টিগ্রে যুদ্ধের একবছর, শান্তি ফেরানোর উদ্যোগ
৫ নভেম্বর ২০২১ইথিওপিয়ায় শান্তি ফেরাতে বিশেষ উদ্যোগ অ্যামেরিকা এবং জাতিসংঘের। আফ্রিকার দেশগুলিও শান্তির বার্তা পাঠিয়েছে। অ্যামেরিকা ইথিওপিয়ার রাজধানীতে একটি বিশেষ দল পাঠিয়েছে। ইথিওপিয়ার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তারা কথা বলার চেষ্টা চালাচ্ছে। তবে প্রধানমন্ত্রী এবং সরকার-বিরোধী ফৌজ কেউই এখনো শান্তির বার্তায় আমল দেয়নি। লড়াই তীব্র থেকে তীব্রতর হচ্ছে।
একবছর আগে ইথিওপিয়ার টিগ্রেতে সরকারের সঙ্গে বিরোধীদের লড়াই শুরু হয়েছিল। বিরোধী ফৌজের নাম টিগ্রে পিপলস লিবারেশন ফ্রন্ট (টিপিএলএফ)। প্রাথমিকভাবে টিগ্রে দখলের জন্য তারা লড়াই শুরু করেছিল। টিপিএলএফ-কে রুখতে সেনা পাঠিয়েছিল সরকার। দুইপক্ষের লড়াইয়ে কয়েক হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে। গৃহহীন হয়ে ক্যাম্পে বসবাস করতে হচ্ছে বহু মানুষকে। বহু মানুষ প্রাণ হাতে নিয়ে পার্শ্ববর্তী দেশে পালিয়েছেন। মানবাধিকার সংগঠনগুলির বক্তব্য, তীব্র খাদ্যসংকট তৈরি হয়েছে দেশে। নারী-শিশুদের অবস্থা ভয়াবহ।
এই পরিস্থিতির মধ্যেই টিগ্রে দখল করে বিরোধী শক্তি। গত কয়েকদিনে টিগ্রে ছেড়ে তারা রাজধানীর অনেক কাছে চলে এসেছে। আরো বেশ কয়েকটি শহর দখল করেছে। এখন তাদের লক্ষ্য রাজধানী দখল। লড়াইয়ের এই পরিস্থিতির মধ্যে দেশের প্রধানমন্ত্রী জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছেন। সেনার হাতে সর্বোচ্চ ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি ইথিওপিয়ার সাধারণ মানুষদের হাতে অস্ত্র তুলে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তাদের গাড়ি যুদ্ধের জন্য দিয়ে দিতে বলা হয়েছে।
ভয়াবহ এই পরিস্থিতি রুখতে সচেষ্ট হয়েছে অ্যামেরিকা, জাতিসংঘ এবং আফ্রিকার একাধিক দেশ। একত্রে তারা একটি বিবৃতি প্রকাশ করেছে। যেখানে দুইপক্ষকেই নিঃশর্তে যুদ্ধ থামানোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের কথা বলা হয়েছে। অ্যামেরিকা একটি দলও পাঠিয়েছে রাজধানীতে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন একটি আলাদা বিবৃতি জারি করে একই কথা বলেছে। কিন্তু এখনো পর্যন্ত তাতে পরিস্থিতির বদল হয়নি।
জাতিসংঘের প্রধান আন্তোনিও গুতেরেস জানিয়েছেন, ইথিওপিয়ার প্রেসিডেন্টের সঙ্গে তার কথা হয়েছে। দ্রুত যুদ্ধ থামিয়ে আলোচনার টেবিলে বসার কথা বলেছেন তিনি। প্রয়োজনে জাতিসংঘ মধ্যস্থতা করতে রাজি বলেও তিনি আশ্বাস দিয়েছেন।
উগান্ডার প্রেসিডেন্ট জানিয়েছেন, পূর্ব আফ্রিকার ব্লক এবং ইন্টারগভর্নমেন্টাল অথরিটি অন ডেভেলপমেন্ট নভেম্বরে এ বিষয়ে বৈঠক ডেকেছে। সেখানে ইথিওপিয়ায় শান্তি ফেরানোর উপায় নিয়ে আলোচনা হবে।
আফ্রিকান ইউনিয়ন কমিশনের চেয়ারম্যানও দ্রুত যুদ্ধ থামানোর বার্তা পাঠিয়েছেন ইথিওপিয়ার প্রধানমন্ত্রী এবং বিদ্রোহীদের। কিন্তু সকলেরই বক্তব্য, যুযুধান দুইপক্ষই এখনো শান্তি প্রস্তাবে সাড়া দেয়নি।
এসজি/জিএইচ (রয়টার্স, এপি, এএফপি)