গণধর্ষণের প্রতিবাদ
২১ ডিসেম্বর ২০১২দিল্লির হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন ২৩ বছরের ধর্ষিতা তরুণী৷ তাঁর অবস্থার তেমন কোনো উন্নতি হয়নি৷ পাঁচবার অপারেশন হয়৷ ঐ তরুণীর প্রতি ন্যায়বিচারের দাবিতে ফেটে পড়ে যুব সম্প্রদায়, ছাত্র ও মহিলা সংগঠনের নেতা কর্মীরা৷ কয়েক হাজার প্রতিবাদী মানুষের মিছিল ইন্ডিয়া গেট থেকে রাজপথ হয়ে রাষ্ট্রপতি ভবন পর্যন্ত যায়৷ রাষ্ট্রপতি ভবনের নিরাপত্তা বেড়া ভেঙে ঢুকে পড়ে ভেতরে৷
দিল্লি ও অন্যত্র মহিলাদের নিরাপত্তা ও ধর্ষিতা তরুণীর প্রতি ন্যায়বিচারের দাবি উঠে এসেছে তাঁদের স্লোগানে৷ যাতে অংশ নেয় গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতি, ইয়াং উইমেন্স খ্রিষ্চান অ্যাসোসিয়েশনস, জহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ইউনিয়নসহ একাধিক সংগঠন৷
জেএনইউ বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টুডেন্ট ইউনিয়নের প্রেসিডেন্ট সুচেতা দে ডয়চে ভেলেকে তাঁর প্রতিক্রিয়ায় জানান, ‘‘সরকারের তরফ থেকেও আমরা সংবেদনশীলতার প্রচণ্ড অভাব দেখি৷ মুখ্যমন্ত্রী থেকে মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সনের বক্তব্যে, শোনা যায় যে, নিরাপত্তার দায়িত্ব নাকি মহিলাদের নিজেদের৷ পুরো সমাজের মধ্যে লিঙ্গ বৈষম্য এবং স্পর্শকাতরতার যে অভাব রয়েছে এটা তারই প্রতিফলন৷ জেন্ডার সেনজেটাইজেশনের বিষয়ে আরো সিরিয়াস হতে হবে৷'' এছাড়াও বিচারবিভাগের সমালোচনা করে তিনি বলেন, বিচার বিভাগেরও এ বিষয়ে দায়িত্ব আছে৷ ধর্ষণের ঘটনায় মাত্র ৩০ শতাংশের শাস্তি হয়৷ তাই ‘ফাস্ট ট্র্যাক কোর্ট' গঠন করে দ্রুত বিচারের ব্যবস্থা করতে হবে৷
অনুরূপ প্রতিবাদ মিছিল বের করা হয় ভোপাল, লক্ষৌ, পাটনা ও কলকাতায়৷ যাতে যোগ দেয় অসংখ্য মানুষ৷ কালো পতাকা ও ফুটপাতে মোমবাতি জ্বালিয়ে ধর্ষিতার দ্রুত আরোগ্য কামনা করা হয়৷
এক সমীক্ষায় জানা গেছে, দিল্লিতে গড়ে মাসে ধর্ষিতা ও নিগৃহীতা হন ৫৬ জন মহিলা৷ পাশাপাশি, রাজনৈতিক দলগুলির নৈতিক দ্বিচারিতা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে৷ গত পাঁচ বছরে সংসদীয় নির্বাচনে এমন ছয়জনকে এবং বিধানসভা নির্বাচনে এমন ২৮ জনকে মনোনয়ন দেয়া হয় , যাঁদের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ আছে এবং আদালতে সে বিষয়ে তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা চলছে৷