সৌদি ব্লগারকে আবার বেত্রাঘাত
১৬ জানুয়ারি ২০১৫গত শুক্রবারের (০৯.০১.১৫) ঘটনা৷ মুসলমানদের ধর্মীয় প্রার্থনা তখন মোটে শেষ হয়েছে৷ পুলিশের একটি গাড়ি এসে থামে জেদ্দাহর আল-জাফালি মসজিদের সামনে৷ নামিয়ে আনা হয় রাইফ বাদাউয়ি-কে৷ এরপর সেখানে উপস্থিত জনতার দিকে পিঠ করে তাঁকে দাঁড় করানো হয়৷ অপর এক ব্যক্তি বাদাউয়ি-র পিঠে ৫০ বার বেত্রাঘাত করেন৷
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল এক প্রত্যক্ষদর্শীর বরাতে জানিয়েছে, বেত্রাঘাতের সময় বাদাউয়ি নিশ্চুপ ছিলেন৷ ব্যথায় ককিয়ে ওঠেননি তিনি৷ তবে এখানেই শেষ নয়৷ বিশ সপ্তাহ জুড়ে এভাবেই ১,০০০ বার বেত্রাঘাত করার পরিকল্পনা সৌদি সরকারের৷ তবে শারীরিকভাবে অসুস্থ থাকায় শুক্রবার (১৬.০১.২০১৫) তাঁকে বেত্রাঘাত করা হয়নি৷ বাদাউয়ির বিরুদ্ধে অভিযোগ ব্লগ লিখে ‘ইসলাম ধর্মের অবমাননা' করেছেন তিনি৷ আর এভাবেই বাক স্বাধীনতার অধিকার হরণ করছে একটি রাষ্ট্র, যে রাষ্ট্রের প্রধানরা তার দু'দিন আগেই শার্লি এব্দো-তে সন্ত্রাসী হামলার নিন্দা জানিয়েছিল৷
রাইফ বাদাউয়ি-র উপর এই ‘বর্বর' রাষ্ট্রীয় নির্যাতনের নিন্দা জানিয়েছেন অনেকে৷ ইংরেজিতে ‘#রাইফবাদাউয়ি' বা ‘#ফ্রিরাইফ' হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করে টুইটারে প্রতি নিয়ত যোগ হচ্ছে বিভিন্ন তথ্য, ছবি এবং প্রতিবাদের ব্যানার৷
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলো রাইফ বাদাউয়ি-র মুক্তি দাবি করেছে৷ আর এই দাবির প্রতি সমর্থন জানিয়েছে ডয়চে ভেলেও৷ অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের রুট ইয়্যুটনার মনে করেন সৌদি সরকার রাইফের সঙ্গে যা করছে, তা মানবাধিকারের বিপক্ষে বিশাল অপরাধ৷ তিনি বেত্রাঘাত অবিলম্বে বন্ধ করে ব্লগারকে মুক্তি দেয়ার দাবি জানিয়েছেন৷
প্রসঙ্গত, ২০১২ সাল থেকেই কারাগারে আছেন বাদাউয়ি৷ ‘ফ্রি সৌদি লিবারালস’-এর সহ-প্রতিষ্ঠাতা তিনি৷ তাঁর সহযোগী নারী অধিকার ক্যাম্পেনার সৌদ আল-সাম্মারি-কেও গত অক্টোবরের আটক করেছেন সৌদি সরকার৷ দু'জনের বিরুদ্ধে ‘ইসলাম অবমাননার' অভিযোগ করা হয়েছে৷
বাদাউয়ি-র স্ত্রী এবং সন্তান রয়েছে৷ গত মঙ্গলবার (১৩.০১.২০১৫) ছিল তাঁর ৩১তম জন্মদিন৷ পরিবার, পরিজন ছাড়াই কারাগারে জন্মদিন কেটেছে তাঁর৷ বাদাউয়ি-র স্ত্রী জানিয়েছেন, ১০০০ বেত্রাঘাত সহ্য করা হয়ত তাঁর স্বামীর পক্ষে সম্ভব হবে না৷ শীঘ্রই সম্ভবত ভেঙে পড়বেন আঘাতে আঘাতে জর্জরিত বাদাউয়ি৷