1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের জোয়ার বাংলাদেশে

হারুন উর রশীদ স্বপন, ঢাকা১৯ আগস্ট ২০১৫

গত দু'দিনে অন্তত পাঁচটি বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড বা ‘ক্রসফায়ারের' ঘটনা ঘটেছে বাংলাদেশে৷ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী একে বলছে ‘বন্দুকযুদ্ধ'৷ মানবাধিকার কর্মীদের ভাষায়, ক্রসফায়ার যেন নতুন গতি পেয়েছে৷ অব্যাহত বিচারহীনতাই এর প্রমাণ৷

https://p.dw.com/p/1GHqu
Opfer des Rapid Action Battalion (RAB) in Bangladesh
ছবি: DW

গত দু'দিনে যাঁরা ক্রসফায়ারে নিহত হয়েছেন, তাঁদের মধ্যে তিনজন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন যুবলীগ এবং ছাত্রলীগের নেতা৷ এ নিয়ে যুবলীগ ও ছাত্রলীগে ক্ষোভ থাকলেও সড়ক যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘‘সরকার কঠোর অবস্থান নিয়েছে, অ্যাকশন শুরু হয়ে গেছে৷''

ওদিকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান কামাল বলেছেন, ‘‘অপরাধী আটক করতে গেলে দু-একটা ক্রসফায়ারের ঘটনা ঘটতেই পারে৷ এতে করার কিছু নাই৷''

বাংলাদেশের মানবাধিকার সংস্থা ‘অধিকার'-এর হিসেব অনুযায়ী, ২০০৪ সাল থেকে চলতি বছরের এপ্রিল পর্যন্ত বাংলাদেশে ১,৬৫৩টি ক্রসফায়ারের ঘটনা ঘটেছে৷ ২০১৪ সালে ক্রসফয়ারে নিহত হয়েছেন ১১৯ জন আর চলতি বছরের প্রথম চার মাসে ৫৯ জন৷

Rapid Action Battalion (RAB) in Bangladesh
২০০৪ সালে র‌্যাব প্রতিষ্ঠার পর থেকেই বাংলাদেশে ক্রসফায়ারের বিষয়টি আলোচনায় আসে...ছবি: DW

আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক)-এর হিসাব অনুয়ায়ী, চলতি বছরের গত সাত মাসে ক্রসফায়ারের ঘটনা ঘটেছে ১১৩টি৷ আসক-এর পরিচালক নূর খান ডয়চে ভেলেকে জানান, ‘‘আন্তর্জাতিক মহলের চাপের কারণে ক্রসফায়ারের ঘটনা কিছু কমে এলেও, সাম্প্রতিক সময়ে তা আবার বেড়েছে৷'' তিনি বলেন, ‘‘দেখে-শুনে মনে হচ্ছে ক্রসফায়ার যেন নতুন গতি পেয়েছে৷''

২০০৪ সালে র‌্যাব প্রতিষ্ঠার পর থেকেই বাংলাদেশে ক্রসফায়ারের বিষয়টি আলোচনায় আসে৷ এখন র‌্যাব ছাড়াও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর অন্যান্য ইউনিটের বিরুদ্ধেও ক্রসফায়ারের অভিযোগ বাড়তে থাকে৷ র‌্যাব-এর ‘বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড' নিয়ে বারবার সরকারকে বিপাকে পড়তে হয়েছে৷ আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলো একাধিকবার র‌্যাব-এর কার্যক্রম বন্ধ অথবা পুনর্গঠনের দাবি জানিয়েছে৷ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রও র‌্যাব-এর এই ধরণের কর্মকাণ্ড বন্ধের কথা বলেছে, তবে তাতে তেমন কাজ হচ্ছে না৷

র‌্যাব-এর অতিরিক্ত মহাপরিচালক কর্নেল জিয়াউল আহসান অবশ্য ডয়চে ভেলের কাছে দাবি করেন, ‘‘এ ধরনের প্রতিটি ঘটনারই তদন্ত হয়৷ এবং কোনো র‌্যাব সদস্যের দায় পাওয়া গেলে তা আমলে নেয়া হয়৷''

মানবাধিকার কর্মী নূর খান বলেন, ‘‘কোনো ক্রসফায়ারই গ্রহণযোগ্য নয়, এমনকি সে যদি মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিও হয়৷ এছাড়া ক্রসফায়ারের এই সব ঘটনা দিয়ে কোনো অপরাধীকে হত্যা করার আইন বা অধিকার আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর নেই৷ তাহলে তো দেশে আর বিচারব্যবস্থা বলে কিছু থাকে না৷''

তিনি বলেন, ‘‘সংবিধান ও মানবাধিকারের এই লঙ্ঘন কোনোভাবেই মেনে নেয়া যায় না৷ প্রতিটি ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত এবং বিচার হওয়া প্রয়োজন৷''

তিনি আরো বলেন, ‘‘বিচারব্যবস্থার ত্রুটিকে ক্রসফায়ার দিয়ে ঢাকা যায় না৷ এতে বিচারহীনতা আরো জেঁকে বসে৷''

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য