1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

‘চীন থেকে বাংলাদেশিদের ফেরায় ঝুঁকি তৈরি হবে না’

সমীর কুমার দে ঢাকা
৩১ জানুয়ারি ২০২০

বিশেষ বিমানে রাতেই চীনের উহান শহর থেকে ঢাকায় ফিরছেন ৩৬১ বাংলাদেশি৷ দুই সপ্তাহ তারা থাকবেন নিবিড় পর্যবেক্ষণে৷ এর ফলে কোন ধরনের ঝুঁকি তৈরি হবে না বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা৷

https://p.dw.com/p/3X6jM
Bangladesch Dhaka Arbeiterinnen kehhren aus Saudi-Arabien zurück
ফাইল ফটোছবি: DW/S. Hossain

চীনের হুবেই প্রদেশ থেকে দেশে আনা হচ্ছে ৩৬১ জন বাংলাদেশিকে৷ সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে শুক্রবার দিবাগত রাত ২টা থেকে ৩টার মধ্যে তাদের ঢাকায় পৌঁছার কথা৷ পরবর্তী ১৪ দিন তাদেরকে নিবিড় পর্যবেক্ষণের জন্য রাখা হবে আশাকোনার হজ্জ ক্যাম্পে স্থাপিত ‘আইসোলেশন ইউনিটে’৷ এরই মধ্যে সেখানে প্রায় সব প্রস্তুতি নিয়ে রাখা হয়েছে৷ সরকারের শীর্ষ ব্যক্তিরা সকাল থেকে সেগুলো তদারক করছেন৷

স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘কয়েকটি মন্ত্রণালয় মিলে ব্যবস্থা করা হয়েছে৷ ৩৬১ জন যে ১৪ দিন হজ্জ ক্যাম্পে থাকবেন সেখানে দিনে ৫ বেলা করে তাদের খাওয়ার ব্যবস্থা করবে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়৷ তাদের দেশে ফিরিয়ে আনাতে নতুন করে কোন ঝুঁকি তৈরী হবে না৷ কারণ এরা তো আক্রান্ত না৷'' তিনি জানান এরপরও কারও মধ্যে যদি করোনা ভাইরাসের উপসর্গ দেখা যায় তাহলে তাকে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হবে৷ সেখানেও প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিয়ে রাখা হয়েছে৷

হাজী ক্যাম্পে যেসব ব্যবস্থা থাকছে

আশকোনা হাজী ক্যাম্পের পরিচালক সাইফুল ইসলাম ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘তিন তলার ৪টি ডরমেটরিতে ৩৬১ জনকে রাখা হবে৷ প্রতিটি ডরমেটরিতে ১০০ জনের থাকার ব্যবস্থা করা হবে৷ সেখানে বিছানা, চাদর, বালিশ, মশারি, মেডিসিন, পানি, লাইট, টয়লেট থাকবে৷ সকাল ও বিকেলের নাস্তাসহ ৫ বেলা খাবারের ব্যবস্থা থাকবে৷ শিশু ও নারীদের জন্যও থাকবে আলাদা খাবার ও থাকার ব্যবস্থা৷''

ডা. আবুল কালাম আজাদ

এদিকে তারা যেন বাইরে বের না হোন সেজন্য তৃতীয় তলার সিড়ির প্রবেশ পথে কলাপসিবল গেইট লাগিয়ে দেওয়া হবে৷ ১৪ দিনের মধ্যে সেখান থেকে কেউ বের হতে পারবেন না৷ তাদেরকে যারা সেবা দেবেন তাদেরকেও বিশেষভাবে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে৷

পরীক্ষা করবে সেনাবাহিনী

চীন ফেরত বাংলাদেশিদের কারো মধ্যে করোনা ভাইরাসের উপসর্গ আছে কিনা তা পরীক্ষা করবেন সেনাবাহিনীর মেডিকেল কোরের সদস্যরা৷ এছাড়া পুরো প্রক্রিয়ার মধ্যে নিরাপত্তার জন্য পুলিশ, সেনাবাহিনী ও বিজিবি থাকবে৷ এছাড়া ইমিগ্রেশনসহ বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিনিধিরাও দায়িত্ব পালন করবেন৷ হজ্জ ক্যাম্পে কেউ অসুস্থ হলে তাকে কুর্মিটোলা হাসপাতাল, সিএমএইচ বা কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে নেওয়া হবে৷

সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর) করোনা ভাইরাসের পুরো বিষয়টি পর্যবেক্ষণ ও নিয়ন্ত্রণ করছে৷ আইইডিসিআর জানায়, চারটি হটলাইনের মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে৷ বিমানবন্দরে চীন থেকে আসা যাত্রীদের একটি কার্ড দেয়া হচ্ছে৷ সেই কার্ডে তাদের করণীয় এবং যোগাযোগের নাম্বার আছে৷ প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘চীন থেকে তাদের ফেরত আনাতে নতুন করে কোন ঝুঁকি তৈরী হবে না৷ তাদের জন্য যে ধরনের ব্যবস্থা করা দরকার আমরা সবই করেছি৷ সেখানে সার্বক্ষণিক চিকিৎসক দল পালাক্রমে দায়িত্ব পালন করবেন৷''

ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা

চীনে বিশেষ বিমান

চীন থেকে ৩৬১ জনকে আনতে বিশেষ বিমানটি শুক্রবার বিকেল ৫টার দিকে ফাকা ছেড়ে গেছে৷ বিমানটিতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও সেনাবাহিনীর ৪ থেকে ৫ জন ডাক্তার আছেন৷ বিমানে থাকবে মাস্ক, গাউন, মেডিসিনসহ বিভিন্ন ব্যবস্থা৷ ঢাকায় আসার পর তাদেরকে বিশেষ ব্যবস্থায় বাসে করে বিমানবন্দর থেকে হজ্জ ক্যাম্পে রাখা হবে৷ সেজন্য একটি কোর টিমও তৈরি করা হয়েছে৷ যার মাধ্যমে কাজটি করা হবে৷

চীনের উহান শহরে থাকা বাংলাদেশিদের মধ্যে যারা আগ্রহী এবং যারা রেজিস্ট্রেশন করেছেন আপাতত তাদেরই আনা হচ্ছে৷ এদের মধ্যে মোট ১৯টি পরিবার রয়েছে যাদের সঙ্গে আছে ২০ শিশু৷

হুবেই প্রদেশের মোট ২২টি শহরে বাংলাদেশের নাগরিকরা থাকেন৷ এরমধ্যে যারা উহানে রয়েছেন আপাতত তাদেরই ফিরিয়ে আনা হচ্চে৷ বাকি শহরগুলোতে থাকা কোনো নাগরিককে এখন দেশে আনা হবে না৷

শুক্রবার সকালে বিমানবন্দরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে মোমেন, স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক এবং দুর্যোগ ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ড. এনামুর রহমান সাংবাদিক সম্মেলনে বলেন, উহান শহরে করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার পর চীন সরকার কাউকেই দেশের বাইরের যাওয়ার অনুমতি দেয়নি৷ পরে বাংলাদেশের ৩৬১ জনকে ফেরত পাঠাতে চায় চীন সরকার৷ এরপরই প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে জরুরিভাবে তাদেরকে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য