জার্মানি, ইংল্যান্ডের বিশ্বকাপ থেকে বিদায়
১০ জুলাই ২০১১বিগত দু'দুটো বিশ্বকাপ জিতেছে জার্মানির প্রমীলা দল৷ শারীরিক ওজন, বলশালীতা কিংবা মাথার উচ্চতায় জাপানি মেয়েরা তো তাদের পাশে দাঁড়াতে পারে না৷
তারপরেও এই অঘটন কেন?
উত্তরটা ঐ ওজন, বলশালীতা এবং উচ্চতাতেই লুকিয়ে আছে৷ পুরুষদের ফুটবলেও দু'ধরনের ঘরানা আছে: আমরা বলতে পারি উত্তরের, অর্থাৎ ইংল্যান্ড-জার্মানি-হল্যান্ডের কায়দার কিছুটা গায়ের জোরি, কিছুটা তোল্লাই বল ফেলে উঁচুতে মাথা ঠেকিয়ে তালেগোলে গোল করার ফুটবল - আর ব্রাজিল কি আজকের স্পেনের কায়দায় দক্ষতা, ক্ষিপ্রতা, শৈলী, ছোট ছোট পাসের কম্বিনেশন আর একক জিনিয়াসের ফুটবল৷ এই দুই ঘরানার মারপিটের একটা আবছা' আভাস পাওয়া গেল ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ফ্রান্সের খেলায় এবং জার্মানির বিরুদ্ধে জাপানের খেলায়৷
জাপানিরা প্রথম নব্বই মিনিটে বিশেষ সুবিধা করতে পারেনি
কিন্তু তাদের পাসিং'এর বুনিয়াদি ক্ষমতাটা পরিষ্কার বোঝা গেছে, যেমন বোঝা গেছে তাদের দৌড়নোর ক্ষমতা আর নাছোড়বান্দা দম৷ সেটাই জার্মান মেয়েদের এমন চমকে দিয়েছে যে, তারা তাদের নিজেদের খেলাটা মোটে দেখাতে পারেনি৷ এলোমেলো যে ক'টা সুযোগ তৈরী হয়েছে, সেগুলো এলোমেলো শট করে কিংবা হেড করে নষ্ট করেছে৷ অপরদিকে জাপানিরা একস্ট্রা টাইমে একবার মাত্র তাদের পাসিং, ছুটে বল ধরা এবং ছোটা অবস্থায় মোড় ঘুরিয়ে শট নেওয়ার ক্ষমতা দেখানোর সুযোগ পেয়েছে৷ তা'তেই খেলার ফল দাঁড়িয়েছে ১-০৷
ইংল্যান্ড ফ্রান্সের কাছে হারল কেন?
ফ্রান্সের মেয়েরা ফুটবল শৈলীতে ইংরেজদের চেয়ে অনেক বেশি সুচতুর, কিন্তু গোল করাটা যেন তাদের সিলেবাসেই নেই৷ বলতে কি, ফ্রান্স হারলেও কিছু বলার ছিল না৷ কিন্তু ইংলিশ কায়দায় ফুটবল খেলে যে প্রমীলা বিশ্বকাপেও এগনো যায় না, সেই মহাসত্যটা ছিল একদিকে৷ অন্যদিকে ফরাসি মেয়েদের বল রিসিভ করা, পাসিং, বল নিয়ে রানিং, এ'সবই যেন কোনো অদৃশ্য জিনেদান জিদানের প্রেরণায়৷ অসম্ভব তুখোড় এ'সব মেয়েরা শুধু নিজেদের খেলা খেলেই ইকোয়ালাইজার পেল৷ এবং পরে ৪-৩'এর পেনাল্টি শুটআউটে তাদের যে নার্ভ দেখলাম, তা'তে বলব, ‘আলে লে ব্লয়'-এর সুদিন আসছে, অন্তত প্রমীলা ফুটবলের ক্ষেত্রে৷
প্রতিবেদন: অরুণ শঙ্কর চৌধুরী
সম্পাদনা: সুপ্রিয় বন্দোপাধ্যায়