চুক্তির মাধ্যমেই ব্রেক্সিট কার্যকর করার কথা বলছেন জনসন
১১ সেপ্টেম্বর ২০১৯পাঁচ সপ্তাহের জন্য সংসদ মুলতুবি করে আপাতত ‘পথের কাঁটা' দূর করেছেন বরিস জনসন৷ সব বাধাবিপত্তি সত্ত্বেও তিনি যে কোনো মূল্যে ৩১শে অক্টোবরের মধ্যে ব্রিটেনকে ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বার করে আনতে বদ্ধপরিকর৷ তাঁর মতে, একমাত্র এভাবেই মানুষের আস্থার ভিত্তিতে গণভোটের রায় কার্যকর করা যাবে৷ কিন্তু তাঁর সেই লক্ষ্যের পথে এখনো অনেক বাধা রয়েছে৷
মাত্র পাঁচ দিনের অধিবেশনে ব্রিটিশ সংসদ চুক্তিহীন ব্রেক্সিট এড়াতে আইন প্রণয়ন করেছে৷ বরিস জনসন সংসদের সেই আইন মানবেন কিনা, তা নিয়ে সংশয় দূর হচ্ছে না৷ মঙ্গলবার তিনি নতুন ব্রেক্সিট চুক্তির লক্ষ্যে উদ্যোগ আরও জোরদার করার কথা ঘোষণা করেন৷ জনসন সোমবারও আলোচনায় অগ্রগতির দাবি করলেও ইইউ জানিয়েছে, যে ব্রিটিশ সরকার এখনো কোনো স্পষ্ট ও গ্রহণযোগ্য বিকল্প পেশ করে নি৷
প্রধানমন্ত্রী মঙ্গলবার জোটসঙ্গী উত্তর আয়ারল্যান্ড প্রদেশের ডিইউপি দলের নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করেন৷ আয়ারল্যান্ড ও ব্রিটেনের সীমান্তে ব্যাকস্টপ ব্যবস্থার বিকল্প নিয়ে তাঁদের কথা হয়েছে৷ জনসনের পূর্বসূরী টেরেসা মে ও ইইউ-র মধ্যে প্রাথমিক আলোচনায় শুধু উত্তর আয়ারল্যান্ড প্রদেশকে ইইউ-র সাধারণ বাজারে রেখে দেবার যে প্রস্তাব বিবেচনা করা হচ্ছিল, তার ভিত্তিতে ইইউ-র সঙ্গে সমঝোতার সম্ভাবনা অবশ্য দুই পক্ষই উড়িয়ে দিয়েছে৷ ব্রিটিশ যুক্তরাজ্যের মধ্যে কোনো রকম বিভাজন মানতে তারা প্রস্তুত নয়৷
মঙ্গলবার সরকার ও বিরোধী পক্ষের কয়েকজন সংসদ সদস্য মিলে চুক্তির মাধ্যমে ব্রেক্সিট কার্যকর করার এক উদ্যোগ শুরু করেছেন৷ ইইউ-র সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর আলোচনা ব্যর্থ হলে বর্তমান ব্রেক্সিট চুক্তি সংসদে অনুমোদন করা যায় কিনা, সেই বিষয়টি তাঁরা খতিয়ে দেখছেন৷
প্রশ্ন উঠছে, এই প্রেক্ষাপটে সরকার ও বিরোধী পক্ষের সামনে কোন কোন পথ খোলা রয়েছে? চুক্তিহীন ব্রেক্সিট এড়াতে বিরোধীরা আইন প্রণয়ন করলেও সরকার নানাভাবে সেই আইন উপেক্ষা করার চেষ্টা চালাচ্ছে৷ বোঝাপড়া সম্ভব না হলে আগামী ইইউ শীর্ষ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বরিস জনসন ব্রেক্সিটের সময়সীমা বাড়ানোর আবেদন করতে বাধ্য হবেন৷ কিন্তু তার পূর্বশর্ত হিসেবে ইইউ নির্দিষ্ট কারণ জানতে চাইবে৷ তা না হলে ইইউ সেই আবেদন নাকচ করতে পারে৷ ব্রিটিশ সরকার এভাবেও ৩১শে অক্টোবর ব্রেক্সিট কার্যকর করার চেষ্টা করতে পারে৷ এছাড়া অন্যান্য পথেও এই আইন উপেক্ষা করার বিষয়ে সরকার ভাবনাচিন্তা করছে৷
সংসদে দু-দুবার আগাম নির্বাচনের প্রচেষ্টা ব্যর্থ হলেও বরিস জনসন হাল ছাড়তে প্রস্তুত নন৷ তিনি ভোটারদের কাছে গিয়ে প্রচারের কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন৷ আচমকা পদত্যাগ করে সংসদের জরুরি অধিবেশন ডেকে নির্বাচন আয়োজনের চেষ্টা করতে পারেন তিনি৷ তবে সে ক্ষেত্রে বিরোধীরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে এক জাতীয় ঐক্য সরকার গড়ার চেষ্টা চালাতে পারে৷ ফলে জনসন সেই ঝুঁকি নাও নিতে পারেন৷
এসবি/কেএম (ডিপিএ, এএফপি, রয়টার্স)