ছাড়া পেলেন আসিয়া বিবি
৮ নভেম্বর ২০১৮এক সপ্তাহ আগে সুপ্রিম কোর্ট পাকিস্তানের খ্রিষ্টান নারী আসিয়া বিবির বিরুদ্ধে ব্লাসফেমির অভিযোগ খারিজ করে দিলেও মুক্তি মিলছিল না আসিয়ার৷ দেশটির কট্টরপন্থিদের প্রতিবাদ-বিক্ষোভের মুখে আদৌ আসিয়া ছাড়া পাবেন কিনা তা নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছিল৷
এর মধ্যে সরকার কট্টরপন্থিদের সঙ্গে এ বিষয়ে একটি চুক্তিও করে, যা ব্যাপক সমালোচিত হয়৷
অবশেষে বুধবার আসিয়া মুক্তি পেয়েছেন বলে স্থানীয় গণমাধ্যমগুলো খবর প্রকাশ করে৷ কেউ কেউ দাবি করে যে, তিনি বিমানে করে দেশের বাইরে চলে যাচ্ছেন৷
তবে বিষয়টি এখনো পরিষ্কার নয়৷ পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র মোহাম্মদ ফয়সাল বৃহস্পতিবার স্থানীয় গণমাধ্যমকে বলেন, ‘‘আসিয়া বিবির দেশ ছাড়ার খবর সত্য নয়৷’’
এদিকে, ইউরোপীয় পার্লামেন্টের প্রেসিডেন্ট আন্টোনিও তাজানি টুইট করে বলেছেন, ‘‘আসিয়া জেল থেকে ছাড়া পেয়েছেন এবং নিরাপদ জায়গায় আছেন৷’’
তাজানি আরো জানান, তিনি ইউরোপে আসিয়া ও তাঁর পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাতের অপেক্ষায় আছেন৷
পাকিস্তনে ব্লাসফেমি একটি সংবেদনশীল বিষয়৷ আশির দশকে সামরিক স্বৈরশাসক জেনারেল জিয়া-উল-হকের সময়ে বিতর্কিত এই আইনটি জারি করা হয়৷ এই আইনের বিরোধীদের একটি বড় অভিযোগ যে, আইনটি ব্লাসফেমি'র চেয়ে ব্যক্তিগত রেষারেষির কারণে বেশি ব্যবহৃত হয়৷
২০০৯ সালের জুনে আসিয়া বিবি'র প্রতিবেশীরা তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ আনেন ব্লাসফেমির৷ তারা বলেন যে, আসিয়া ইসলাম ধর্মের নবির অবমাননাসূচক কথা বলেছেন৷ মানবাধিকার সংগঠনগুলোর ব্যাপক প্রতিবাদের মুখেও এক বছর পরে তাঁকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়৷ এরপর লাহোর হাইকোর্ট নিম্ন আদালতের রায় বহাল রাখে৷
এ বছর ৮ অক্টোবর পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্টে শুনানি হয়৷ সেখানে আসিয়া বিবির দণ্ড মওকুফের রায় দেয়া হয়৷
এদিকে, আসিয়ার মুক্তিকে কেন্দ্র করে আবারো কট্টর ইসলামপন্থিদের প্রতিবাদ বিক্ষোভের আশঙ্কা করা হচ্ছে৷
এর আগে রায়ের পর বিক্ষোভ শুরু করে তেহরিক-ই-লাবায়েক (টিএলপি) নামের একটি ইসলামপন্থি দল৷ তারা লাহোরের বড় বড় রাস্তা বন্ধ করে বিক্ষোভ শুরু করে৷ প্রতিবাদের মুখে তাদের সঙ্গে একটি চুক্তিতে আসতে বাধ্য হয় পাকিস্তান সরকার৷ চুক্তির পর গত শুক্রবার রাতে বিক্ষোভ কর্মসূচি স্থগিত করে টিএলপি৷
পাঁচ দফা সেই চু্ক্তিতে বলা আছে, সুপ্রিম কোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে করা আপিলে সরকার আপত্তি তুলবে না৷
জেডএ/এসিবি (রয়টার্স)