নির্বাচন এবং জার্মানির সাংস্কৃতিক অঙ্গনে পরিবর্তন
২৮ সেপ্টেম্বর ২০২১অন্য সব কিছুর মতো সাংস্কৃতিক অঙ্গনের সার্বিক বিষয়েও কী বা কেমন পরিবর্তন আসতে পারে তা নির্ভর করে কোন কোন দলের জোট সরকার ক্ষমতায় আসে, তার ওপর৷ তবে নির্বাচনি প্রচারণার সময় প্রায় সব দলই সরকার গঠন করলে সংস্কৃতি এবং শিক্ষায় বরাদ্দ বাড়ানোর অঙ্গীকার করেছে৷
লুট করা সাংস্কৃতিক নিদর্শনগুলোর ভবিষ্যৎ
নাৎসি সরকার এবং উপনিবেশিক শাসনের সময় বিভিন্ন দেশ থেকে নিয়ে আসা শিল্প নিদর্শনের বিষয়ে নতুন সরকারের সিদ্ধান্ত কী হবে এটা একটা বড় প্রশ্ন৷ বার্লিনে হুমবোল্ড্ট ফোরামে বিষয়টি নিয়ে বিতর্ক হয়েছে৷ তাছাড়া ২০১২ সালে মিউনিখের এক অ্যাপার্টমেন্ট থেকে বিপুল পরিমাণ শিল্পকর্ম উদ্ধারের পর থেকেই লুট করে আনা শিল্পকর্ম উৎসদেশে ফিরিয়ে দেয়ার দাবি বিভিন্ন পর্যায় থেকে উঠছে৷ নাৎসি আমলের শিল্পকর্ম বিক্রেতা হিল্ডারান গুলরিটের সন্তানের সেই অ্যাপার্টমেন্ট থেকে উদ্ধার করা শিল্পকর্মগুলোর দাম এক বিলিয়ন ইউরোর চেয়েও বেশি বলে ধারণা করা হচ্ছে৷
কিন্তু সরকার যেই দলগুলোর জোটই গঠন করুক না কেন লুট করা সম্পদের ভবিষ্যৎ আগামী চার বছরে নির্ধারিত হবে কিনা তা এখনই বলা যাচ্ছে না৷ সিডিইউ/সিএসইউ বলে রেখেছে, তারা বিষয়টি নিয়ে আরো তথ্যানুসন্ধান প্রয়োজন বলে মনে করে৷ গ্রিন পার্টি এবং বাম দল শিল্পকর্ম ফিরিয়ে দেয়ার বিষয়ে নতুন আইন প্রণয়নের পক্ষে৷ এছাড়া নাৎসি এবং উপনিবেশিক আমলে নিয়ে আসা শিল্পকর্ম ফিরিয়ে দেয়ার বিষয়ে দুটি দলের সমর্থন খুবই স্পষ্ট৷ তবে ফিরিয়ে দেয়া কবে থেকে, কিভাবে শুরু হবে সে বিষয়ে দল দুটোর বক্তব্য পাওয়া যায়নি৷
বিদেশে জার্মানির সাংস্কৃতিক প্রতিনিধি
যেসব প্রতিষ্ঠান বিদেশে জার্মানির সংস্কৃতিকে তুলে ধরে, তাদের মধ্যে ডয়চে ভেলে, গ্যোটে ই্ন্সটিটিউট, বিভিন্ন জার্মান স্কুল এবং জার্মান অ্যাকাডেমিক এক্সচেঞ্জ সার্ভিস (ডিএএডি) অন্যতম৷ নির্বাচনের আগে সিডিইউ আর সিএসইউ জানিয়েছে, সরকার গঠন করলে তারা গ্যোটে, ডিএএডি এবং বিভিন্ন জার্মান স্কুলের কাজে আরো উৎসাহ জোগাবে৷ কিন্তু কীভাবে তা করবে সে সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু বলা হয়নি৷ এফডিপি জানিয়ে রেখেছে, ক্ষমতায় এলে তারা আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সক্রিয় সংস্কৃতি সংশ্লিষ্ট সব জার্মান প্রতিষ্ঠানের বাজেট বাড়াবে৷ গ্রিন পার্টি বরাদ্দ বৃদ্ধির পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানগুলোর দ্রুত ডিজিটাইশনেও জোর দেয়ার কথা বলেছে৷
সংস্কৃতিতে ব্যয় বাড়ানোর সক্ষমতা
সাম্প্রতিক সময়ে এই খাতে ব্যয় অনেক বাড়িয়েছে জার্মান সরকার৷ ম্যার্কেলে সরকারের সংস্কৃতি এবং মিডিয়া বিষয়ক কমিশনের বাজেট ২০২০ সালে প্রথমবারের মতো ২.৩৪ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যায়৷ এর সঙ্গে করোনায় বিপর্যস্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর আর্থিক সহায়তায় খরচ করা হয় এক বিলিয়ন ডলার৷ নতুন সরকার এ খাতে ব্যয় আরো বাড়ায় কিনা তা-ই এখন দেখার বিষয়৷
স্টেফান ডেগে, বেটিনা বাউমান/এসিবি