ক্ষমা চাইলেন বেলারুশের মন্ত্রী
১৪ আগস্ট ২০২০বিক্ষোভকারীদের উপর যে ভাবে পুলিশি নির্যাতন চলেছে, তার জন্য ক্ষমা চেয়ে নিলেন বেলারুশের অভ্যন্তরীণ মন্ত্রী। বৃহস্পতিবার সংবাদমাধ্যমকে ডেকে তিনি জানিয়েছিলেন, শুক্রবার ভোর ছয়টার মধ্যে সমস্ত বিক্ষোভকারীকে মুক্তি দেওয়া হবে। শুক্রবার ভোরে তাঁদের ছেড়েও দেওয়া হয়। বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, ইউরোপীয় ইউনিয়নের বিভিন্ন দেশের চাপেই ক্ষমা চাইতে বাধ্য হলো বেলারুশের সরকার।
বেলারুশে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন ঘিরে তুলকালাম কাণ্ড হয়েছে গত এক সপ্তাহ ধরে। নির্বাচনের আগেই সেখানে সরকার বিরোধী বহু ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়। যার মধ্যে ছিলেন ডয়চে ভেলের এক সাংবাদিকও। ভোট শেষ হওয়ার পরে বিক্ষোভ আরও ব্যাপক চেহারা নেয়। রাস্তায় নেমে পড়েন নারীরাও। তাঁদের একটাই দাবি, যে প্রক্রিয়ায় নির্বাচন হয়েছে, তাঁরা তা মানেন না। তাঁদের অভিযোগ, নির্বাচনের নামে ভোট লুঠ হয়েছে। বিরোধীদের বিনা প্ররোচনায় জেলে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে। দেশ জুড়ে এই বিক্ষোভ শক্ত হাতে মোকাবিলা করেছে পুলিশ। কোথাও ছোড়া হয়েছে রবার বুলেট। কোথাও জল কামান দেগে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করা হয়েছে। পুলিশের সঙ্গে খণ্ডযুদ্ধে অন্তত দুই জন প্রতিবাদীর মৃত্যুর খবরও মিলেছে।
এখানেই শেষ নয়। গত কয়েক দিনে প্রায় সাত হাজার ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। অভিযোগ, জেলে তাঁদের উপর অকথ্য অত্যাচার চালিয়েছে পুলিশ। যা নিয়ে সরব হয়েছে বিভিন্ন অধিকার সংস্থা। তাদের বক্তব্য, পুলিশের অত্যাচারেই জেলে মৃত্যু হয়েছে এক বিক্ষোভকারীর। সরকার অবশ্য তা মানতে চায়নি।
বেলারুশে পুলিশ যে তাণ্ডব চালিয়েছে তার বিরোধিতা করেছে ইউরোপের বিভিন্ন দেশ। জার্মানি সহ বেশ কয়েকটি দেশ এর তীব্র নিন্দা করে সরকারকে শান্তির পথে ফেরার আহ্বান জানিয়েছে। ফ্রান্স বিষয়টিতে মধ্যস্থতা করতে চেয়েছে। পোল্যান্ড, সার্বিয়ার মতো দেশ বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে সরকারের আলোচনায় বসা উচিত বলে মত প্রকাশ করেছে। এই পরিস্থিতিতে বিষয়টি যে হাতের বাইরে চলে যাচ্ছে তা বুঝতে পারে বেলারুশের সরকার। ফলে ক্ষমা চেয়ে দ্রুত সমাধানের রাস্তা তৈরি করা হয়েছে। কিন্তু ক্ষমা চেয়ে কিংবা বন্দিদের মুক্তি দিয়ে বিক্ষোভ থামানো যাবে কিনা, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। বিশেষজ্ঞদের একাংশের বক্তব্য, বিক্ষোভকারীরা হার না মানার জায়গায় পৌঁছে গিয়েছেন। ফলে আগামী কিছুদিন রাজপথ সরগরম থাকবে বলেই তাঁদের অভিমত।
এসজি/জিএইচ (রয়টার্স, ডিপিএ)