চূড়ান্ত লড়াইয়ের দিকে টিগ্রে, উদ্বিগ্ন জাতিসংঘ
২৫ নভেম্বর ২০২০টিগ্রের অন্য সব বড় শহরে টিগ্রে পিপলস লিবারেশন ফ্রন্টের অনুগত বাহিনীকে হারিয়ে দিয়েছে ইথিওপিয়ার সেনা। এখন বাকি কেবল রাজধানী শহর। তাও ঘিরে রেখেছে সেনা। সরকারের দেওয়া চরমসীমা কাটার অপেক্ষা। তারপরেই সেনা ঢুকে পড়বে শহরে, টিপিএলএফের শেষ ঘাঁটি দখল করার জন্য।
ঘটনাক্রম যেদিকে এগোচ্ছে, তাতে উদ্বিগ্ন জাতিসংঘ। তারা বিষয়টি নিয়ে বৈঠকেও বসেছিল। গত তিন সপ্তাহ ধরে সেনা ও টিপিএলএফের লড়াইয়ের ফলে হাজার হাজার মানুষ টিগ্রে ছেড়ে সুদানে চলে গেছেন। বহু মানুষের মৃত্যু হয়েছে। সীমান্তেও অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। জাতিসংঘের আশঙ্কা, এই লড়াইয়ে আন্তর্জাতিক আইন মানা নাও হতে পারে। জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাই কমিশনার বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছেন, কোনো পক্ষই যেন সাধারণ মানুষকে হত্যা না করে। কোনো সংঘাতে সাধারণ মানুষকে মারা আন্তর্জাতিক আইনের বিরোধী।
জাতিসংঘের এই ভয়ের কারম আছে। সেনা কেবল টিগ্রে ঘিরে রাখেনি। প্রচুর কামান নিয়ে পৌঁছেছে। গোলন্দাজ বাহিনীও তৈরি। ফলে চরমসীমা কেটে গেলেই কামান থেকে সমানে গোলা মারা হতে পারে। সে ক্ষেত্রে সাধারণ মানুষ মারা যাবেন। সেটাই জাতিসংঘের চিন্তা আরো বাড়িয়েছে। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের ইথিওপিয়া-বিশেষজ্ঞ ফিসেহা টেকলেও বলেছেন, সরকার যদি কামান, মর্টার ব্যবহার করে, বিমান থেকে বোমা ফেলে, তা হলে প্রচুর সাধারণ মানুষ নিহত হবেন। ডিডাব্লিউকে তিনি বলেছেন, স্কুল, হাসপাতাল, ধর্মস্থান, অত্যাবশ্যকীয় সরবরাহ ও বিনোদনের জায়গাগুলি যেন আক্রমণ করা না হয়।
টিপিএলএফের অনুগত বাহিনী এখন শহরের ভিতরে আছে। তারা কোণঠাসা। তা সত্ত্বেও তারা হার মানতে বা আত্মসমর্পণ করতে নারাজ। টিপিএলএফ বলেছে, রাজধানী শহর সেনা দখল করে নিলেও লড়াই থামবে না। অন্যত্র লড়াই চলবে। আর সরকারের দাবি, এটাই শেষ আক্রমণ। রাজধানী শহর দখল করে নিলে টিগ্রের সংঘাতও শেষ হবে।
তবে মানবাধিকার সংগঠনগুলি বলছে, দক্ষিণ-পশ্চিম টিগ্রেতে সাধারণ মানুষকে মারা হয়েছে। একদল যুবক মাই-কাদরা শহরের দুইটি খামারে পরিযায়ী শ্রমিকদের হত্যা করেছে। তাঁদের অপরাধ, তাঁরা টিগ্রের লোক নন, বহিরাগত। ছুরি, লাঠি, ধারালো অস্ত্র, দড়ি দিয়ে তাঁদের মারা হয়েছে। আগুন লাগানো হয়েছে। সংগঠনগুলির দাবি, এটা মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ এবং ইথিওপিয়ার জঘন্যতম নরহত্যা।
জিএইচ/এসজি(এপি, এএফপি, রয়টার্স)