ইউক্রেনের তিনটি বন্দরে কাজ শুরু
২৮ জুলাই ২০২২বুধবার ইউক্রেনের প্রশাসন জানিয়েছে, দক্ষিণ ইউক্রেনের তিনটি বন্দরে ফের কাজ শুরু হয়েছে। তুরস্ক এবং জাতিসংঘের মধ্যস্থতায় রাশিয়া এবং ইউক্রেন খাদ্যশস্য রপ্তানির বিষয়ে ঐক্যমত্যে পৌঁছেছিল। কিন্তু তারপরেও বন্দরগুলি খুলছিল না। বুধবার থেকে ফের বন্দরে কাজ শুরু হয়েছে।
ওডেসা, চারনোমরস্ক, পিভদেনিই বন্দর আপাতত খুলেছে। এখান থেকেই খাদ্যশস্য বোঝাই জাহাজ কৃষ্ণসাগরের পথ ধরে আফ্রিকার দিকে যাবে। ইউক্রেন জানিয়েছে, জাহাজগুলির সামনে পিছনে এসকর্ট জাহাজ থাকবে। তারাই নিরাপদ পথ দেখিয়ে খাদ্যবোঝাই জাহাজগুলিকে নিয়ে যাবে। বস্তুত, এসকর্ট জাহাজগুলিতে অত্যাধুনিক যন্ত্র লাগানো থাকবে। যার সাহায্যে বোঝা যাবে, জলের তলায় কোথাও কোনো মাইন বা বাধা আছে কি না।
তুরস্কের ইস্তাম্বুলে একটি যৌথ সমন্বয় সেন্টারও তৈরি করা হয়েছে। বুধবার তুরস্কের প্রতিরক্ষামন্ত্রী তার উদ্বোধন করে বলেছেন, ''গোটা বিশ্বের চোখ ওই সেন্টারের দিকে থাকবে। কর্মীদের সে কথা মনে রাখতে হবে।'' ওই সমন্বয় সেন্টারের সঙ্গে যোগাযোগের মাধ্যমেই খাদ্যশস্য নিয়ে জাহাজগুলি কৃষ্ণসাগরে নামবে বলে তিনি জানিয়েছেন।
২৪ ফেব্রুয়ারি রাশিয়া ইউক্রেনে হামলা চালানোর পর ইউক্রেনের বন্দরগুলি বন্ধ হয়ে গেছিল। যার জেরে ইউক্রেনের খাদ্যশস্য বাইরে যেতে পারছিল না। রাশিয়া দাবি করেছিল, ইউক্রেন কৃষ্ণসাগরে মাইন পেতে রেখেছে। ইউক্রেনের দাবি ছিল, রাশিয়া কৃষ্ণসাগরে অবরোধ তৈরি করেছে। দুই দেশের মধ্যে এনিয়ে তীব্র বিতর্ক হয়েছে। অন্যদিকে আফ্রিকা-সহ একাধিক দেশে খাদ্য সংকট শুরু হয়। অবশেষে সেই সমস্যার একটি সাময়িক সমাধানসূত্রে পৌঁছানো গেছে। যদিও ইউক্রেনের অভিযোগ, এই পরিস্থিতিতেও রাশিয়া ওডেসার মতো বন্দরে মিসাইল হামলা চালাচ্ছে। ফলে বন্দরে কাজ করতে সমস্যা হচ্ছে।
ইউরোপে বিদ্যুৎ দেবে ইউক্রেন
বুধবার দৈনিক বক্তৃতায় ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি জানিয়েছেন, তারা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, দেশের বাইরে বিদ্যুতের রপ্তানি বাড়ানো হবে। জেলেনস্কি জানিয়েছেন, বিষয়টি নিয়ে তারা কাজ করতে শুরু করে দিয়েছেন। জেলেনস্কির দাবি, এর ফলে ইউরোপের দেশগুলির সুবিধা হবে। রাশিয়া বেশ কয়েকটি দেশে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছে, কোনো কোনো দেশে গ্যাস সরবরাহ কমিয়ে দিয়েছে। ইউক্রেন বিদ্যুৎ রপ্তানি করলে সেই সমস্যার কিছুটা সুরাহা বলে মনে করছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট।
জেলেনস্কির বক্তব্য, এর ফলে আরো দুইটি সুবিধা হবে। এক, ইউক্রেনের হাতে বিদেশি মুদ্রা আসবে এবং দুই প্রাকৃতিক সম্পদের ক্ষেত্রে রাশিয়ার উপর ইউরোপের নির্ভরতা কমবে। রাশিয়া বা ইইউ অবশ্য এখনো এবিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।
প্রতিরোধের ভূমিকায় রাশিয়া
ইউক্রেনের এক উচ্চপদস্থ সেনাকর্মী জানিয়েছেন, রাশিয়া যুদ্ধে নতুন কৌশল নিতে শুরু করেছে। বিভিন্ন এলাকায় রাশিয়া নতুন করে বিপুল পরিমাণ সেনা নিয়ে এসেছে। কিন্তু তারা নতুন এলাকা দখলের আর চেষ্টা করছে না। যে অঞ্চলগুলি তারা ইতিমধ্যেই দখল করেছে, সেগুলিতে প্রতিরোধ গড়ে তুলছে। যাতে ইউক্রেনের হাতে তা ফিরে না যায়।
এসজি/জিএইচ (রয়টার্স, এপি, এএফপি, ডিপিএ)