করোনা মোকাবিলায় পদক্ষেপে সন্তুষ্ট নন ম্যার্কেল
১৫ অক্টোবর ২০২০করোনা সংকট শুরু হওয়ার পর থেকে জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল ও ১৬টি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীরা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বার বার শলাপরামর্শ করে সম্মিলিত পদক্ষেপ নেবার চেষ্টা করেছেন৷ জার্মানিতে সংক্রমণের হার দ্রুত বেড়ে চলায় বুধবার এই প্রথম বার্লিনে চ্যান্সেলর দফতরে তাঁরা মুখোমুখি হলেন৷ ফেডারেল ও রাজ্য পর্যায়ে মতপার্থক্য দূর করে গোটা দেশের জন্য স্পষ্ট নীতিমালা স্থির করাই ছিল তাঁদের উদ্দেশ্য৷ এর মাধ্যমে বিধিনিয়ম মানুষের কাছে আরো গ্রহণযোগ্য হবে বলে বিশেষজ্ঞরা বার বার জোর দিচ্ছেন৷ সেই প্রচেষ্টা আংশিকভাবে সফল হয়েছে৷ অনেক বিষয়ে মতপার্থক্য থেকে গেছে৷ ম্যার্কেল নিজে আরো কড়া পদক্ষেপ চালু করার পক্ষে থাকলেও সব বিষয়ে ঐকমত্য অর্জন করা সম্ভব হয় নি৷ বিশেষ করে মাস্ক পরার আরও কড়া নিয়ম এবং হোটেল-রেস্তোরাঁ সাময়িকভাবে বন্ধ রাখার প্রস্তাবে অনেকেই সায় দেননি৷
আপাতত গোটা দেশের জন্য নির্দিষ্ট ফর্মুলা অনুযায়ী পদক্ষেপ নেবার বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছেছেন উপস্থিত নেতারা৷ এর আওতায় প্রতি এক লাখ মানুষের মধ্যে ৩৫ বা ৫০ জনের সংক্রমণের প্রবণতা দেখা দিলেই যে কোনো এলাকায় বেশ কিছু কড়াকড়ি চালু হবে৷ পানশালায় রাতে কার্ফিউ ও ব্যক্তিগত পর্যায়ে পার্টির ক্ষেত্রে কড়া নিয়ম মেনে চলতে হবে৷
দীর্ঘ আলোচনার শেষে বুধবার রাতে ম্যার্কেল বলেন, আগামী কয়েক দিন ও সপ্তাহে কী করা হয়, তার উপর এই মহামারির প্রভাব নির্ভর করবে৷ কড়া বিধিনিয়ম সত্ত্বেও সংক্রমণের হার বাড়তে থাকলে আরও পদক্ষেপের ইঙ্গিত দেন তিনি৷ আবার ঢালাও লকডাউন ও তার পরিণতি হিসেবে অর্থনীতির ব্যাপক ক্ষতি এড়ানো অত্যন্ত জরুরি, বলেন ম্যার্কেল৷ তিনি স্বীকার করেন, নতুন পদক্ষেপ সত্ত্বেও তাঁর অস্বস্তি কাটছে না৷ সংবাদ সংস্থা ডিপিএ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক উপস্থিত ব্যক্তিদের উদ্ধৃত করে জানিয়েছে, যে ম্যার্কেল মুখ্যমন্ত্রীদের উদ্দেশ্যে অবিলম্বে সাহসি পদক্ষেপ নেবার ডাক দিয়েছিলেন৷ চলতি বছরের বসন্ত কালে প্রতি সপ্তাহে আলোচনা করে ধীরে ধীরে পদক্ষেপ নিয়ে পরিস্থিতির যে দ্রুত উন্নতি হয় নি, সেই বিষয়টি মনে করে দিয়েছিলেন তিনি৷ চ্যান্সেলর ম্যার্কেল বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মের উদ্দেশ্যে সংক্রমণ রোখার কাজে অবদান রাখার ডাক দেন৷ তিনি বলেন, উজ্জ্বল ভবিষ্যতের স্বার্থে এই মুহূর্তে কম পার্টি করা উচিত৷
রবার্ট কখ ইনস্টিটিউটের হিসেব অনুযায়ী জার্মানিতে দৈনিক করোনা সংক্রমণের হার রেকর্ড মাত্রা ছুঁয়েছে৷ একই দিনে ৬,৬৩৮ জন আক্রান্ত হওয়ায় গভীর দুশ্চিন্তা প্রকাশ করছেন বিশেষজ্ঞরা৷ তাঁদের আশঙ্কা, শীতের মাসগুলিতে পরিস্থিতির আরো অবনতি ঘটলে হাসপাতালে চিকিৎসা থেকে শুরু করে যথেষ্ট পরীক্ষা ও ‘কনট্যাক্ট ট্রেসিং' বা আক্রান্তদের সংস্পর্শে আসা মানুষদের সতর্ক করার অবকাঠামো ব্যাপক চাপের মুখে পড়বে৷
বাভেরিয়া রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মার্কুস স্যোডার ম্যার্কেলের অবস্থানের প্রতি জোরালো সমর্থন জানিয়েছেন৷ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে তিনিও দ্রুত ও কড়া পদক্ষেপের পক্ষে সওয়াল করেছেন৷ দশ দিন পর আবার আলোচনার পর নতুন পদক্ষেপের ইঙ্গিত দেন তিনি৷
এসবি/এসিবি (রয়টার্স, ডিপিএ)