তাজরিন অগ্নিকাণ্ড
২৩ ডিসেম্বর ২০১৩তারা ‘পলাতক' থেকেই তাদের অন্যান্য গার্মেন্টস ফ্যাক্টরি এবং ব্যবসা পরিচালনা করছেন৷ পোশাক শ্রমিক ও তাদের নেতারা দ্রুত মালিকসহ মূল আসামিদের গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছেন৷
গত বছরের ২৪ নভেম্বর আশুলিয়ার তাজরিন ফ্যাশনস নামের পোশাক কারখানায় আগুন লেগে ১১২ জন শ্রমিক নিহত হন৷ সিআইডি সেই ঘটনার তদন্ত শেষে রবিবার তাজরিন ফ্যাশনস-এর মালিক দেলোয়ার হোসেন, তার স্ত্রী এবং পরিচালক মাহমুদা আক্তার, প্রকৌশলী মাহবুব মোরশেদ, ফ্যাক্টরি ম্যানেজার আব্দুর রাজ্জাক, কোয়ালিটি ম্যানেজার শহিদুজ্জামান দুলাল ও প্রোডাকশন ম্যানেজার মোবারক হোসেন মঞ্জুসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দিয়েছে৷ তাদের বিরুদ্ধে নরহত্যা এবং অবহেলার কারণে মৃত্যুর অভিযোগ আনা হয়েছে৷ তবে এই হত্যাকে উদ্দেশ্যমূলক বলা হয়নি৷
চার্জশিটে আগুন লাগার পর শ্রমিকদের বাইরে বের হতে বাধা দেয়া ও অগ্নি নিরাপত্তা না থাকার কথা বলা হয়েছে৷ বলা হয়েছে শ্রমিকদের মৃত্যু ঝুঁকির মধ্যে কারাখানাটিতে কাজ করতে বাধ্য করা হয়েছে৷
আগুনের ঘটনার পর প্রথমে আশুলিয়া থানায় মামলা হয়৷ পরে মামলার তদন্ত করে সিআইডি৷ সিআইডি'র তদন্ত কর্মকর্তা ইন্সপেক্টর মোহসীন উজ জামান খান ডয়চে ভেলেকে জানান, তারা তদন্তে ‘অবহেলা জনিত হত্যার' প্রমাণ পেয়েছেন৷ আগুন লাগার পর ভবনের বিভিন্ন তলার গেট আটকে দেয়া হয়৷ তাছাড়া ভবনটি ইমারত বিধি মেনে তৈরি হয়নি৷ ভবনে ছিল না পর্যাপ্ত অগ্নি নিরাপত্তা ব্যবস্থা৷
এই ঘটনায় আদালতে চার্জশিট দেয়া হলেও পোশাক কারখানার মালিক দেলোয়ার হোসেনসহ প্রধান ৬ জন আসামি এখনো পলাতক৷ বাকি ৭ জনকে ঘটনার পর গ্রেফতার করা হলেও তারা পরে জামিনে ছাড়া পান৷
বাংলাদেশ গার্মেন্টস শ্রমিক ঐক্য পরিষদের আহ্বায়ক সিরাজুল ইসলাম রনি ডয়চে ভেলেকে জানান, ১৩ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দেয়ায় তারা খুশি৷ কিন্তু এটা লোক দেখান কিনা, তা নিয়ে প্রশ্ন করাই যায়৷ কারণ গত এক বছরেও মূল আসামি গার্মেন্টস মালিক দেলোয়ার হোসেন, তার স্ত্রী এবং সহযোগীদের গ্রেফতার করা হয়নি৷ দেলোয়ার হোসেনকে পলাতক বলা হলেও তিনি তার অন্যান্য গার্মেন্টস এবং শিল্প প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করছেন বিনা বাধায়৷
রনি অবিলম্বে তাজরিন ফ্যাশনস-এর মালিকসহ প্রধান আসামিদের গ্রেফতারের দাবি জানান৷ তিনি বলেন তাজরিন ফ্যাশনস-এর ঘটনার যদি সঠিক বিচার হয় তাহলে তৈরি পোশাক খাতের মালিকরা সতর্ক হয়ে যাবেন৷
সিরাজুল ইসলাম জানান তাজরিন ফ্যাশনস-এ আগুনের ঘটনায় ১১২ জন শ্রমিকের মৃত্যু ছাড়াও ২০০ শ্রমিক গুরুতর আহত হয়েছেন৷ তাদের অনেকেই পঙ্গু হয়ে গেছেন৷ কিন্তু আহত এবং নিহতদের পরিবার মালিকের কাছ থেকে কোনো ক্ষতিপূরণ পায়নি৷ আর কারখানার বেকার শ্রমিকরাও মানবেতর জীবন-যাপন করছেন৷