1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে লড়াইয়ে রাজ্যপাল-সরকার

২ জুন ২০২৩

পশ্চিমবঙ্গের সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে আবার রাজ্যপাল বনাম রাজ্য সরকারের বিরোধ তুঙ্গে।

https://p.dw.com/p/4S6R7
পশ্চিমবঙ্গে উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে রাজ্যপালের সঙ্গে সরকারের বিরোধ তুঙ্গে।
পশ্চিমবঙ্গে উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে রাজ্যপালের সঙ্গে সরকারের বিরোধ তুঙ্গে। ছবি: Subrata Goswami/DW

পশ্চিমবঙ্গে ১৪টি বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নেই। এই অবস্থায় বৃহস্পতিবার ১১টি বিশ্ববিদ্যালয়ে অস্থায়ী উপাচার্য নিয়োগ করে রাজভবন। তারা অস্থায়ী উপাচার্যদের নিয়োগের চিঠিও পাঠিয়ে দেয়। চিঠি পাওয়ার পর বৃহস্পতিবারই কলকাতা, যাদবপুর-সহ অন্তত পাঁচটি বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন উপাচার্যেরা দায়িত্ব নিয়ে নেন।

কিন্তু এর কিছুক্ষণ পরেই রাজ্যেরশিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু টুইট করেন। তিনি সেখানে বলেন, সংবাদমাধ্যম থেকে তিনি জেনেছেন, রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলির উপাচার্য নিয়োগ করা হয়েছে। অথচ, এনিয়ে উচ্চশিক্ষা দপ্তরের সঙ্গে কোনো আলোচনা করা হয়নি। বর্তমানে উপাচার্য নিয়োগের ক্ষেত্রে যে আইন আছে তা মানা হয়নি। তাই এই নিয়োগ বেআইনি। ব্রাত্য টুইটে ১০টি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়োগের কথা বলেছিলেন। পরে আরো একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়োগ করা হয়। 

ব্রাত্য এখানেই থেমে যাননি। তিনি জানিয়েছেন, দপ্তরের তরফ থেকে আইনি পরামর্শ নেয়া হচ্ছে। এরপরই ব্রাত্য বলেছেন, ''বেআইনিভাবে নবনিযুক্ত মাননীয়(অস্থায়ী) উপাচার্যদের সকলকে উচ্চশিক্ষা বিভাগের পক্ষ থেকে সসম্মান অনুরোধ, তারা যেন এই নিয়োগ প্রত্যাখ্যান করেন।''

সূত্রের খবর, যা্রা বৃহস্পতিবার দায়িত্ব নেননি, তারা এখন এই সংঘাতের পর উপাচার্যের পদে যোগ দিতে দ্বিধাগ্রস্ত।

কেন এই বিরোধ?

উপাচার্য নিয়োগের ক্ষেত্রে রাজ্যে একটা প্রক্রিয়া আছে। একটা সার্চ কমিটি তৈরি হয়। তারা সবকিছু বিচার বিবেচনা করে নামের তালিকা পেশ করেন। রাজ্যপাল তার থেকে একজনকে উপাচার্য হিসাবে বেছে নেন। ব্রাত্য বসু সাংবাদিকদের বলেছেন, এই নিয়োগ-চিঠির কোনো আইনি বৈধতা নেই।

বর্তমান ক্ষেত্রে নামের তালিকা ছিল না, উচ্চশিক্ষা দপ্তর চাইছিল, যে উপাচার্যরা এতদিন পদে ছিলেন, তারাই অস্থায়ী উপাচার্য হিসাবে কাজ করুন। রাজ্যপাল সেই সুপারিশ মানেননি। তিনি আলাদা করে ১১ জন উপাচার্যকে নিয়োগ করেছেন। তিনি নিজে থেকে ১১টা নাম পছন্দ করেছেন।

ব্রাত্য বসুর দপ্তর বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে কাজের রিপোর্ট চেয়েছে। তারা জানিয়েছে, প্রতিদিন এই রিপোর্ট পাঠাতে হবে। এর আগে রাজ্যপাল সাপ্তাহিক রিপোর্ট পাঠাবার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে নির্দেশ দিয়েছিলেন।

উচ্চশিক্ষা দপ্তরের মতে, রাজ্যপাল কোনো রিপোর্ট চাইলে তা তাদের মাধ্যমে যাবে। সরাসরি কোনো উপাচার্য এই রিপোর্ট পাঠাতে পারেন না।

ঘটনা হলো, রাজ্যপাল চাইলেও কয়েকজন মাত্র উপাচার্য এই রিপোর্ট পাঠান। আনন্দবাজারের রিপোর্ট বলছে,  রাজভবন ঠিক করে, যারা উপাচার্য ছিলেন, তাদের আর অস্থায়ী উপাচার্য হিসাবে নিয়োগ করা হবে না। কারণ, তারা রাজভবনে বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে রিপোর্ট পাঠাননি।

বহু প্রশ্ন

অস্থায়ী উপাচার্য নিয়োগ করা নিয়ে বিতর্ক যে জায়গায় গেছে, তাতে অনেক প্রশ্ন উঠেছে। প্রবীণ সাংবাদিক আশিস গুপ্ত ডয়চে ভেলেকে বলেছেন, রাজ্যপালকে যদি নির্বাচিত সরকারের সুপারিশ মেনে চলতে হয়, তাহলে তিনি কী করে উচ্চশিক্ষা দপ্তরের সঙ্গে কথা না বলে একতরফা সিদ্ধান্ত নিলেন? কী করে  উচ্চশিক্ষামন্ত্রী এইভাবে বলতে পারেন যে, রাজ্যপালের নির্দেশ অমান্য করে উপাচার্যরা যেন দায়িত্ব না নেন? এই সংঘাতে কার সবচেয়ে ক্ষতি হবে? শিক্ষা ব্যবস্থা, গণতান্ত্রিক কাঠামোর না কি সাংবাধানিক পদের?

আশিসের বক্তব্য, এমনিতেই কেন্দ্র ও রাজ্য যেভাবে চলছে, তাতে শিক্ষার অবস্থা খুব একটা ভালো নয়। তার উপর এই ধরনের বিতর্কের প্রভাব রাজ্যের শিক্ষাব্যবস্থায় পড়তে বাধ্য।

জিএইচ/এসজি (পিটিআই, আনন্দবাজার, টিভি৯)