1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ক্রিকেট-যুদ্ধে ভারতকে গুঁড়িয়ে দিল পাকিস্তান

২৫ অক্টোবর ২০২১

বিশ্বকাপের আসরে এই প্রথম ভারতকে হারালো পাকিস্তান। তাও দশ উইকেটে। বিরাট কোহলির ভারতের দর্পচূর্ণ হলো।

https://p.dw.com/p/428FB
কোহলি পারলেন না, বাবর আজম পারলেন।

দীর্ঘদিন পর ভারত-পাকিস্তানের এই ক্রিকেট যুদ্ধে সুনীল গভাস্কার, সেলিম মালিক, ইনজামাম উল হক সহ অনেক সাবেক ক্রিকেটার ও বিশেষজ্ঞ বিরাট কোহলিদের এগিয়ে রেখেছিলেন। আইপিএলে খেলে আমিরাতের উইকেটের সঙ্গে পরিচিত ভারতীয় খেলোয়াড়রা। ফর্মে ব্যাটার এবং বোলাররা। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আসরে কখনো না হারা-- এসবই কোহলিদের এগিয়ে রেখেছে বলে মনে করা হয়েছিল। কিন্তু রোববার টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ভারত ও পাকিস্তানের ম্যাচে দেখা গেল অন্য ছবি। উজ্জীবীত পাকিস্তান ও ভারতের অসহায় আত্মসমর্পনের ছবি।

ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ হলে দুই দলই উজ্জীবীত থাকে। পাকিস্তনকে দেখে সেটাই মনে হয়েছে। শাহিন আফ্রিদিরা টগবগ করে ফুটছিলেন। আর ভারতীয় ক্রিকেটাররা ছিলেন ম্রিয়মান। মাঠে তাদের তেজ, উদ্দীপনা সবকিছুই কম মনে হয়েছে। শাহিন আফ্রিদি ম্যান অফ দ্য ম্যাচ হয়েছেন। অসাধারণ বল করেছেন এই পাকিস্তানি পেসার। প্রথম দুই ওভারে রোহিত শর্মা ও কে এল রাহুলকে আউট করেছেন। শেষের দিকে বিরাট কোহলিকেও তিনি তুলে নেন। ভারতের ব্যাটিংকে শুরুতেই ভেঙে দেন আফ্রিদি। তবে শুধু তিনি নন, হাসান আলি দুইটি উইকেট নিয়েছেন, শাদাব খান একটি ও রউফ একটি উইকেট পেয়েছেন।

আর বুমরা, শামি, ভুবনেশ্বর, বরুণ চক্রবর্তী, জাদেজারা একটি উইকেটও পাননি। এটা ঠিক, পরের দিকে মাঠে শিশির ছিল। বল গ্রিপ করতে অসুবিধা হচ্ছিল। কিন্তু তাই বলে উইকেট নেয়ার মতো একটা বলও করতে পারলেন না তারা?

ভারতের হারের কারণ

বিশেষজ্ঞদের মতে, ভারতের হারের একাধিক কারণ আছে। প্রথম কারণ, টস হারা। আমিরাতের মাঠে রাতের খেলায় যারা টস জেতে তারা এগিয়ে থাকে। কারণ, পরের দিকে শিশিরের জন্য বল গ্রিপ করতে অসুবিধা হয়। ভারতের ক্ষেত্রে তাই হয়েছে। বুমরা, শামি, ভূবনেশ্বরদের বল গ্রিপ করতে অসুবিধা হয়েছে। মাঠে প্রথম থেকেই তারা চাপে থেকেছে। প্রথম বল থেকে পাকিস্তান ভারতের উপর সেই চাপ তৈরি করতে পেরেছে। কোচ শাস্ত্রী, মেন্টর ধোনি তাহলে করলেন কী?

টিমে প্লেয়ার বাছাই নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। পান্ডিয়ার চোট। বল করতে পারবেন না। প্রশ্ন উঠেছে, তা সত্ত্বেও তাকে কেন টিমে নেয়া হলো? রাহুল চাহার কেন বাদ পড়লেন? অশ্বিনকে দলে নেয়া হয়েছে কি বসিয়ে রাখার জন্য? হারের অন্যতম কারণ হলো ভারতীয় ব্যাটারদের ব্যর্থতা। কোহলি ও কিছুটা ঋষভ পন্থ রান পেয়েছেন। কিন্তু পাকিস্তানের মতো প্রতিপক্ষকে হারাবার জন্য যে দ্রুত রান তোলার দরকার ছিল, তা হয়নি। রোহিত শর্মা তাও ভালো বলে আউট হয়েছেন। কিন্তু কে এল রাহুল, সূর্যকুমার যাদবদের ক্ষেত্রে তা বলা যাবে না।

কোহলি যা বললেন

হারের পর কোহলি স্বীকার করেছেন, পাকিস্তান তাদের সব বিভাগেই হারিয়ে দিয়েছে। তার ব্যাখ্যা, ''আমরা আমাদের পরিকল্পনা মতো খেলতে পারিনি। প্রথমেই তিন উইকেট খোয়াতে হলে কাজটা খুবই কঠিন হয়ে পড়ে। পরের দিকে শিশির পড়বে সেটা আমাদের জানা ছিল। পাকিস্তান ব্যাটাররা পেশাদারের মতো খেলল। ওরা যত সহজে খেলেছে, এই পিচে খেলাটা অতটা সহজ নয়। আমাদের আরো  ২০ রান দরকার ছিল।''

কোহলি বলেছেন, এখনই আতঙ্কিত হওয়ার কোনো কারণ নেই। প্রতিযোগিতা শুরু হলো, শেষ নয়। তবে আমিরাতের উইকেটে টস একটা বড় ফ্যাক্টর হতে চলেছে বলে কোহলি মনে করেন।

বাবর যা বলেছেন

একেবারে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়ে ম্যাচের শেষে বাবর আজম বলেছেন,  ''আমরা পরিকল্পনা খুবই ভালোভাবে রূপায়ণ করেছি। প্রথম দিকে উইকেট পেয়ে যাওয়ায় ম্যাচ ঘুরে যায়। শাহিনের নেওয়া দুই উইকেট আমাদের বাড়তি আত্মবিশ্বাস দেয়। স্পিনাররা খুব ভাল বল করেছে।''

পাক অধিনায়ক জানিয়েছেন, ''আমরা নিজেদের দক্ষতা অনুযায়ী খেলতে চেয়েছি। আমরা জানতাম, পরের দিকে খেললে আট ওভারের পর থেকে শিশির বোলারদের সমস্যায় ফেলবে। তখন বল ব্যাটে আসবে। আমরা এই ছন্দটা ধরে রাখতে চাই।''

বাবরের দাবি, এটা নতুন পাকিস্তান টিম। প্রবল আত্মবিশ্বাসী। সকলেই জানেন, তাদের কী করতে হবে।

দলের জয়ে খুশি আফ্রিদি

ম্যান অফ দ্য ম্যাচ শাহিন আফ্রিদি বলেছেন, ''এই প্রথম ভারতকে বিশ্বকাপে হারালো পকিস্তান। আমরা গর্বিত। জানতাম যে শুরুতেই উইকেট নিতে হবে। আমি যতটা সম্ভব সুইং করাতে চেয়েছিলাম। সেটা পেরেছি বলে ভালো লাগছে। বোলিংয়ে পুরো একশ শতাংশ দিয়েছি।''

জিএইচ/এসজি(পিটিআই, এএনআই)