ভারতের আসন্ন নির্বাচন
২৩ অক্টোবর ২০১৩ভোটারদের মধ্যে প্রাক-নির্বাচনি সমীক্ষা চালিয়ে দেখা গেছে যে, ২০১৪ সালের মে মাসে সংসদীয় নির্বাচনের ফলাফলে একক বৃহত্তম দল হিসেবে উঠে আসতে পারে ভারতীয় জনতা পার্টি বা বিজেপি৷ সংসদের নিম্নসভা লোকসভার মোট ৫৪৩টি আসনের মধ্যে কংগ্রেসের চেয়ে অনেকটাই এগিয়ে থাকতে পারে বিজেপি৷ পেতে পারে ১৬২টি আসন আর কংগ্রেস পেতে পারে ১০২টি আসন৷ নিজের শক্তিতে সরকার গড়ার ম্যাজিক সংখ্যা ২৭২-এর চেয়ে অনেক কম৷ বিজেপি নেতৃত্বাধীন জোট পেতে পারে ১৮৬টি আসন৷ কংগ্রেস-নেতৃত্বাধীন জোট পাবে মাত্র ১১৭টি আসন৷
পাটিগণিতের হিসেবে বিজেপি-জোট এবং কংগ্রেস-জোটের মোট আসনের মোট যোগফল ৩০৩ হলে, ২৪০টি আসন থাকছে আঞ্চলিক দলগুলির ঝুলিতে৷ তার মধ্যে কয়েকটি দলের কংগ্রেস বা বিজেপির সঙ্গে ঠিক খাপ খাবে না৷ যেমন তৃণমূল কংগ্রেস, বামফ্রন্ট বা সমাজবাদি পার্টি বা বহুজন সমাজ পার্টি৷ ফলে সরকার গড়তে যথেষ্ট বেগ পেতে হবে বলে মনে করছেন সমীক্ষকরা৷৷
সরকার গড়তে নির্ভর করতে হবে আঞ্চলিক দলগুলির ওপর৷ অর্থাৎ, সরকার গড়ার আসল চাবিকাঠি থাকবে আঞ্চলিক দলগুলির কাছে, তাই বিজেপি হোক বা কংগ্রেস হোক হাত পাততে হবে আঞ্চলিক দলগুলির কাছে৷ সমীক্ষালব্ধ পূর্বাভাষে বলা হয়েছে, আঞ্চলিক দলগুলির মধ্যে ৩২টি আসন পেয়ে এগিয়ে থাকবে বামফ্রন্ট৷ তারপর বিএসপি ৩১টি, জয়ললিতার এআইএডিএমকে ২৮টি, এসপি ২৫টি এবং তৃণমূল ২৩টি করে আসন পেতে পারে৷ বিজেপি-জোট ছেড়ে বেরিয়ে যাওয়ায় বিহারের নীতীশ কুমারের জেডি (ইউ) পার্টি জবরদস্ত ধাক্কা খাবে৷ ২০০৯ সালে যেখানে পেয়েছিল ২০টি আসন ২০১৪ সালে ভোটে পাবে মাত্র নয়টি আসন৷
নির্বাচনি প্রচার এখন চলেছে জোরকদমে৷ বিজেপির প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী নরেন্দ্র মোদীকে সামনে রেখে প্রচার অভিযানে কোনো খামতি রাখছে না বিজেপি নেতৃত্ব৷ উত্তরপ্রদেশ বিজেপির জিওন কাঠি৷ গত সপ্তাহে উত্তরপ্রদেশে নির্বাচনি সভায় মোদীর ভাষণে হিন্দুত্ববাদের নামগন্ধ ছিল না৷ বলেছেন, হিন্দুত্বাদ নিয়ে ভোটের রাজনীতি ঢের হয়েছে৷ এখন চাই উন্নয়ন৷ স্রেফ উন্নয়ন আর সুশাসন যেটা কংগ্রেস সরকার দিতে পারেনি৷ এটা মোদীর নিজস্ব ভোট-কৌশল৷ কারণ বিজেপি বা সংঘপরিবার হিন্দুত্ববাদকে সরিয়ে রাখতে পারে না৷ নেপথ্যে তারা নিজের মতো করে হিন্দুত্ববাদকে তুলে ধরার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে৷
তাহলে মোদী নয় কেন? মোদী দেশের প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী৷ তাঁকে হিন্দু-মুসলিম উভয়কে সঙ্গে নিয়ে চলতে হবে৷ আগামী ২৭শে অক্টোবর মোদী জনসভা করবেন বিহারে৷ প্রচার চালাবেন ‘‘হুংকার রথে'' চড়ে৷ ভিড় জমাতে ১১টি বিশেষ ট্রেন এবং ছয় হাজার বাসের ব্যবস্থা করা হয়েছে, জেডি (ইউ)-এর রাজত্বে বিজেপির উপস্থিতি জোরেসোরে তুলে ধরতে৷
অন্যদিকে কংগ্রেস আমজনতার মন জয়ে প্রচার চালাচ্ছে খাদ্য সুরক্ষা,সরকারের দেয়া ভরতুকির টাকা সরাসরি যাতে সমাজের গরিব লোকেরা পায়, তার ব্যবস্থা করার মতো ইস্যুগুলি তুলে ধরে গরিব বন্ধুদের কাছে টানতে৷ এখন আনতে চাইছে সাম্প্রদায়িক হিংসা বিরোধী বিল৷
পাঁচটি রাজ্য দিল্লি, রাজস্থান, মধ্য প্রদেশ, ছত্তিশগড় ও মিজোরাম বিধানসভার ভোট আগামী ১১ই নভেম্বর থেকে ৪ঠা ডিসেম্বর৷ দিল্লিতে শাসকদল কংগ্রেস এবং বিরোধী দল বিজেপির প্রচার এখন তুঙ্গে৷ বিজেপি জিতলে মুখ্যমন্ত্রীর দাবিদার কে হবেন, তা নিয়ে দলের মধ্যে কাজিয়া চলেছে গোয়েল বনাম হর্ষবর্ধনের মধ্যে৷