করোনা সংকটে চ্যালেঞ্জের মুখে ইউরোপের ঐক্য
৭ এপ্রিল ২০২০করোনা সংকটের কারণে গোটা বিশ্বে মানবজাতি কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে, এ বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই৷ ভাইরাস মোকাবিলার পাশাপাশি সংকটের কারণে বিধ্বস্ত অর্থনীতি চাঙ্গা করার বিষয়টিও গুরুত্ব পাচ্ছে৷ প্রায় সব দেশই সাধ্যমতো প্রণোদনা ইত্যাদি পদক্ষেপের মাধ্যমে সাধারণ মানুষ ও ব্যবসা-বাণিজ্য প্রতিষ্ঠানের ক্ষতি কমানোর চেষ্টা করছে৷
এমন প্রেক্ষাপটে উভয় সংকটে পড়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন৷ রাষ্ট্রজোট হিসেবে পারস্পরিক সংহতির ভিত্তিতে গভীর সহযোগিতাই ইইউ-র মৌলিক বৈশিষ্ট্য৷ এ পর্যন্ত একাধিক চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করতে ইইউ সমষ্টিগতভাবে সমাধানসূত্র খুঁজে এসেছে৷ করোনা সংকটের মুখেও অর্থনৈতিক বিপর্যয় এড়াতে নীতিগতভাবে ঐক্যের সুর শোনা যাচ্ছে৷ কিন্তু সহযোগিতার পথ নিয়ে চরম মতপার্থক্য দেখা যাচ্ছে৷
ইটালি ও স্পেনের মতো দেশ বাজারে ‘করোনা বন্ড' ছেড়ে সংগৃহিত অর্থ দিয়ে ইউরোপে মন্দা মোকাবিলার পক্ষে সওয়াল করছে৷ অন্যদিকে জার্মানি, নেদারল্যান্ডস ও অস্ট্রিয়ার মতো দেশ বিপর্যয় মোকাবিলার দায় মূলত জাতীয় স্তরেই সীমাবদ্ধ রাখার পক্ষে৷ ‘করোনা বন্ড'-এর বদলে ইউরোপীয় স্তরে সাধারণ সংকট মেটানোর যে সব সুযোগ আছে, সেগুলিরই সদ্ব্যবহার করার পক্ষে সওয়াল করছে তারা৷ নতুন বন্ডের মাধ্যমে ইটালির মতো দেশের বিশাল ঋণভারের ভাগীদার হতে চায় না এ সব দেশ৷ উল্লেখ্য, অতীতেও বিশেষ করে দক্ষিণের দেশগুলির ঋণভারের দায় নিয়ে এমন বিরোধ দেখা গেছে৷ ‘করোনা বন্ড’-এর প্রবক্তারা সেই আশঙ্কা দূর করতে এই তহবিল সাময়িক রাখার ও শুধুমাত্র করোনা সংকট মোকাবিলার জন্য সীমাবদ্ধ রাখার প্রস্তাব দিয়েছেন৷
ইউরো এলাকার অর্থমন্ত্রীদের বৈঠকের আগে এমন বিরোধ দানা বাঁধছে৷ ইউরোগ্রুপের প্রধান মারিও চেন্তেনো জানিয়েছেন, আপাতত প্রায় ৫০ হাজার কোটি ইউরো মূল্যের এক ‘সেফটি নেট' তহবিলের বিষয়ে ঐকমত্যের চেষ্টা চলছে৷ এমন পদক্ষেপের প্রশ্নে তেমন কোনো মতবিরোধ হবে না বলে মনে করা হচ্ছে৷ ইউরো এলাকার বেলআউট তহবিল কাজে লাগিয়েই সেই ‘সেফটি নেট'-এর ব্যবস্থা করার কথা চলছে৷ কোনো দেশ নিজস্ব ক্ষমতায় বাজার থেকে অর্থ সংগ্রহ করতে ব্যর্থ হলে এই কাঠামোর সহায়তা নিতে পারবে৷ এছাড়া ইউরোপীয় বিনিয়োগ ব্যাংকের এক গ্যারেন্টি তহবিল গঠনের বিষয়েও আলোচনা চলছে৷
ইউরোপের মানুষ কীভাবে এই উদ্যোগের সুফল পাবেন? চরম বেকারত্ব এড়াতে বিপর্যস্ত কোম্পানিগুলির শ্রমিক ও কর্মীদের মজুরি বা বেতন দেওয়ার চেষ্টা চলছে৷ কর্মসংস্থান ও করের ক্ষেত্রে ছাড়ের বিষয়ে আলোচনা চলছে৷
এসবি/কেএম (ডিপিএ, এএফপি)
২০ মার্চের ছবিঘর দেখুন...