন, ‘‘ প্রকাশকদের জন্য এবারের বইমেলা ভালো যায়নি৷'' তবে বই প্রকাশিত হয়েছে প্রচুর৷ তাতেই অবশ্য খুশি হওয়ার কারণ নেই, কারণ, ডয়চে ভেলেকে দেয়া সাক্ষাৎকারে শামীম রেজা জানিয়েছেন, বইয়ের সংখ্যা বাড়লেও বরাবরের মতো এবারও মেলায় ভালো বই খুব কমই এসেছে৷
সাক্ষাৎকার: আশীষ চক্রবর্ত্তী
সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন