ইরান বিপ্লবের ৩৫তম বর্ষপূর্তি
১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৪বিপ্লবের ৩৫তম বর্ষপূর্তিতে মঙ্গলবার রাস্তায় নেমে আসেন ইরানের হাজারো মানুষ৷ আজাদি স্কয়ারে দিবসটি উপলক্ষ্যে ভাষণ দেন প্রেসিডেন্ট হাসান রোহানি৷ অনেকেই এ সময় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিরোধী স্লোগান দেন৷ সংবাদ সংস্থা এএফপিকে ২০ বছর বয়সি এক বিক্ষোভকারী বলেন, ‘‘আমরা অ্যামেরিকাকে বিশ্বাস করি না৷ তারা আমাদের সম্পদ কুক্ষিগত করতে চায়৷''
তিনি আরো বলেন, ‘‘আন্তর্জাতিক অবরোধ বরং আমাদের অধিকার রক্ষায় আরো সুবিধা করেছে৷ আর এতে আমাদের কোনো সমস্যা হচ্ছে না৷''
ক্ষমতাচ্যুত ইরানের সাবেক শাহকে সমর্থন করায় ১৯৮০ সালে তেহরানে মার্কিন দূতাবাসের ৫২ জন কূটনীতিককে বন্দি করে ইরানি ছাত্ররা৷ এর পর থেকে ইরানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের কোনো দাপ্তরিক সম্পর্ক নেই৷
গত বছরের নভেম্বরে ইরান এবং পি (৫+১) দেশগুলোর মধ্যে পারমাণবিক যে আলোচনা হয়, তাতে ছয় মাসের মধ্যে ইরান ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কর্মসূচি কমানোর ব্যাপারে একমত হয়৷ ইরানের আশা, এর ফলে আর্ন্তজাতিক নিষেধাজ্ঞা শিথিল হবে৷ ঐ চুক্তির ফলে এটাই বোঝা যায়, রোহানি পররাষ্ট্রনীতিতে সফল হয়েছেন৷ কেননা গত ৮ বছর ধরে শক্তিধর দেশগুলোর সাথে ইরানের আলোচনা বন্ধ ছিল৷ বরং কট্টরপন্থী নেতা মাহমুদ আহমাদিনেজাদের কারণে আরো বেশি নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়েছিল ইরান৷
সোমবার বর্ষপূর্তির প্রাক্কালে তেহরানভিত্তিক বিদেশি কূটনীতিকদের রোহানি জানান, যুক্তরাষ্ট্র, চীন, ব্রিটেন, ফ্রান্স, রাশিয়া ও জার্মানির সাথে চূড়ান্ত চুক্তির ব্যাপারে আলোচনা করতে ইরান প্রস্তুত৷
ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির সমর্থন রয়েছে রোহানির উপর৷ খামেনি গত সপ্তাহে বলেছেন, রোহানির উপর তাঁর আস্থা রয়েছে এবং সবার ধৈর্য্য ধরা উচিত৷
এদিকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাভেদ জারিফ জানিয়েছেন, পরমাণু ইস্যুতে পরবর্তী দফায় আলোচনা বেশ কঠিন হবে, কেননা যুক্তরাষ্ট্রের উপর ইরানিদের কোনো আস্থা নেই৷ ১৮ ফেব্রুয়ারি আবার শুরু হবে এই আলোচনা৷
এর আগে, শনিবার আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থা বা আইএইএ-র সাথে ইরানের আলোচনা শুরু হয়৷ দুই দিনের আলোচনার ফল কি হয়েছে সে ব্যাপারে দুপক্ষ মিলে যৌথ বিবৃতি দিলেও সেখানে কি কি বিষয়ে আলোচনা হয়েছে তার বিস্তারিত জানানো হয়নি৷ আইএইএ-র ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, সাতটি নতুন পদক্ষেপের ব্যাপারে তারা একমত হয়েছে, যা আগামী ১৫ মে থেকে বাস্তবায়ন করা হবে৷
এদিকে সোমবার নতুন আরো দুটি ক্ষেপণাস্ত্রের সফল পরীক্ষা চালিয়েছে ইরান৷ যেখানে শনিবার তেহরান ঘোষণা করেছিল, যুক্তরাষ্ট্রের দিকে জাহাজ পাঠাবে তারা৷
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আহমাদিনেজাদের চেয়ে কিছুটা মধ্যপন্থি ইরানের চেহারা বিশ্ব নেতাদের কাছে তুলে ধরতে সমর্থ হয়েছেন রোহানি৷ তবে এর মানে এই নয় যে, ইরানের আদর্শ ও নীতিতে আসলেই যে পরিবর্তন হয়েছে তা তুলে ধরতে সমর্থ হয়েছেন তিনি৷
এপিবি/ডিজি (এপি, এএফপি, রয়টার্স)