চুরি করা শিল্পকর্ম ফিরিয়ে নিতে ঐক্য চাই আফ্রিকায়
২২ ডিসেম্বর ২০২০গত সপ্তাহে হুমবোল্ট ফোরাম মিউজিয়ামের উদ্বোধন হলো জার্মানির রাজধানী বার্লিনে৷ বিশাল এক কমপ্লেক্সে গড়ে তোলা জাদুঘরটিতে আফ্রিকার ৭৫ হাজারের মতো শিল্পকর্ম রয়েছে৷ শিল্পকর্মগুলো আফ্রিকা থেকে কিভাবে এলো তা এখনো অজানা৷
জানা যায়, ১৮৯৭ সালে ব্রিটিশ সেনাবাহিনী কয়েক হাজার শিল্পকর্ম লুটে নিয়েছিল কিংডম অব বেনিন (এখন নাইজেরিয়া) থেকে৷ ২০০ শিল্পকর্ম স্থান পায় লন্ডনের ব্রিটিশ মিউজিয়ামে, বাকিগুলো চলে যায় জার্মানিসহ পাশ্চাত্যের বিভিন্ন দেশে৷
২০২১ সালের তৃতীয়াংশে আফ্রিকার শিল্পকর্মের প্রদর্শন শুরু করবে হুমবোল্ট ফোরাম৷ গত সপ্তাহে ফোরামের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে৷ তখন লুটের শিল্পকর্ম প্রদর্শনে জাদুঘরের ভূমিকার সমালোচনাও করেছেন কয়েকজন বক্তা৷ ব্যস ওইটুকুই৷ তারপর খুব দ্রুতই যেন শেষ হয়ে গেল আলোচনা৷ বেশ কিছু অধ্যায় লেখার আগেই একটা বই শেষ করে দেয়ার মতো ছিল ব্যাপারটা৷
চুরি করা শিল্পকর্ম ফেরত দেয়ার দাবি
হুমবোল্ট ফোরামের উদ্বোধনের দুই সপ্তাহ আগে জার্মানিতে নাইজেরিয়ার রাষ্ট্রদূত ইউসুফ টুগার বেনিন ব্রোঞ্জের তৈরি শিল্পকর্মগুলো ফেরত চেয়ে জার্মান সরকারের কাছে চিঠি লিখেছেন৷ এটি তার দ্বিতীয় চিঠি৷ টুগার জানিয়েছেন, প্রথম চিঠিটি লিখেছিলেন ২০১৯ সালের আগস্ট মাসে, কিন্তু জার্মান সরকারের তরফ থেকে এখনো কোনো সাড়া পাননি৷
আফ্রিকার আরো কয়েকটি দেশ আনুষ্ঠানিকভাবে উপনিবেশ আমলে চুরি করে আনা শিল্পকর্ম ফেরত চেয়েছে৷
ফেরত পাওয়ার নজিরও আছে৷
২০১৭ সালের এক অনুরোধের প্রেক্ষিতে গত বছর নামিবিয়াকে ৫০০ বছর আগের পাথরের তৈরি একটা ক্রস ফেরত দিয়েছে জার্মানি৷
ব্রিটেনের কাছ থেকে প্রাচীন শিল্পকর্ম ফেরত চেয়েছে ইথিওপিয়া৷ কয়েক দফা চেয়েও এখনো অবশ্য কোনো কাজ হয়নি৷ ওদিকে বেনিন, সেনেগাল আর আইভরি কোস্ট সরকার উপনিবেশ আমলে খোয়া যাওয়া শিল্পকর্ম ফেরত চেয়েছে ফ্রান্সের কাছে৷
বেশিরভাগ অনুরোধে দৃশ্যত কানই দেয়া হয়নি৷
সাবেক উপনিবেশিক প্রভুরা উন্নয়ন সহায়তা বন্ধ করে দিতে পারে- এই আশঙ্কায় আফ্রিকার বাকি দেশগুলো চুরি করে নিয়ে যাওয়া শিল্পকর্ম এখনো ফেরত চায়নি৷
তাই সেসব দেশে শুধু এনজিও, অ্যাক্টিভিস্ট বা অন্য কোনো ব্যক্তি পর্যায় থেকেই শুধু এমন দাবি উঠতে দেখা যাচ্ছে৷
কিন্তু শিল্পকর্মগুলো ফেরত পেতে হলে ঐক্যবদ্ধ হতেই হবে আফ্রিকাকে৷
হ্যারিসন মভিলিমা/এসিবি