ইউক্রেন আবার ইউরোপমুখী
১৩ ডিসেম্বর ২০১৩ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে সহযোগিতা চুক্তি, নাকি রাশিয়ার নেতৃত্বে শুল্ক ইউনিয়নের – এই দুই বিকল্পের মধ্যে একটিকে বেছে নিতে হবে ইউক্রেনকে৷ ইইউ-র সঙ্গে চুক্তি থেকে শেষ মুহূর্তে সরে এসে রাশিয়ার প্রতি আনুগত্য দেখিয়ে আসছিলেন প্রেসিডেন্ট ভিক্টর ইয়ানুকোভিচ৷ কিন্তু ইউক্রেনে সরকারের বিরুদ্ধে লাগাতার প্রতিবাদ-বিক্ষোভের কিছুটা হলেও ফল দেখা যাচ্ছে৷ ইইউ পররাষ্ট্র বিষয়ক কর্মকর্তা ক্যাথরিন অ্যাশটন বৃহস্পতিবার জানিয়েছেন, ইয়ানুকোভিচ ইইউ-র সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর করতে রাজি হয়েছেন৷ তবে এর জন্য কোনো নির্দিষ্ট দিনক্ষণ স্থির হয় নি৷ বৃহস্পতিবার ইউক্রেনের প্রতিনিধিরা আলোচনার জন্য ব্রাসেলস সফর শুরু করেছেন৷
উল্লেখ্য, চুক্তি থেকে ইউক্রেনের সরকার পিছিয়ে এলেও ইইউ আলোচনার পথ খোলা রেখেছিলো৷ ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট অবশ্য চুক্তির পূর্বশর্ত হিসেবে নিজের দেশে কোটি কোটি ইউরো-র বিনিয়োগের জন্য চাপ দিচ্ছেন৷ তাঁর যুক্তি হলো, ইইউ-র সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার পরিণাম হিসেবে রাশিয়ার সঙ্গে বাণিজ্য কমে গেলে তার ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করতে হবে৷ আপাতত দেশকে দেউলিয়া হয়ে যাওয়া থেকে বাঁচাতে তিনি আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল থেকে ঋণের চেষ্টা চালাচ্ছেন৷ জার্মানি অবশ্য এমন পূর্বশর্তের বিরোধিতা করছে৷ অ্যাশটন আলোচনার পথ খোলা রেখেও ইউক্রেনের সরকারের উদ্দেশে অর্থনীতিকে চাঙ্গা করার স্পষ্ট পরিকল্পনা পেশ করার আহ্বান জানিয়েছেন৷
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুটিন অবশ্য ইউক্রেনের উপর থেকে চাপ কমাতে প্রস্তুত নন৷ তিনি আবার স্পষ্ট করে দিয়েছেন, যে ইউক্রেন-কে তিনি শুল্ক ইউনিয়নে দেখতে চান৷ তবে তিনি এক রাজনৈতিক সমাধান দেখতে চান বলে জানিয়েছেন৷
এদিকে মার্কিন প্রশাসন জানিয়েছে, যে ইউক্রেনের সরকার বিক্ষোভকারীদের দমন করতে সেনাবাহিনীকে কাজে না লাগানোর আশ্বাস দিয়েছে৷ দুই দেশের প্রতিরক্ষামন্ত্রীরা টেলিফোনে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেছেন৷
কূটনৈতিক স্তরে কিছু অগ্রগতি সত্ত্বেও বিক্ষোভকারীরা এখনই পিছিয়ে আসতে প্রস্তুত নয়৷ সরকারের তরফ থেকে আলোচনার প্রস্তাব সত্ত্বেও বিরোধী নেতা ভিটালি ক্লিচকো আগামী কয়েক দিনেও আরও বেশি মানুষকে দলে দলে বিক্ষোভে যোগ দেবার আহ্বান জানিয়েছেন৷ উল্লেখ্য, অ্যামেরিকা ইউক্রেনের উপর নিষেধাজ্ঞা চাপানোর বিষয়ে ভাবনা-চিন্তা করছে৷
এসবি / জেডএইচ (রয়টার্স, ডিপিএ, এপি)