তাজরিন ফ্যাশনস-এর অবস্থা
৭ ডিসেম্বর ২০১২আশুলিয়ার তাজরিন ফ্যাশনস-এ ২৪শে নভেম্বর আগুন লাগার পর পর ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা জানান যে, ভবনটিতে অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থা পর্যাপ্ত ছিল না৷ আর অগ্নি নিরাপত্তার জন্য যে কথিত সিড়ি আছে, তার বের হওয়ার পথ বাইরে না রেখে নীচে গুদামঘরে গিয়ে ঠেকেছে৷ আগুন লাগার পরও সুপাভাইজাররা কারখানার গেট বন্ধ করে দিয়ে পোশাক শ্রমিকদের নীচে নামতে বাধা দেয়৷ যার পরিণতিতে আগুনে অন্তত ১১২ জন শ্রমিক নিহত হন৷
তবে সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, তাজরিন ফ্যাশনস-এর বাস্তবে অগ্নি নিরপত্তার সনদই ছিল না৷ কারণ গত জুনেই সেই সনদের মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়৷ এরপর আর তা নবায়ন করায়নি প্রতিষ্ঠানটি – এই খবর দিয়েছে একটি সংবাদ মাধ্যম৷
ফায়ার সার্ভিসের ডাইরেক্টর আব্দুস সালামও ডয়চে ভেলেকে জানিয়েছেন যে, তাজরিন ফ্যাশনস-এর অগ্নি নিরপত্তা সনদ ছিল মেয়াদ উত্তীর্ণ৷ তিনি তাজরিন ফ্যাশনস-এর অগ্নি নিরাপত্তার বিষয়টি তদন্তের দায়িত্বে আছেন৷
আর তাজরিন ফ্যাশনস-এর ভবনটির অনুমতি ছিল তিন তলার৷ কিন্তু ভবনটি অবৈধভাবে আট তলা পর্যন্ত করা হয়৷ আগুন লাগার সময় নয় তলার কাজ চলছিল, যা তাজরিন ফ্যাশনস-এর মালিক দেলোয়ার হোসেন নিজেই স্বীকার করেছেন সংবাদ মাধ্যমের কাছে৷ দেলোয়ার হোসেন ডয়চে ভেলেকে দেয়া টেলিফোন সাক্ষাৎকারে এই অব্যবস্থাপনার বিষয়গুলো তদন্তের নামে এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলেও, প্রকারন্তরে তিনি তা স্বীকার করেও নিয়েছেন৷
তিনি ডয়চে ভেলের কাছে এও স্বীকার করেছেন যে, ওয়ালমার্টসহ বিশ্বখ্যাত ব্র্যান্ডের পোশাক তাজরিন ফ্যাশনস-এ তৈরি হলেও তাঁরা তা জানতেন না৷ তাঁদের অনুমতিও নেয়া হয়নি৷ তিনি তাঁর এই কাজকে অবৈধ বললেও জানান যে, এসব কাজ করা হতো সাবকন্ট্রাক্টে৷
বাংলাদেশে তৈরি পোশাক কারখানা প্রায় সাড়ে চার হাজার৷ আর রপ্তানি আয়ের ৮০ ভাগ আসে এই খাত থেকে৷ তাজরিন ফ্যাশনস-এর এই সব অব্যবস্থাপনা এখন তদন্ত করে দেখছে সরকারের পাঁচটি তদন্ত কমিটি৷ জানা গেছে আরো অনেক কারখানায় একই ধরনের অব্যবস্থানা রয়েছে৷