1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

জেলের তালা খুললো টুথব্রাশ!

১ নভেম্বর ২০১৬

ভারতের ভুপালের কারাগার থেকে পালিয়ে যাওয়া আট বন্দি বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে স্থানীয় পুলিশ৷ তবে এই ঘটনা নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে৷ পুলিশ বলছে, বন্দিরা টুথব্রাশ আর কাঠ দিয়ে চাবি বানিয়েছিল৷

https://p.dw.com/p/2Ryo6
কাশ্মীরে সন্ত্রাস
ছবি: Getty Images/AFP/M. Tauseef

নিষিদ্ধ ঘোষিত ‘স্টুডেন্টস ইসলামিক মুভমেন্ট অফ ইন্ডিয়া' বা এসআইএমআই বা সিমি-র এই আট সদস্য কারাগার থেকে পালিয়ে যাওয়ার ১০ ঘণ্টা পর নিহত হয় বলে সোমবার জানায় পুলিশ৷ রবিবার রাতে একজন কারারক্ষীকে হত্যা করে তারা পালিয়েছিল বলে জানা গেছে৷

জেলের তালা খুলতে বন্দিরা ‘টুথব্রাশ আর কাঠ' দিয়ে চাবি বানিয়েছিল বলে সোমবার সন্ধ্যায় এক সংবাদ সম্মেলনে জানান মধ্যপ্রদেশ পুলিশের প্রধান ইয়োগেশ চৌধুরী৷

এদিকে, ঘটনাটি ‘ভুয়া' কিনা তা নিয়ে ভারতে বিতর্ক শুরু হয়েছে৷ পশ্চিমবঙ্গের আনন্দবাজার পত্রিকা এক প্রতিবেদনে বলছে, ‘‘সংবাদমাধ্যমের হাতে আসা ভিডিও ফুটেজ এবং বিরোধী দলগুলির হইচইয়ে, গোটা ঘটনাটি ভুয়ো সংঘর্ষ কিনা, সে প্রশ্ন জোরালো হয়েছে৷ জাতীয়তাবাদী ভাবাবেগ আরও উসকে দিতেই এমন ঘটনা ‘ঘটানো' হলো কিনা, উঠছে সেই প্রশ্নও৷''

সোমবার ভারতের বিভিন্ন টিভি চ্যানেলে ছড়িয়ে পড়া দু'টি ভিডিও ফুটেজের কথা উল্লেখ করে আনন্দবাজার জানিয়েছে, ‘‘(ভিডিওতে) দেখা যাচ্ছে, মৃতপ্রায় এক ব্যক্তির উপরে বুলেট বৃষ্টি করে চলেছেন কমান্ডোরা৷ যেখানে মৃতদেহগুলি পড়ে রয়েছে, সেখানে কিন্তু কোনও অস্ত্রশস্ত্র নেই৷ সাদা পোশাকে একজনকে দেখা গেল প্লাস্টিকে মোড়া একটি নতুন ছুরি নিহত এক জঙ্গির ট্রাউজারের পকেট থেকে বের করলেন৷ আর একটি ভিডিওতে সংঘর্ষের আগে জঙ্গিরা আত্মসমর্পণ করতে চায় বলেও দেখা যাচ্ছে৷ সব মিলিয়ে ঠিক কী কারণে কমান্ডোরা ঝাঁকে ঝাঁকে গুলি চালিয়ে আট জনকে মেরে ফেললেন, স্পষ্ট নয়৷''

তবে বন্দুকযুদ্ধ নিয়ে প্রশ্ন তোলা ভালো নয় বলে মন্তব্য করেছেন ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী কিরণ রিজিজু৷ মঙ্গলবার তিনি বলেন, ‘‘সন্ত্রাসী দমনে নিরাপত্তা বাহিনীর কাজ নিয়ে শুধু ভিডিও দেখেই প্রশ্ন তোলা ভালো কাজ নয়৷''

তবে ‘ইন্ডিয়া টুডে'-র ব্যবস্থাপনা সম্পাদক রাহুল কানওয়াল বলেছেন, ‘‘ভুয়া এনকাউন্টারের খবর প্রকাশ করা দেশ বিরোধী কাজ নয়৷ বরং আপনি যখন জানেন যে একটি এনকাউন্টার ভুয়া তখন চুপ থাকাটাই সত্যিকার অর্থে দেশ বিরোধী কাজ৷''

ভারতের অনেকে মনে করছেন, নরেন্দ্র মোদী যখন গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন তখনও এরকম ‘ভুয়া' বন্দুকযুদ্ধের অভিযোগ উঠেছিল৷ নানা সমালোচনার শিকার মধ্যপ্রদেশের বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিংহ চৌহানের সরকারও জাতীয়তাবাদের তাস খেলতে চাইছে কিনা সে নিয়েও সন্দেহ প্রকাশ করেছেন কেউ কেউ৷

সাংবাদিক রাহুল পন্ডিতা মনে করছেন, ভুপালের ঘটনায় সবচেয়ে লাভবান হবেন মধ্য প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিংহ চৌহান৷

ঘটনাটি ভুয়া কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠায় সোমবারই মধ্য প্রদেশের পুলিশ সেই অভিযোগ নাকচ করে দেন৷ আর আজ রাজ্যের পুলিশ প্রধান জানিয়েছেন, সন্ত্রাসীরা পুলিশের দিকে গুলি চালিয়েছিল৷ তাই ঘটনাটি আসলেই ভুয়া কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন করেছেন রাজীব গান্ধীর জীবনীর লেখক মিনহাজ মার্চেন্ট৷

এদিকে, বাংলাদেশের সামাজিক মাধ্যম ব্যবহারকারীরাও ভুপালের ঘটনা নিয়ে প্রতিক্রিয়া প্রকাশ করেছেন৷ ইমতিয়াজ মির্জা আনন্দবাজার পত্রিকার প্রতিবেদন ফেসবুকে শেয়ার করে লিখেছেন, ‘‘... জঙ্গিদের হাতে পাওয়া গেছে ধারালো চামচ!! কাঠের চাবি দিয়ে জেলের তালা খোলা হয়েছে আটখান!! বাংলাদেশের জঙ্গি নিকেশ ঘিরে যে কুয়াশাটা দেখি, ভারতেও জঙ্গিদের ঘিরে একই কুয়াশা দেখে চমকে উঠলাম৷ গলদের মিলগুলো দেখে ভেবে বসেছিলাম একমাত্র বাংলাদেশেই সম্ভব কারণ বাংলাদেশেই ‘আকাশ বিকাশ ডন বাধন রিপন' তৈরি হয়৷ আগে উড়ু উড়ু কন্সপিরিসি থিওরি শুনেছিলাম, বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ভারতীয় ইন্টেলিজেন্সের উপস্থিতি আছে৷ এসব মিল দেখে সেসব কন্সপিরিসি থিওরিকে সত্য ভাবা ছাড়া আর কোনো চিন্তা মাথায় আসছে না৷''

সংকলন: জাহিদুল হক

সম্পাদনা: দেবারতি গুহ

বন্ধুরা, বন্দুকযুদ্ধটি কি সত্যিই ‘ভুয়া' ছিল বলে আপনি মনে করেন? জানান আমাদের, লিখুন নীচের ঘরে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য