অসন্তোষ কমছে না
১৪ নভেম্বর ২০১৩বুধবারও শ্রমিক বিক্ষোভের কারণে প্রায় ৭৫০টি পোশাক কারখানার উৎপাদন ব্যাহত হয়েছে৷
কয়েক দিন ধরে শ্রমিক বিক্ষোভের কারণে আশুলিয়ার ১০০ পোশাক কারখানা বুধবার বন্ধ ছিল৷ কিন্তু আশুলিয়ার পোশাক কারখানা বন্ধ থাকলেও বুধবার বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে সাভার, টঙ্গী ও গাজীপুরে৷ জানা গেছে, এসব এলাকার পোশাক কারখানার শ্রমিকরা সকাল থেকেই কাজ বন্ধ করে সর্বনিম্ন মজুরি ৮,০০০ টাকার দাবিতে বিক্ষোভ এবং ভাঙচুর করে৷
সাভার, গাজীপুর, টঙ্গী ও হেমায়েতপুরে শ্রমিকদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়েছে৷ এই ঘটনায় ৩০ জন শ্রমিক আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে৷
বাংলাদেশ গার্মেন্টস শ্রমিক ঐক্য পরিষদের আহ্বায়ক সিরাজুল ইসলাম ডয়চে ভেলেকে বলেন, মালিকদের কথার অস্বচ্ছতার কারণেই এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে৷ মালিকরা মুখে মজুরি বোর্ড ঘোষিত ৫,৩০০ টাকা সর্বনিম্ন মজুরি বিবেচনার কথা বললেও এর বিরুদ্ধে আপিল করেছেন৷ তাই শ্রমিকরা মালিকদের বিশ্বাস করতে পারছেন না৷ তাঁরা মনে করেন মালিকরা শেষ পর্যন্ত ৫,৩০০ টাকা মজুরিও মানবেন না৷ ফলে শ্রমিকদের মধ্যে অসন্তোষ দানা বাঁধছে৷ আর এই অসন্তোষ এবং ক্ষোভ থেকেই তাঁরা আন্দোলন করছেন৷
সিরাজুল ইসলাম জানান মালিকরা বলেছেন তাঁরা ৫,৩০০ টাকা মজুরি দেবেন, তবে শর্ত সাপেক্ষে৷ সরকার যদি তাঁদের কর রেয়াত এবং নগদ অর্থ সহায়তা বাড়িয়ে দেয় তাহলে তাঁরা নতুন মজুরি কার্যকর করবেন৷ এটা শ্রমিকদের সঙ্গে প্রতারণা ছাড়া আর কিছুই নয় বলে মনে করেন সিরাজুল ইসলাম৷
তিনি জানান, ২১ নভেম্বর মজুরি বোর্ডের আরেকটি বৈঠক আছে৷ সেখানেই সব কিছু ফয়সালা হবে৷ মালিকরা যদি তাঁদের অবস্থান স্পষ্ট না করেন এবং ন্যূনতম মজুরি মেনে না নেন তাহলে শ্রমিকরা আরো বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠতে পারেন৷
এদিকে মজুরি বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান ইকতেদার আহমেদ মনে করেন, সর্বনিম্ন মজুরি ৫,৩০০ টাকা যথেষ্ট নয়৷ মজুরি ৬,০০০ টাকার বেশি হওয়া উচিত বলে ডয়চে ভেলেকে জানান তিনি৷ তবে তিনি বলেন বর্তমান মজুরি বোর্ডের চেয়ারম্যানের উচিত ছিল ঐক্যমতের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেয়া৷ তাহলে এই সিদ্ধান্ত কার্যকর করা সহজ হত৷
এদিকে পোশাক কারখানার মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ'র সহ-সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান ডয়চে ভেলেকে বলেন, যে দামে তাঁরা পোশাক রপ্তানি করেন তাতে তাঁদের পক্ষে এত বেশি মজুরি দেয়া সম্ভব নয়৷ আর আন্দোলনের নামে ভাঙচুর করে, উৎপাদন বন্ধ করে তাঁদের সক্ষমতা আরো কমিয়ে দেয়া হচ্ছে৷
বাংলাদেশ বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম পোশাক রপ্তানিকারক দেশ৷ আর রপ্তানি আয়ের প্রায় ৮০ ভাগ আসে এই খাত থেকে৷ কিন্তু গত কয়েকমাস ধরে এই খাত চাপের মুখে রয়েছে৷ ন্যূনতম মজুরি নিয়ে পোশাক খাতে বড় কোনো অঘটনের আশঙ্কা করছেন কেউ কেউ৷