গালিচা-কেলেঙ্কারি
৯ জুন ২০১২‘রথ দেখা আর কলা বেচা' একসঙ্গে সারতে কে না চায়! জার্মানির উন্নয়ন সাহায্য মন্ত্রী ডির্ক নিবেল'ও এমনটাই ভেবেছিলেন৷ প্রায়ই আফগানিস্তান যেতে হয়৷ কিন্তু কাজের ব্যস্ততার কারণে অন্য কিছু হয়ে ওঠে না৷ যাই হোক, এবার তিনি কিছু কেনাকাটা করেছেন৷ বাজারে না গেলেও মার্চ মাসে জার্মান দূতাবাসে এক কার্পেটওয়ালাকে ডেকে পছন্দের একটি গালিচা কিনেছেন৷ লাল-কালো রঙের সেই কার্পেট বিশাল, আয়তন প্রায় ৯ বর্গ মিটার৷ দাম প্রায় ১,৪০০ মার্কিন ডলার৷
তা মন্ত্রী নিজের পয়সায় কার্পেট কিনেছেন, তাতে আপত্তি কীই বা থাকতে পারে! কিন্তু সমস্যা হলো, শুধু কিনলেই তো হবে না, এমন পেল্লাই জিনিসটাকে দেশেও তো নিয়ে যেতে হবে৷ সঙ্গে নেওয়া কঠিন৷ তাই সেটিকে কাবুলেই রেখে গিয়েছিলেন৷ কয়েকদিন পর জার্মান গোয়েন্দা সংস্থা বিএনডি'র প্রেসিডেন্ট গেয়ারহার্ড শিন্ডলার কাবুল থেকে ফেরার সময় বিশেষ বিমানে সেই কার্পেট বার্লিনে নিয়ে আসেন৷ বিমানবন্দর থেকে এক চালক সেই কার্পেট নিবেল'এর বাড়িতে পৌঁছে দেন৷ শুল্ক বিভাগ'কে আর জানানো হয় নি গালিচার দাম কত, বা তা আমদানির জন্য শুল্ক মাশুল দিতে হতো কি না৷ বিএনডি'র পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, সরকারি উপহার ভেবেই তাদের বিমানে গালিচাটি নিয়ে আসা হয়েছিল৷
বিষয়টা এবার জানাজানি হয়ে যাওয়ার ফলে চারিদিকে সমালোচনার ঝড় উঠেছে৷ মন্ত্রী নিবেল দোষ স্বীকারও করে নিয়েছেন৷ তাঁর মুখপাত্র ঘটনাটি সম্পর্কে খুঁটিনাটি তথ্য সাংবাদিকদের সামনে তুলে ধরেছেন৷ মন্ত্রী বলেছেন, শুল্ক বিভাগের কোনো পাওনা থাকলে তিনি সেই অর্থ নিজের পকেট থেকে মিটিয়ে দেবেন৷ জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল তাঁর মুখপাত্রের মাধ্যমে জানিয়েছেন, উন্নয়ন সাহায্য মন্ত্রীর প্রতি তাঁর আস্থা রয়েছে৷ মন্ত্রী যা করণীয়, তা অবশ্যই করবেন৷
রাজনৈতিক আঙিনা এখনো উত্তপ্ত৷ বিরোধীরা এমন বিতর্কের খোরাক পেয়ে খোঁচা মারার সুযোগ ছাড়ছে না৷ বলছে, ‘এ আর নতুন কথা কী! নিবেল'এর উদারপন্থী এফডিপি দলে কর বা শুল্ক ফাঁকি দেওয়ার একটা ঐতিহ্য রয়েছে৷' তাছাড়া নিবেল স্বয়ং যেভাবে অতীতে অন্যের সামান্য ত্রুটি ধরতে বেশ কিছু কড়া পদক্ষেপ নিয়েছেন, তার আলোকে এই ‘গালিচা-কেলেঙ্কারি' অন্য মাত্রা পেয়েছে৷
প্রতিবেদন: সঞ্জীব বর্মন (ইপিডি, রয়টার্স)
সম্পাদনা: সুপ্রিয় বন্দ্যোপাধ্যায়