কম্পিউটারে সাজানো হয় আতশবাজির চমক
২৩ জানুয়ারি ২০১৫১৯শে নভেম্বর মোনাকোর জাতীয় দিবসে আকাশে আতশবাজির রঙিন শো দেখা যায়৷ ছবি ও শব্দের অসাধারণ কোরিওগ্রাফি আতশবাজির মুহূর্তকে জাদুময় করে তোলে৷ জার্মান আতশবাজি প্রকৌশলী মার্কুস কাটারলে তার পরিকল্পনা করেছেন৷ তিনি দূর থেকে বন্দরে তাঁর সহকর্মীদের কাজ দেখেন৷ তিনি বলেন, ‘‘আমি আরও কিছুটা সময় অপেক্ষা করেছি, কারণ আমরা প্রায় ১৫ ফ্রেম পিছিয়ে ছিলাম৷ এবার সেটা সংশোধন করা হয়েছে৷''
আবহাওয়াও দিব্যি ভালো রয়েছে৷ জোরালো বাতাস সত্ত্বেও বাজিগুলি সরে যাচ্ছে না৷ একজন বললো, অসাধারণ এফেক্ট৷ বাতাসের মধ্য দিলে বলগুলি চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ছে৷ রংয়ের খেলা, বিশাল বিস্ফোরণে আকাশ যেভাবে আলোকিত হলো, খুবই সুন্দর৷ অসাধারণ, দারুণ মুহূর্ত৷ আরেকজন বলেন, প্রতি বছর আরও সুন্দর হচ্ছে৷ মার্কুস নিজে বলেন, ‘‘আমি খুব সন্তুষ্ট, ভালো শো হলো৷ শুধু এক-দু'বার গোলমাল হয়েছে৷ আমাকে জানতে হবে, বোমা কম পড়েছিল, নাকি টেকনিকাল সমস্যা ছিল৷ এ সব সম্ভবত দর্শকদের চোখে পড়বে না৷ কিন্তু আমি টের পাই৷''
মাল্টিমিডিয়া শো-গুলি বহু দূরে, জার্মানির বিলেফেল্ড শহরে মার্কুস ক্লেটারলে-র ‘ক্রিয়েটিভ স্টুডিও'-তে সৃষ্টি করা হয়৷ প্রত্যেকটি আতশবাজি যে সব ছবি ও এফেক্ট সৃষ্টি করবে, সে সব তাঁর মাথায় থাকে৷ মার্কুস বলেন, ‘‘এমন শো-র পরিকল্পনার জন্য একটি ছবি গড়ে তুলতে হয়৷ ছবির একেবারে নীচে, মাঝে, উপরে বা তারও একটু উপরে লাইন টানতে হয়৷ তার মধ্যে রংয়ের সুন্দর কাঠামো রচনা করতে হয়৷''
মন্টি কার্লোর আকাশে সেটি অসাধারণ দেখায়৷ শো-এর সবকিছুই কম্পিউটারে প্রোগ্রাম করা হয় – যেমন কী রকম এফেক্ট হবে, বাজিতে আগুন দেবার মুহূর্ত, আকাশ পর্যন্ত পৌঁছানোর সময় ইত্যাদি৷ এছাড়া আকাশে বিস্ফোরণের মুহূর্ত এবং কোথা থেকে বাজি ছাড়া হচ্ছে, সে কথাও ভাবতে হয়৷ প্রায় ছ'মাস আগে মোনাকোর শো-এর প্রস্তুতি শুরু হয়েছিল৷
বিলেফেল্ড শহরে সদর দপ্তরের পাশাপাশি মার্কুস কাটারলে মোনাকো, পোল্যান্ড, দুবাই ও চীনে অফিস খুলেছেন৷ প্রায় ৩০ বছর ধরে তিনি এমন শো আয়োজন করছেন৷ পরে অন্য কিছু মাধ্যমও যোগ হয়েছে৷ আজ তিনি গোটা বিশ্বের সেরা ইভেন্ট ম্যানেজারদের অন্যতম৷ মার্কুস বলেন, ‘‘ফিরে তাকালে আমরা বুঝতে পারি, আতশবাজি দিয়ে গল্প বলার সম্ভাবনা আবেগপূর্ণ সাধারণ গল্পগুলির মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিলো৷ আমরা শিল্পজগত বা বিভিন্ন রাষ্ট্রের জন্য অনেক কাজ করি, যারা বিশেষ কিছু বার্তা পৌঁছাতে চায়৷ তাই আমরা অনেক আগেই মাল্টিমিডিয়া নিয়ে কাজ শুরু করেছি৷ ফলে আমরা অনেক জটিল গল্পও বলতে শুরু করেছি৷''
যেমন জল, আলো ও লেজার দিয়ে ফ্রাংকফুর্ট শহরে ‘অ্যাকোয়ানারিও' শো৷ কল্পনাকে বাস্তব করে তোলার পথে একমাত্র সীমা হলো অর্থ৷ কারণ এমন অনুষ্ঠানের বাজেট কোটি কোটি ইউরো ছুঁতে পারে৷ মার্কুস কাটারলে সবচেয়ে চোখ ধাঁধানো ও ব্যয়বহুল ইভেন্ট আয়োজন করেন এশিয়ায়, যেমন এখানে – দুবাই শহরে৷