ধূমপানের কারণে বাড়ি ছাড়া!
৩০ জুন ২০১৪ফ্রিডহেল্ম আডল্ফস কিন্তু তাঁর অ্যাপার্টমেন্টে বসেই সিগারেট খেয়েছিলেন৷ সমস্যা হলো, সিগারেটের ধোঁয়া হলওয়েতে যাওয়া ঠেকাতে ব্যর্থ হয়েছিলেন তিনি৷ আর সেটাই তাঁর অপরাধ৷ তাই এবার, বাড়িওয়ালির নোটিস মেনে নিয়ে তাঁকে ওই অ্যাপার্টমেন্ট ছেড়ে দিতে হবে৷
৭৫ বছর বয়সি আডল্ফসের দিন কাটে সরকারের অবসর ভাতার টাকায়৷ গত চার দশক ধরে তিনি ওই বাসায় বসবাস করে এলেও প্রতিবেশীদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে গতবছর তাঁর বিরুদ্ধে আদালতে যান তাঁর বাড়িওয়ালি৷
এ মামলার শুনানিতে বাড়িওয়ালির আইনজীবী আদালতকে বলেন, বার বার অনুরোধ করার পরও আডল্ফস ধোঁয়া বেরিয়ে যাওয়ার জন্য অ্যাপার্টমেন্টের জানালা খুলতে অস্বীকৃতি জানান৷ এমনকি নিয়মিত অ্যাশট্রে পরিষ্কার করতেও তাঁর ছিল দারুণ অনীহা৷ ২০১২ সালে বাড়িওয়ালি মৌখিকভাবে সতর্ক করে দেয়ার পরও বৃদ্ধ তাতে কান দেননি৷
বাড়ি ছাড়ার জন্য আডলফসকে এ বছরের শেষ পর্যন্ত সময় দিয়েছে ফেডারেল আদালত৷ অবশ্য এই রায়ের বিরুদ্ধে তিনি উচ্চ আদালতে আপিল করার সুযোগ পাবেন৷
জার্মানির ধূমপায়ী-অধূমপায়ী দু'পক্ষই গত এক বছর ধরে সমান আগ্রহ নিয়ে এ মামলার খোঁজ খবর রেখেছেন৷ ধূমপায়ীদের কারো কারো আশঙ্কা, আদালতের এই রায়ের ফলে নিজের বাড়িতে বসে ধূমপানের ওপরও নিষেধাজ্ঞা আরোপের পথ তৈরি হতে পারে৷
আদালতের রায় ঘোষণার পরপরই জার্মানির অ্যাসোসিয়েশন অফ রেন্টার্সের পরিচালক লুকাস জিবেনকোটেন এক বিবৃতিতে বলেন, ‘‘নিজের অ্যাপার্টমেন্টে বসে ধূমপানে কোনো বিধিনিষেধ দেয়া চলে না৷ ফেডারেল আদালত গত বছরই বলে দিয়েছে, একজন ভাড়াটে বাসা নেয়ার সময় যে চুক্তি করেছেন, সে অনুযায়ী ধূমপানের বিষয়টি নির্ধারিত হবে৷''
এ মামলার বিচার চলাকালে আডল্ফস দাবি করেন, সাবেক চ্যান্সেলর হেলমুট স্মিটের পরে তিনিই জার্মানির সবেচেয়ে বিখ্যাত ধূমপায়ী৷ তাছাড়া অন্য ধূমপায়ীদের কাছ থেকে পাওয়া আর্থিক সহায়তা দিয়েই তিনি নাকি এ মামলা চালিয়েছেন৷
জার্মানির পাবলিক ভবন, পরিবহনসহ বিভিন্ন স্থানে ধূমপান নিষিদ্ধ করা হয় ২০০৭ সালে৷ অধিকাংশ বার ও রেস্তোরাঁতেও ধূমপান নিষিদ্ধ৷
এক সময় অক্টোবর ফেস্টের মতো বিয়ার উৎসবে ধূমপান করা গেলেও ২০০৭ সাল থেকে সেখানেও নিষেধাজ্ঞা চলছে৷ হেলমুট স্মিটই সম্ভবত জার্মানির সর্বশেষ ব্যক্তি, যিনি টেলিভিশন সাক্ষাৎকারের মধ্যেও সিগারেট ধরানোর মতো স্বাধীনতা ভোগ করেছেন৷
জেকে/ডিজি (ডিপিএ, এএফপি)