‘‘সাইবার-হিন্দু''
৪ ডিসেম্বর ২০১৩এই চার ব্যক্তির পরিচয় টুইটারে৷ তাদের পারিবারিক ইতিহাস ভিন্ন৷ কাজের পরিধিও ভিন্ন৷ কিন্তু চাওয়া একটাই৷ নরেন্দ্র মোদিকে ভারতের শীর্ষ পদে বসাতে হবে৷ ক্ষমতায় আনতে হবে কট্টরপন্থি ভারতীয় জনতা পার্টি বিজেপিকে৷ এই উদ্দেশ্য পূরণে ইন্টারনেটে মোদির পক্ষে প্রচারণা চালান তারা৷ তাদের পরিচয় তাই ‘‘সাইবার-হিন্দু৷'' ভারতের রাজনৈতিক অঙ্গনে ইন্টারনেটভিত্তিক এসব কর্মীর সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে৷
‘‘সাইবার-হিন্দুর'' সদস্যরা নিজেদের খরচেই নিয়মিত মিলিত হন৷ এরপর নিজেদের জীবন, সমাজ নিয়ে আলোচনার পাশাপাশি রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলেন৷ মোদির প্রতি সমর্থন আদায়ে, তাঁর বিপক্ষে গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনের প্রতিবাদে, সর্বোপরি মোদির ইমেজ বৃদ্ধিতে করণীয় বিষয়াদি থাকে তাদের আলোচনায়৷ এদেরই একজন নিতিন কাশ্যপ৷ আর্থিক খাতে কর্মরত এই ব্যক্তি ছয়মাসের ছুটি নিয়েছেন৷ মোদির পক্ষে ইন্টারনেটে প্রচারণা চালাতে এই ছুটি নিয়েছেন তিনি৷ কাশ্যপ বলেন, ‘‘আমি মনে করি, মোদি নিজেকে প্রমাণ করেছেন৷ তিনি এমন সব কাজ করেছেন যা ভারতে আরো বহু আগে করা উচিত ছিল৷''
কাশ্যপের পাশে বসা ব্রান্ড বিষয়ক এক বিশেষজ্ঞ নিজের পরিচয় প্রকাশ করতে চাইলেন না৷ তাঁর টুইটার আইডি ‘‘কেশর৷'' পাছে ব্যবসায় ক্ষতি হয় এজন্য পরিচয় গোপন রেখে টুইটার নিক নেম ব্যবহার করেই মন্তব্য করেন তিনি৷ তাঁর কথায়, একজন টি-বয় থেকে প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী হওয়ার পর্যায়ে পৌঁছাতে অনেক পরিশ্রম করেছেন মোদি৷
প্রসঙ্গত, ২০০১ সাল থেকে গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি৷ ২০০২ সালে গুজরাটে দাঙ্গায় কমপক্ষে এক হাজার মানুষ নিহত হন যার মধ্যে অধিকাংশই মুসলমান৷ অভিযোগ রয়েছে, মোদি এই দাঙ্গা দমনের বদলে তাতে উৎসাহ জুগিয়েছেন৷ তাই কট্টরপন্থি হিন্দু রাজনীতিবিদ হিসেবে তাঁর পরিচিতি রয়েছে৷ তবে জরিপ বলছে, আসন্ন নির্বাচনে বিজেপি প্রতিদ্বন্দ্বী কংগ্রেসের তুলনায় বেশি আসন পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে৷ ফলে মোদির প্রধানমন্ত্রী পদ পাওয়ার সম্ভাবনাও প্রবল৷
রয়টার্সকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে মোদি নিজেকে ‘প্রযুক্তি-প্রেমী' হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন৷ টুইটারে তাঁর ত্রিশ লাখের মতো অনুসারী রয়েছে এবং গত বছর হলোগ্রাফিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে একসঙ্গে চারটি জনসমাবেশে বক্তব্য দিয়েছেন তিনি৷ কংগ্রেসের তুলনায় তাঁর দল ইন্টারনেটে বেশি সক্রিয়৷
উল্লেখ্য, বাংলাদেশেও রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সামাজিক যোগাযোগ সাইট এবং ব্লগ ব্যবহারের প্রবণতা বাড়ছে৷ ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের পাশাপাশি ইসলামপন্থি দল জামায়াতে ইসলামী অনলাইনে বিভিন্ন ধরনের প্রচারণা চালিয়ে থাকে৷ বিশেষ করে নিজ নিজ দল এবং রাজনীতিবিদদের বিরোধী খবরের প্রতিবাদে তারা বেশ সরব৷ আর যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ইস্যুতে এই দুই দলের মুখোমুখি অবস্থান ইন্টারনেটেও স্পষ্ট৷