ইরান আন্দোলনে বিদেশি ইন্ধন?
গত ডিসেম্বরের শেষ দিকে ইরানে শুরু হয় সপ্তাহব্যাপী আন্দোলন৷ ইরান কর্তৃপক্ষের দাবি ছিল, সে আন্দোলনে বাইরে থেকে ইন্ধন ছিল৷
হতাশার বিক্ষোভ
২৮ ডিসেম্বর শুরু হয় আন্দোলন৷ মূলত কর্মহীনতা, মুদ্রাস্ফীতি এবং ধনী-গরিবের বিভাজনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ শুরু হয়েছিল তেহরানের রাজপথে৷ কিন্তু দ্রুত সেই আন্দোলন সরকারবিরোধী আন্দোলনের রূপ নেয়৷
গরিবের বিক্ষোভ
মূলত ইরানের গরিব মানুষেরা এই বিক্ষোভে যোগ দেন৷ দেশের সব প্রদেশ থেকেই দলে দলে মানুষ তেহরানে এসে ভিড় জমান৷ প্রদেশগুলিতেও বিচ্ছিন্নভাবে বিক্ষোভ শুরু হয়৷
বিক্ষোভের মন্ত্র
আন্দোলনের নেতা কে, সে বিষয়ে ধন্ধে ছিল সরকার৷ রাজনৈতিক মহলের মতে এটি স্বতঃস্ফূর্ত আন্দোলন৷ বিক্ষোভকারীরা দাবি করেন, ইরান সরকার লেবাননের হিজবুল্লাহ জঙ্গিদের সমর্থন দেওয়া বন্ধ করুক৷ সিরিয়া এবং ইরাকের রাজনীতিতে নাক গলানো বন্ধ করে বরং অভ্যন্তরীন বিষয়ে মন দিক ইরান সরকার৷
বিক্ষোভ বিরোধিতা
বিক্ষোভের পাঁচদিনের মাথায় প্রথম মুখ খোলেন ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনি৷ অভিযোগ করেন, ‘ইরানের শত্রু’রা বিক্ষোভকারীদের হাতে অর্থ, অস্ত্র এবং আন্দোলনের নানাবিধ হাতিয়ার তুলে দিচ্ছে৷ ইসলামিক প্রজাতন্ত্রের স্থিতিশীলতা টলিয়ে দেওয়ার জন্যই এই কাজ করা হচ্ছে বলে দাবি করেন তিনি৷
বিক্ষোভ দমন
বিক্ষোভ দমন করতে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়৷ প্রায় ৪৫০ জন আন্দোলনকারীকে পুলিশ গ্রেফতার করে৷ পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে অন্ততপক্ষে ২১ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গেছে৷ ২০০৯ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন পর্বের পর ইরানের রাজপথ এত বড় বিক্ষোভ দেখেনি৷
বিক্ষোভ আলোচনা
ইরানের বিক্ষোভ নিয়ে দুশ্চিন্তা প্রকাশ করে বিশ্বের অন্যান্য দেশ৷ মধ্যপ্রাচ্য, ইউরোপ এবং অ্যামেরিকা ইরানের বিক্ষোভ এবং সরকারের ভূমিকার পক্ষে-বিপক্ষে মত প্রকাশ করে৷ রক্তক্ষয়ের বিষয়টি নিয়েও আশঙ্কা প্রকাশ করে বিভিন্ন মহল৷
পাল্টা বিক্ষোভ
আন্দোলনের ১ সপ্তাহ অতিক্রান্ত হওয়ার পর পুলিশ ঘোষণা করে, আন্দোলন বন্ধ হয়েছে৷ আয়াতুল্লাহ খামেনির পক্ষেও বিশাল মিছিলের আয়োজন হয়৷ তবে বিভিন্ন প্রদেশে বিক্ষোভ এখনও অব্যাহত৷