ত্রিপোলিতে বিদ্রোহী বাহিনী, পতনের মুখে গাদ্দাফি প্রশাসন
২২ আগস্ট ২০১১ত্রিপোলির সর্বশেষ পরিস্থিতি
শনিবার রাত থেকেই গাদ্দাফির অনুগত সরকারি বাহিনীর দখলে থাকা রাজধানী ত্রিপোলিতে প্রবেশ করতে শুরু করে বিদ্রোহীরা৷ আকাশে টহল দিতে থাকে ন্যাটো নেতৃত্বাধীন আন্তর্জাতিক বাহিনীর যুদ্ধ বিমান৷ বিদ্রোহীদের অগ্রগতির সাথে সাথে ত্রিপোলি, বেনগাজি এবং মিসরাটাসহ বিভিন্ন শহরে বিদ্রোহীদের সাথে সাধারণ জনতা আনন্দউল্লাসে ফেটে পড়েন৷ পূর্বে সবুজ চত্বর হিসেবে পরিচিত বর্তমান শহীদ চত্বরে ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে জনতার জোয়ার৷ সোমবার বিদ্রোহীদের বিজয় এবং বিগত কয়েকমাসের সশস্ত্র লড়াইয়ের অবসান ঘটার প্রহর গুনছে লিবিয়ার মানুষ৷ তবে এখনও ত্রিপোলির দক্ষিণাঞ্চলে সরকারি বাহিনী এবং বিদ্রোহীদের মধ্যে গোলাগুলির শব্দ পাওয়া গেছে৷ অবশ্য বিদ্রোহীদের দাবি ত্রিপোলির ৯৫ শতাংশ তাদের নিয়ন্ত্রণে চলে এসেছে৷
লিবীয় নেতা গাদ্দাফি এবং তাঁর পরিবারের সদস্যদের খবর
ইতিমধ্যে বিদ্রোহীদের হাতে গাদ্দাফির ছেলে সাইফ আল ইসলাম, সাদি এবং মোহামেদ গাদ্দাফিকে আটক হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে৷ তবে ৪২ বছর ধরে ক্ষমতায় থাকা প্রতাপশালী নেতা গাদ্দাফি এখন কোথায় রয়েছেন সে ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে না৷ অবশ্য কয়েকটি কূটনৈতিক সূত্রের মতে, ত্রিপোলির বাব আল-আজিজিয়া ভবনেই গাদ্দাফি অবস্থান করছেন৷ বিশেষ করে ঐ ভবনে মাটির নীচে বেশ অনেকগুলো সুরক্ষিত কক্ষ রয়েছে এবং সেগুলোর কোথাও তিনি লুকিয়ে থাকতে পারেন এমন কথাই শোনা যাচ্ছে৷ এদিকে গাদ্দাফিকে উদ্ধারে বিমান পাঠানোর কথা অস্বীকার করেছে দক্ষিণ আফ্রিকা৷
আন্তর্জাতিক গোষ্ঠীর প্রতিক্রিয়া
লিবিয়ার বিদ্রোহীদের সাফল্যকে ইতিমধ্যে স্বাগত জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা৷ তিনি গাদ্দাফির পতন আসন্ন বলে মন্তব্য করেছেন৷ গাদ্দাফিকে ‘স্বৈরশাসক’ হিসেবে অভিহিত করে ওবামা বলেন, তাঁকে অবশ্যই ক্ষমতা ছাড়তে হবে৷ একইসাথে বিদ্রোহীদের প্রতি মানবাধিকার এবং গণতন্ত্রের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর আহ্বান জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ওবামা৷ লিবিয়ায় অতিরিক্ত রক্তপাত বন্ধে মুয়াম্মার গাদ্দাফিকে এখনই ক্ষমতা হস্তান্তরের আহ্বান জানিয়েছেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্র বিষয়ক প্রধান ক্যাথরিন অ্যশ্টন৷ এদিকে, গাদ্দাফিকে আদালতের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে বলে হুঁশিয়ারি উচ্ছারণ করেছেন জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী গিডো ভেস্টারভেলে৷ বিদ্রোহীদের প্রতিনিধিত্বকারী ন্যাশনাল ট্রানজিশনাল কাউন্সিল এনটিসি’র প্রতি সংহতি প্রকাশ করেছেন আরব লিগ প্রধান নাবিল আল-আরাবি৷
এছাড়া এনটিসি’র শীর্ষ নেতা মুস্তাফা আব্দুল জলিল বেনগাজি শহরে এক সাংবাদিক সম্মেলনে জানিয়েছেন, গাদ্দাফির শাসন শেষ৷ তবে বিদ্রোহী সদস্যদের সতর্ক করে দিয়ে তিনি বলেন, ‘‘লিবীয় জনতাকে মনে রাখতে হবে যে, এখনও অনেক পথ বাকি৷ সামনের পথও ফুল বিছানো নয় এবং আমাদের সামনে অনেক হুমকি ও দায়দায়িত্ব রয়েছে৷
প্রতিবেদন: হোসাইন আব্দুল হাই
সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক