1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান
সমাজইউক্রেন

পরমাণু কেন্দ্র থেকে আক্রমণে রাশিয়া

২ আগস্ট ২০২২

নিউইয়র্কে পরমাণু অস্ত্র নিয়ে বৈঠকে বসেছেন বিশ্বনেতারা। সেখান থেকেই রাশিয়ার বিরুদ্ধে এই অভিযোগ উঠেছে।

https://p.dw.com/p/4EzYK
ইউক্রেন
ছবি: ussi Nukari/Lehtikuva/dpa/picture alliance

ইউক্রেনের জাপোরিজ্ঝিয়া পরমাণু কেন্দ্রটি রাশিয়া দখল করে নিয়েছে। ওই পরমাণু কেন্দ্র থেকেই ইউক্রেনের বিভিন্ন অঞ্চলে রাশিয়ার সেনা মিসাইল আক্রমণ করছে বলে অভিযোগ করেছেন মার্কিন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন।

নিউ ইয়র্কে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলোচনা করার সময় ব্লিংকেন বলেন, ওই পরমাণু কেন্দ্র থেকে রাশিয়া আক্রমণ চালাচ্ছে। তারা জানে, ইউক্রেনের সেনা পাল্টা পরমাণু কেন্দ্রে আক্রমণ চালাতে পারবে না। সেক্ষেত্রে বড়সড় দুর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা থাকবে। মস্কো সেই সুযোগটাই ব্যবহার করছে। যা শুধু অন্যায় নয়, অবৈধও।

রুশ নৌবাহিনী দিবস: পুটিনের নতুন বার্তা

নিউ ইয়র্কে পরমাণু অস্ত্রের ব্যবহার আটকানো নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে বসেছেন বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ নেতারা। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুটিন অবশ্য সেখানে যোগ দেননি। তবে তিনি একটি নোট পাঠিয়েছেন। তাতে বলা হয়েছে, ''পরমাণু যুদ্ধে কেউ জয়ী হতে পারে না। তাই আশা করা যায়, কোনও দেশ পরমাণু অস্ত্র ব্যবহার করবে না।''

সম্মেলনে যোগ দেওয়া অন্য দেশগুলি অবশ্য রাশিয়ার তীব্র নিন্দা করেছে। আন্তর্জাতিক অ্যাটমিক এজেন্সির ডিরেক্টর জেনারেল রাফায়েল গ্রসি জানিয়েছেন, জাপোরিজ্ঝিয়া পরমাণু কেন্দ্রে যে কোনো সময় বিরাট দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। রাশিয়াকে তার দায় নিতে হবে।

জাতিসংঘের প্রধান আন্তোনিও গুতেরেস বলেছেন, ''ঠান্ডা যুদ্ধের পর থেকে পরমাণু অস্ত্র ব্যবহারের আশঙ্কা এত প্রবলভাবে কখনো দেখা যায়নি।'' জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী আনালেনা বেয়ারবক জানিয়েছেন, রাশিয়ার আগ্রাসন দেখে বোঝা যাচ্ছে, পরমাণু অস্ত্র এখনো ভূরাজনীতির বাস্তবতা।

ইউক্রেনের পরমাণু কেন্দ্র থেকে লড়াই চালানোর যে অভিযোগ রাশিয়ার বিরুদ্ধে তোলা হয়েছে, সে বিষয়ে মস্কো এখনো পর্যন্ত কোনো মন্তব্য করেনি।

খাদ্যশস্য নিয়ে প্রথম জাহাজ

ইউক্রেনের ওডেসা বন্দর থেকে প্রথম খাদ্যশস্য বোঝাই জাহাজ কৃষ্ণসাগরে রওনা হয়েছে। ইউক্রেন জানিয়েছে, ২৬ হাজার টন ভুট্টা নিয়ে জাহাজটি সোমবার লেবাননের দিকে রওনা হয়েছে। যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর এই প্রথম খাদ্যশস্য নিয়ে কোনো জাহাজ ইউক্রেনের বন্দর থেকে রওনা হতে পারল।

ইউক্রেন জানিয়েছে, আরো জাহাজ আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে রওনা হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। বস্তুত, যুদ্ধ শুরু হওয়ার অব্যবহিত আগে ২৬টি জাহাজ খাদ্যশস্য বোঝাই করে বন্দর ছাড়ার প্রস্তুতি নিয়েছিল। কিন্তু তখনই যুদ্ধ শুরু হওয়ায় জাহাজগুলি আটকে পড়ে। কিছুদিনের মধ্যে সেই জাহাজগুলিকেও ছাড়া হবে বলে জানানো হয়েছে।

ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পরেই বিশ্বজুড়ে খাদ্যসংকট বাড়তে থাকে। এই মুহূর্তে বিশ্বের প্রায় ৩৪৫ মিলিয়ন মানুষ খাদ্যসংকটে ভুগছেন বলে দাবি বিশেষজ্ঞদের। ইউক্রেন এবং রাশিয়া থেকে খাদ্যশস্য বোঝাই জাহাজগুলি আফ্রিকা এবং ইউরোপের বিভিন্ন দেশে পৌঁছালে সমস্যা খানিকটা কমবে বলে মনে করা হচ্ছে।

ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর কৃষ্ণসাগর কার্যত অবরুদ্ধ করেছিল রাশিয়া। তাদের দাবি ছিল, সমুদ্রে মাইন ছড়িয়ে রেখেছে ইউক্রেন। অন্যদিকে ইউক্রেনের অভিযোগ ছিল, কৃত্রিম খাদ্যসংকট তৈরি করতেই রশিয়া অবরোধ করেছে। তুরস্কের মধ্যস্থতায় এই সমস্যা কাটানোর চেষ্টা শুরু হয়। দীর্ঘ আলোচনার পর সম্প্রতি রাশিয়া এবং ইউক্রেন এবিষয়ে চুক্তিবদ্ধ হয়েছে। তারপরেই খাদ্যশস্য বোঝাই জাহাজ ফের যাত্রা শুরু করতে পেরেছে।

আরো অস্ত্র পাবে ইউক্রেন

অ্যামেরিকা ইউক্রেনের জন্য আরো ৫৫০ মিলিয়ন ডলারের অস্ত্রের প্যাকেজ ঘোষণা করেছে। জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলের মুখপাত্র জন কিরবি সোমবার এই ঘোষণা করেছেন। এর মধ্যে দূরপাল্লার রকেট এবং গোলাবারুদ আছে বলে জানিয়েছেন তিনি। এই নিয়ে বাইডেন প্রশাসন প্রায় আট বিলিয়ন ডলার মূল্যের অস্ত্র ইউক্রেনকে সরবরাহ করল বলে জানিয়েছেন তিনি।

এছাড়া জার্মানিও ইউক্রেনকে আরো অস্ত্র পাঠাবে বলে জানিয়েছে।

এসজি/জিএইচ (রয়টার্স, এপি, এএফপি, ডিপিএ)