কী না মেলে অনলাইনে!
১৫ মে ২০১৭গোপন জিনিস ডটকম নামক সাইটটিতে বিক্রি হয় নারীর অন্তর্বাস, ঘুমের পোশাক, এমনকি কনডমও৷ অনলাইন অর্ডার দিলে কাঙ্খিত গন্তব্যে পৌঁছে যায় পণ্য৷ সাইটটি দেখলেই বোঝা যায় পুরোপুরি প্রফেশনাল এক টিম রয়েছে এর পেছনে৷ তাদের ফেসবুক পাতায় পরিচিতদের মধ্যে যারা লাইক দিয়েছেন তাদের দেখে বুঝলাম বড় মাপের উদ্যোক্তারা রয়েছেন এর পেছনে৷
আমাদের সমাজে মেয়েদের ‘গোপন জিনিস' হিসেবে বিবেচিত পণ্যগুলো অনলাইনে বিক্রির আইডিয়াটা কিন্তু মন্দ নয়৷ এতে বরং অনেকের ঝামেলা কমেছে, বিশেষ করে কর্মজীবী নারীরা কাজের ফাঁকেই অর্ডার দিয়ে দিতে পারছেন তাদের পছন্দের অর্ন্তবাস৷ কিংবা যে নারী গাউসিয়া মার্কেটে গিয়ে পুরুষ ক্রেতার কাছে অন্তর্বাস চাওয়া বিব্রতকর মনে করতেন তার বিব্রত হওয়ার দিন৷
গোপন জিনিস ডটকম বাংলাদেশে ক্রমবর্ধমান অনলাইন বেচাবিক্রির এক উদাহরণমাত্র৷ ১৬ কোটি মানুষের দেশটিতে এখন বলতে গেলে অনেককিছুই পাওয়া যাচ্ছে অনলাইনে৷ ফেসবুক বন্ধুদের দেখি মাঝেমাঝেই বিভিন্ন পণ্য অনলাইনে কেনার অভিজ্ঞতা শেয়ার করতে৷ আজ একজন লিখছেন খাবার অর্ডার করার আধাঘণ্টার মধ্যে হাজির হয়েছে তা৷ আরেকদিন আরেকজন লিখছেন কাঙ্খিত পণ্য যথাসময়ে পৌঁছায়নি তাঁর কাছে৷ ঢাকাবাসী আমার ছোটভাই আবার পেয়াজ, রসুন, মসলাও কেনেন অনলাইনে৷ তাতে নাকি সময় বাঁচে, দামও বেশি নয়৷
বাংলাদেশের অনলাইন মার্কেটে সম্ভাবনার কথা কয়েকদিন আগে জেনেছিলেন মালিহা কাদিরের কাছ থেকে৷ সম্প্রতি ‘ইয়াং গ্লোবাল লিডার' স্বীকৃতি পাওয়া এই উদ্যোক্তা বাংলাদেশে ‘সহজ ডটকম' নামের একটি অনলাইন পোর্টালের প্রধান৷ তাঁর ওয়েবসাইট থেকে বাস, লঞ্চ ও ফেরির টিকিট বিক্রি হয়৷ ডয়চে ভেলেকে তিনি পরিষ্কারই জানিয়েছেন, বাংলাদেশে ইকমার্সের সম্ভাবনা অনেক৷ তবে একটু সময় লাগবে৷
পশ্চিমা বিশ্ব, এমনকি পাশের দেশ ভারতও যেভাবে অনলাইন বেচাবিক্রিতে এগিয়ে যাচ্ছে সে তুলনায় বাংলাদেশ কিছুটা পিছিয়ে আছে বৈকি৷ আর এই পেছানোর পেছনে সরকারের ধীরগতিও কিছুটা কাজ করছে বলে আমি মনে করি৷ ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ' গড়তে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ সরকার এখনো অনলাইনে বেচাবিক্রির পথ সহজ করতে পারেনি৷ পেপ্যালের মতো অর্থ প্রদানের যেসব সেবা অনলাইনে কেনাবেচার পথ সহজ করে দেয়, সেসব এখনো চালু হয়নি বাংলাদেশে৷ সরকারের এক্ষেত্রে আরো উদ্যোগের প্রয়োজন রয়েছে৷
আর সততাও এক বড় প্রশ্ন৷ এই তো কিছুদিন আগে একবন্ধু জানালেন, অনলাইনে একটি পণ্য অর্ডার করার পর বিক্রেতা প্রতিষ্ঠানের তরফ থেকে ফোনে নাকি একজন জানালেন, অনলাইন অর্ডারটা বাতিল করে সরাসরি তাদের থেকে কিনলে নাকি একই পণ্য ৩০ শতাংশ ডিসকাউন্টসহ একদিন আগেই ডেলিভারি করা হবে৷ এরকম প্রতারণা অনলাইন শপের উপর থাকা ক্রেতার বিশ্বাসে চিড় ধরাতে পারে৷ তাই সততা এবং প্রতারণা ঠেকাতে নজরদারিও জরুরি হবে অনলাইন মার্কেটকে নিরাপদে সম্প্রসারণের সুযোগ দিতে৷
আপনার কি কিছু বলার আছে? লিখুন নীচের মন্তব্যের ঘরে৷