করোনার ফলে অভুক্ত ১৩ কোটি
১৪ জুলাই ২০২০এমনিতেই বিশ্বে ২০০ কোটি লোকের খাদ্য সুরক্ষা নেই। ৭৪ কোটি মানুষ ঠিকভাবে খাবারপান না। খিদে নিয়ে শুতে যান। করোনা এই পরিস্থিতিকে আরও খারাপ করেছে। জাতি সংঘের রিপোর্ট বলছে, করোনার জন্য এই বছরের শেষে আরও ১৩ কোটি লোক ক্ষুধার মুখে পড়বেন। তাঁদের এই অবস্থা অনেক দিন ধরে চলবে। এই খেতে না পাওয়া মানুষ যাতে দুইবেলা খেয়ে বাঁচতে পারেন, তার জন্য অবিলম্বে সব দেশকে সক্রিয় হতে বলেছে জাতি সংঘ।
রিপোর্টের নাম স্টেট অফ ফুড সিকিউরিটি অ্যান্ড নিউট্রিশন ইন দ্য ওয়ার্ল্ড ২০২০। সেখানেই উঠে এসেছে এই ভয়াবহ তথ্য। যে ভাবে অভুক্ত লোকের সংখ্যা বাড়ছে, তাতে জাতি সংঘের লক্ষ্য ভেস্তে যেতে বসেছে। জাতি সংঘের লক্ষ্য ছিল, ২০৩০ সালের মধ্যে বিশ্ব থেকে খিদে দূর করা। বিশ্বে কোনও মানুষ আর অভুক্তথাকবে না, তা নিশ্চিত করা।
রিপোর্ট বলছে, গত কয়েক বছর ধরেই ক্ষুধার বিরুদ্ধে এই লড়াই কঠিন হচ্ছিল। ২০১৪ সাল থেকেই অভুক্ত মানুষের সংখ্যা বাড়ছিল। কিন্তু করোনা সেই পরিস্থিতিকে আরও ভয়ঙ্কর করে তুলেছে। বিশ্ব জুড়ে কোটি কোটি লোক আর স্বাস্থ্যকর খাবার কিনে খেতে পারছেন না।
খাদ্য সুরক্ষা সব চেয়ে কম আফ্রিকায়। কিন্তু ল্যাটিন অ্যামেরিকা ও ক্যারিবিয়ানের অবস্থাও ভালো নয়। ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রাম বলছে, দক্ষিণ ও দক্ষিণপূর্ব এশিয়ায় ২০২০-র ফেব্রুয়ারিতে ৩ কোটি ৩০ লাখ লোক ঠিকভাবে খেতে পাচ্ছেন না। করোনার ফলে এই সংখ্যাটা অনেক বেড়েছে এবং বাড়বে।
তাই জাতি সংঘের সুপারিশ, সরকার যেন স্বাস্থ্যকর খাবারের দাম কম রাখে এবং সকলে যাতে স্বাস্থ্যকর খাবার পান তার দিকে নজর রাখে। গরিব দেশগুলির প্রতি জাতি সংঘের আবেদন, তাঁরা যেন, কৃষি ও খাদ্যশষ্যে ভর্তুকির বিষয়টি খতিয়ে দেখে। করোনার সময় খাদ্য পরিবহন, স্কুলে খাবার দেওয়া এবং লোকের কাছে স্বাস্থ্যকর খাবার পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রে ভর্তুকি দেওয়া দরকার।
জাতি সংঘের রিপোর্ট বলছে, করোনার ফলে বিভিন্ন দেশে লোকে চাকরি হারাচ্ছেন। আয় কমে গেছে। তাই তাঁরা স্বাস্থ্যকর খাবার কেনার অবস্থায় নেই। আফ্রিকাতেই অর্ধেক লোকের কাজ চলে গেছে। ভারতে এপ্রিলে ১২ কোটিরও বেশি লোক কাজ হারিয়েছিলেন। লকডাউন শুরু হওয়ার পর পরিযায়ী শ্রমিক ও দৈনিক মজুরির ভিত্তিতে যাঁরা কাজ করেন, তাঁরা কর্মহীন হয়ে পড়েন। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছবিটা কমবেশি একইরকম। তাই চিন্তা বেড়েছে জাতি সংঘের।
জিএইচ/এসজি(জাতি সংঘের রিপোর্ট)