1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

নেতৃত্বের অভাবে বাঙালি জাতি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে: কাশেম

২০ জুলাই ২০১১

বরিশালের বাবুগঞ্জ এলাকার একজন সফল মুক্তিযোদ্ধা আবুল কাশেম৷ একাত্তরে যুদ্ধের পুরো সময়টা তিনি ছিলেন বরিশাল এলাকাতে৷ তাঁর হাতে প্রাণ হারিয়েছে অনেক পাকিস্তানি সেনা৷

https://p.dw.com/p/1200R
ছবি: DW/M.M. Rahman

আবুল কাশেম পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সদস্য ছিলেন৷ একাত্তরের শুরুতে চাকরি থেকে অবসর নেন তিনি৷ এরপর মার্চ মাসে বাবুগঞ্জে শুরু করেন মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি৷ সেনা অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে মুক্তিসেনার একটি দল গড়ে তোলেন কাশেম৷ প্রয়োজনীয় অস্ত্র সহায়তা পেয়েছেন ভারত থেকে৷ বরিশালের কয়েকটি থানা থেকেও অস্ত্র সংগ্রহ করেছেন৷ তিনি বলেন, বাবুগঞ্জ এবং গৌরনদী থানা দুটি আমার দখলে ছিল৷ এই দুই থানা থেকে দু'শোর মতো অস্ত্র আমরা সংগ্রহ করেছি৷ এছাড়া বড় অস্ত্র ভারত থেকে এসেছে৷

শুরুতেই বাধা

সেসময় যুদ্ধের শুরুর দিকেই পাঁচ সহযোদ্ধাকে হারান কাশেম৷ ২৮ এপ্রিলের কথা৷ পাকিস্তানি সেনারা সর্বাত্মক আক্রমণ চালায় বরিশালে৷ রুখে দাঁড়ান কাশেমরা৷ তিনি বলেন, বরিশালের স্থলভাগে প্রথম যখন পাকিস্তানি বাহিনী আসে, তখন গৌরনদীতে আমাদের বাহিনী তাদের বাধা দেয়৷ সেযুদ্ধে আমার পাঁচ সহযোদ্ধা নিহত হয়৷ তাদের মধ্যে আব্দুল খালেক, মতিউর রহমান এবং ইসরায়েল-এর নাম মনে আছে৷

পাকসেনা হত্যা

একাত্তরে এমন একাধিক রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে অংশ নিয়েছেন কাশেম৷ এখনো মনে করতে পারেন, বাবুগঞ্জ থানায় হামলার কথা, দামড়াই এলাকায় দীর্ঘস্থায়ী যুদ্ধের স্মৃতি৷ নীলগঞ্জ এলাকাতেও এক লড়াইয়ে পাক বাহিনীকে পর্যুদস্ত করেছিলেন কাশেমরা৷ তবে, তাঁর জীবনে সবচেয়ে স্মরণীয় যুদ্ধটি ছিল কুমারবাড়িতে৷ সেযুদ্ধে বেশ কয়েকজন পাকিস্তানি সেনাকে হত্যা করতে সক্ষম হয় কাশেমরা৷ তাঁর কথায়, ১৯৭১ সালের ২৭ জুলাই পাক বাহিনী কুমারবাড়ি লুট করছিল৷ তখন আমরা তাদের উপর আক্রমণ করি৷ তখন একপর্যায়ে তারা আখক্ষেতে অস্তর রেখে দূরে সরে যায়৷ এরপর তাদেরকে ধরে এনে হত্যা করি আমরা৷

মুজিব-এর মতো নেতা চাই

এভাবে নয় মাস যুদ্ধের পর দেশ স্বাধীন হয়৷ কাশেমরা ফিরে যান কর্মক্ষেত্রে৷ বাহাত্তরে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হিসেবে কাজ শুরু করেন কাশেম৷ এরপর আইন বিষয়ে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করেন৷ বর্তমানে আবুল কাসেম'এর বয়স ৭৪ বছর৷ স্বাধীন বাংলাদেশ সম্পর্কে জানতে চাইলে কাশেম স্মরণ করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান এর কথা৷ বর্তমান বাংলাদেশে মুজিবের মত একজন নেতার অভাব অনুভব করেন এই বীর সেনা৷ তিনি বলেন, আমরা তখন যুদ্ধ করেছি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান এর আহ্বানে৷ তিনি আমাদের যুদ্ধের মহানায়ক ছিলেন৷ কিন্তু তারপরে যারা দেশ শাসন করেছেন, তাদের কেউই বঙ্গবন্ধুর মানের ছিলেন না৷ সেটা আওয়ামীলীগ বা বিএনপি - যেদলেরই হোক৷ বর্তমানে নেতৃত্বের অভাবে বাঙালি জাতি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে৷

আবুল কাশেম চান, দেশের স্বার্থে রাজনৈতিক নেতারা যেন বিভেদ ভুলে আবারো ঐক্যবদ্ধ হয়৷ দেশের জন্য কাজ করতে গিয়ে ব্যক্তিস্বার্থ যেন তাদের কাছে প্রাধান্য না পায়৷ কেননা, দেশের উন্নয়নে ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টা এই মুহূর্তে খুবই জরুরি৷

প্রতিবেদন: আরাফাতুল ইসলাম

সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য