একশ কিলো ওজনের ঝিনুক!
২০ জুলাই ২০১৬ট্রাইডাকনা গাইগাস বা জায়ান্ট ক্ল্যাম নামধারী সুবিশাল ঝিনুকটির ওজন শেষমেষ একশো কিলোগ্রামে দাঁড়াতে পারে৷ টানিয়ন স্ট্রেটে এরা সবাই শান্তিতে বড় হতে পারে৷ এই সব ঝিনুকদের অনেকেই আজ বিপন্ন প্রজাতির তালিকায় পড়ে৷
টানিয়ন স্ট্রেট হল ফিলিপাইনস-এর নেগ্রোস আর চেবু দ্বীপের মাঝখানের প্রণালী৷ প্রায় বিশ বছর আগে এই সমুদ্রাঞ্চলকে সংরক্ষিত এলাকা বলে ঘোষণা করা হয়৷ আনসিল সিলভা অয়েস্টার বা মানুষের খাবারের যোগ্য ঝিনুক ধরে চারজন মানুষের সংসার চালান৷ পরিষ্কার পানি দেখে তিনি খুশি৷ আনসিল বলেন, ‘‘এই পানি রক্ষা করা আমার কাছে খুব গুরুত্বপূর্ণ কেননা আমাদের জীবিকাই তো এখানে৷ কাজেই আমাদের দেখতে হবে যে, এখানকার প্রবাল যেন বিনষ্ট না হয়৷''
টানিয়ন স্ট্রেট-এর নীচে সাগরের তলায় মাছেরা খাবার পায় – সেই সঙ্গে শত শত তিমি মাছ আর শুশুকরা, যারা এই ১৬০ কিলোমিটার দীর্ঘ প্রণালী পাড়ি দেয়, বিশেষ করে বসন্তে৷ ১৪টি বিভিন্ন ধরনের ডলফিন বা শুশুক এখানে দেখা গেছে৷ তাদের সুরক্ষার জন্য অর্থের প্রয়োজন৷ সেই অর্থ সংগ্রহ করা হল আনাবেল প্লান্তিয়া-র কাজ৷ তিনি বিওফিন নামের একটি সংস্থার হয়ে কাজ করেন, যারা সারা বিশ্বে সরকারবর্গকে বিভিন্ন পরিবেশ সুরক্ষা প্রকল্পের অর্থায়নের কাজে সাহায্য করে৷ ফিলিপাইন্সেও তাঁর কাজের কোনো কমতি নেই৷
বিওফিন ফিলিপাইনস-এর প্রধান আনাবেল প্লান্তিয়া বলেন, ‘‘জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে সকলকেই সংশ্লিষ্ট করতে হবে৷ কাজেই আমরা সরকারি বাজেট ঘেঁটে দেখেছি, সেখানে রদবদলের ভালো সম্ভাবনা আছে – যা থেকে এই সংস্থাগুলি আরো ভালোভাবে সহযোগিতা করতে পারবে৷''
বরাদ্দ অর্থ বাড়লে আরো বেশি রেঞ্জার নিয়োগ করা সম্ভব হবে – আপাতত উপকূলের এই অংশটির উপর নজর রাখার জন্য মাত্র তিনটি বোট রয়েছে৷ যে কারণে সংরক্ষিত এলাকায় আজও বেআইনিভাবে ডায়নামাইট ফাটিয়ে মাছ ধরা হয়৷ যার ফলে সমুদ্রবক্ষের বিপুল ক্ষতি হয়৷ রেঞ্জাররা যতোটা পারেন সেই ক্ষতি পূরণ করার চেষ্টা করেন; প্রবালের চাষ করে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় তা পুঁতে দিয়ে মেরামত করার চেষ্টা করেন৷ ডায়নামাইট ফাটিয়ে মাছ ধরা বন্ধ করতে পারলেই ভালো হতো, কিন্তু সে কাজের জন্য পর্যাপ্ত রেঞ্জার বা সরঞ্জাম নেই৷ টানিয়ন স্ট্রেট মেরিন রিজার্ভের রেঞ্জার লিওনিতো তোরেস বলেন, ‘‘বেআইনি জেলেদের ধরলে আমাদের হুমকিও দেওয়া হয়, তোমাদের খুন করে ফেলা হবে৷ প্রায়ই এ ধরনের হুমকি আসে৷''
ফিলিপাইনস-এ প্রজাতি সংরক্ষণ সহজ কাজ নয়৷ একদিকে দারিদ্র্য, অন্যদিকে মাছ ধরার পেশা৷ তারই মধ্যে পথ খুঁজতে হয়৷